পশ্চিমা পররাষ্ট্রনীতিতে নানা ইস্যুতে মনগড়া কথাবার্তার গ্রহণযোগতা কতটুকু?
https://parstoday.ir/bn/news/world-i151528-পশ্চিমা_পররাষ্ট্রনীতিতে_নানা_ইস্যুতে_মনগড়া_কথাবার্তার_গ্রহণযোগতা_কতটুকু
পার্সটুডে- ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ব্যাপারে পশ্চিমাদের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায়, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধানের কাছে লেখা এক চিঠিতে তথ্য বিকৃতি এবং ইরান ও ছয় জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা পত্র বা জেসিপিওএ জেসিপিওএ অনুযায়ী প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘনের সমালোচনা করেছেন এবং প্রকৃত কূটনীতি এবং বহুপাক্ষিক মতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন।
(last modified 2025-08-30T12:30:57+00:00 )
আগস্ট ৩০, ২০২৫ ১১:২২ Asia/Dhaka
  • পশ্চিমা পররাষ্ট্রনীতিতে নানা ইস্যুতে মনগড়া কথাবার্তার গ্রহণযোগতা কতটুকু?
    পশ্চিমা পররাষ্ট্রনীতিতে নানা ইস্যুতে মনগড়া কথাবার্তার গ্রহণযোগতা কতটুকু?

পার্সটুডে- ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ব্যাপারে পশ্চিমাদের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায়, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধানের কাছে লেখা এক চিঠিতে তথ্য বিকৃতি এবং ইরান ও ছয় জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা পত্র বা জেসিপিওএ জেসিপিওএ অনুযায়ী প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘনের সমালোচনা করেছেন এবং প্রকৃত কূটনীতি এবং বহুপাক্ষিক মতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান এবং JCPOA যৌথ কমিশনের সমন্বয়কারী কায়া কালাসকে লেখা এক চিঠিতে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি যৌথভাবে গৃহীত  পদক্ষেপে সৃষ্ট বিরোধ নিষ্পত্তি সম্পর্কে বলেছেন: আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নকে পরমাণু সমঝোতার ব্যাপারে নিজেদের মনগড়া মন্তব্য ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ পরিত্যাগ করার এবং প্রকৃত কূটনীতিকে সহজতর করার আহ্বান জানাই। পার্সটুডে অনুসারে, পশ্চিমা দেশগুলোর পররাষ্ট্রনীতিতে মনগড়া মন্তব্য ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ কেবল ইরানের ক্ষেত্রেই নয় একইসাথে তারা অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধেও মনগড়া কথাবার্তা বলে। মানবাধিকার হল এমন একটি বিষয় যা পশ্চিমারা তাদের ইচ্ছেমতো মাবাধিকারের মনগড়া ব্যাখ্যা দিয়ে অন্য দেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। পশ্চিমা বিশ্ব তাদের নীতিমালা এবং স্বার্থের ভিত্তিতে অন্য দেশে উদার গণতান্ত্রিক ব্যাখ্যা প্রয়োগ করার চেষ্টা করেছে। অনেক পশ্চিমা সরকার এবং বেসরকারি সংস্থা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে। এই কথিত প্রতিবেদনগুলিতে সাধারণত উন্নয়নশীল দেশগুলিকে মানবাধিকারের প্রধান লঙ্ঘনকারী হিসেবে দেখানো হয়, অন্যদিকে শিল্পোন্নত দেশগুলিকে (আমেরিকা এবং ইউরোপ) বিশ্বজুড়ে এই মানবাধিকারের "রক্ষক" হিসেবে উপস্থাপন করে। যদিও খোদ পশ্চিমা শক্তিগুলোতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বহু নজির রয়েছে। 

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান এমন একটি দেশ যা বারবার এবং প্রকাশ্যে পশ্চিমাদের দ্বারা বিভিন্ন  ইস্যুতে মনগড়া কথাবার্তা বা ব্যাখ্যার শিকার হয়েছে। এই ব্যাখ্যায় কেবল মানবাধিকারই নয়, বরং শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক অধিকারের ক্ষেত্রসহ অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে; যদিও এনপিটি চুক্তি শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি অর্জনের জন্য পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলিকে সহায়তা করার উপর জোর দেয়, কিন্তু তারপরও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ ইরানকে শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে বদ্ধপরিকর এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমনকি ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে বোমা হামলা চালিয়েছে।

প্রশ্ন হলো, পশ্চিমা শক্তিগুলো কেন তাদের পররাষ্ট্রনীতিতে বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের ইচ্ছেমতো ব্যাখ্যা দেয়? এই উদ্দেশ্যমূলক ব্যাখ্যার গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু?

এই উদ্দেশ্যমূলক ব্যাখ্যাগুলো ওইসব ইস্যুতে তাদের দ্বৈত নীতিরই ফল। মানবাধিকার এবং পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পর্কে মিথ্যা দাবি করা হয় পশ্চিমাদের সাথে জোটবদ্ধ নয় এমন দেশগুলির বিরুদ্ধে। মূলত, পশ্চিমা শক্তিগুলো পশ্চিমাদের কথামতো চলে না এমন দেশগুলির উন্নয়ন এবং অগ্রগতি চায় না। এই দেশগুলো ইরানের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলির স্বাধীনতা চায় না। পশ্চিমা শক্তিগুলো তাদের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের অনুকূলে নয় এমন দেশগুলির বিরুদ্ধেও নানা ইস্যুতে উদ্দেশ্যমূলক বা মনগড়া ব্যাখ্যা তুলে ধরে এবং সেই ব্যাখ্যা অনুযায়ী, তারা ওই  দেশগুলোর ওপর তীব্র চাপ প্রয়োগ করে। এমনকি তারা আন্তর্জাতিক আইনেরও তোয়াক্কা করেনা।

শেষ কথা হলো:

তথ্য বিকৃতির উপর ভিত্তি করে পাশ্চাত্য শক্তি উদ্দেশ্যমূলক বা মনগড়া ব্যাখ্যা তুলে ধরে যে আচরণ করছে সে কথা উল্লেখ করে সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি প্রধানকে লেখা তার চিঠিতে বলেছেন: "দুর্ভাগ্যবশত, JCPOA এবং নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবের অধীনে তাদের বাধ্যবাধকতার বিষয়গুলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ফ্রান্স, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্য উপেক্ষা করে চলেছে।"#

পার্সটুডে/এমআরএইচ/৩০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।