আমেরিকা কি আফ্রিকান দেশগুলোর বিরুদ্ধে নতুন বাণিজ্য আ্গ্রাসন শুরু করবে?
-
• ট্রাম্পের বাণিজ্য সিদ্ধান্তের ফলে প্রভাবিত ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার মোটরগাড়ি শিল্পও রয়েছে
পার্সটুডে- মার্কিন-আফ্রিকার মধ্যকার আফ্রিকান গ্রোথ অ্যান্ড অপরচুনিটি অ্যাক্ট (AGOA) বাণিজ্য চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার সাথে সাথে, এই মহাদেশটির উৎপাদন শিল্পের উপর অর্থনৈতিক নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।
আফ্রিকায় অর্থনৈতিক প্রভাব বিস্তারের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতা তীব্র হওয়ার একই সাথে AGOA চুক্তি সম্প্রসারণ বা বাতিল করার মার্কিন সরকারের সিদ্ধান্ত কেবল অর্থনৈতিক পরিণতিই নয়, বরং উল্লেখযোগ্য ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবও ফেলবে। পার্সটুডে অনুসারে, বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন যে চুক্তি নবায়নে ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যর্থতা আফ্রিকান দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতামূলক কর্মকাণ্ডকে দুর্বল করতে পারে এবং ওয়াশিংটনের এ নীতির কারণে ওই মহাদেশের কৌশলগত অবস্থান হ্রাস করতে পারে।
বিল ক্লিনটন প্রশাসনের উদ্যোগে ২০০০ সালে অনুমোদিত AGOA চুক্তিটি মার্কিন বাজারে শুল্কমুক্ত রপ্তানির মাধ্যমে সাব-সাহারান আফ্রিকান দেশগুলির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে। গত দুই দশক ধরে, এই চুক্তি লেসোথো, মাদাগাস্কার এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলিতে পোশাক, চামড়া, পাদুকা এবং মোটরগাড়ি উৎপাদনের মতো শিল্পগুলিকে উৎসাহিত করেছে যা তাদেরকে বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম করেছে।
আল জাজিরা ফিনান্সিয়াল টাইমসকে উদ্ধৃত করে "আফ্রিকান দেশগুলির বিরুদ্ধে কি আমেরিকা নতুন বাণিজ্য আক্রমণ শুরু করছে?" শিরোনামে একটি প্রতিবেদনে লিখেছে: জাতিসংঘের একটি বাণিজ্য সংস্থার প্রধান সতর্ক করে দিয়েছেন যে ২৫ বছরের AGOA চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে আফ্রিকার সবচেয়ে সফল কিছু উৎপাদন শিল্প মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক পামেলা কুক হ্যামিল্টন জোর দিয়ে বলেছেন যে মাদাগাস্কার এবং লেসোথোর মতো দেশগুলি, যাদের অর্থনীতি এই চুক্তির উপর নির্ভরশীল, তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। প্রায় ২.৩ মিলিয়ন জনসংখ্যার লেসোথো এখন আমেরিকায় আফ্রিকার বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক, লেভি'স এবং র্যাংলারের মতো ব্র্যান্ড সরবরাহ করে। কেন্দ্র কর্তৃক প্রকাশিত অর্থনৈতিক মডেল অনুসারে, যদি AGOA শেষ হয় এবং নতুন শুল্ক আরোপ করা হয়, তাহলে ২০২৯ সালের মধ্যে আফ্রিকান দেশগুলির রপ্তানি প্রায় ৮.৭% হ্রাস পাবে। দক্ষিণ আফ্রিকার গাড়ি এবং লেসোথোর পোশাকের মতো কিছু ক্ষেত্রে এই হ্রাস যথাক্রমে ২৩ এবং ২৯ শতাংশে পৌঁছাবে। কেনিয়া, মরিশাস এবং তানজানিয়ার মতো অন্যান্য দেশগুলিতেও রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য পতন দেখা যাবে।
ইতিমধ্যে, চীন ৫৩টি আফ্রিকান দেশকে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার প্রদানের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে, যা ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য নীতির পরিপন্থী এবং চীনের সাথে অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে দুর্বল করে দিতে পারে।#
পার্সটুডে/এমআরএইচ/২৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।