ছায়া থেকে মঞ্চে: মাদুরোর সঙ্গে ওয়াশিংটনের লড়াই এবং মার্কো রুবিও'র ভূমিকা
-
মার্কো রুবিও (বামে) ও ট্রাম্প (ডানে)
পার্সটুডে- ভেনেজুয়েলার ব্যাপারে নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে মার্কিন সরকারের ভেতরে একটা গোপন প্রতিযোগিতা চলছিল; সব দেখে মনে হচ্ছে এই প্রতিযোগিতায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জিতে গেছেন এবং এখন তিনিই ওয়াশিংটনের সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।
মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক 'রেসপন্সিবল স্টেট ক্রাফ্ট' সম্প্রতি এক নিবন্ধে লিখেছে- ট্রাম্প প্রথম দফা প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই ভেনেজুয়েলার বিষয়ে মার্কিন নীতিতে একটি মৌলিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। অপ্রত্যাশিতভাবে এই পরিবর্তনের সঙ্গে পররাষ্ট্র দপ্তর বা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সম্পৃক্ততা ছিল না বরং সাবেক রিপাবলিকান সিনেটর এবং বর্তমান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও'র নেতৃত্বে সেই পরিবর্তনটা এসেছিল।
পার্সটুডে জানিয়েছে- দলীয় নেটওয়ার্ক, আঞ্চলিক লবি এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের কাঠামোতে নিজের প্রভাব কাজে লাগান রুবিও। তিনি এর প্রক্রিয়ায় নিকোলাস মাদুরোর সরকারের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করেন।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে রুবিও কার্যত ল্যাটিন আমেরিকা ইস্যুতে "ছায়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী" হিসেবে পরিচিত ছিলেন। জন বোল্টন ও মাইক পম্পেও'র মতো ব্যক্তিত্বরা মাদুরো-বিরোধী নীতির সমর্থকদের মধ্যে ছিলেন। হোয়াইট হাউসে রুবিওর দীর্ঘদিনের মিত্র মরিসিও ক্ল্যাবার-ক্যারোন তেল নিষেধাজ্ঞার নকশা তৈরি করে চাপ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
ভেনেজুয়েলার তেল শিল্পের বিরুদ্ধে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা কেবল সেদেশের অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করেনি বরং অভিবাসনের একটি ঢেউও শুরু করেছে। অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি সামরিক পথেও তারা এগিয়েছে, যার মধ্যে ২০২০ সালে জর্ডান বোড্রোর নেতৃত্বে "অপারেশন মিসিং পার্সনস" অন্যতম, সেই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে। ব্ল্যাকওয়াটারের প্রতিষ্ঠাতা এরিক প্রিন্সও দাবি করেছেন, তারা একই ধরণের অভিযানের জন্য ১০ লাখ ডলারেরও বেশি অর্থ সংগ্রহ করেছেন।
মার্কিন মিডিয়া এবং থিঙ্ক ট্যাঙ্কগুলোতে মাদুরো-বিরোধী গোষ্ঠীগুলো সক্রিয় রয়েছে এবং ইউএসএইড ও ন্যাশনাল এন্ডোমেন্ট ফর ডেমোক্রেসির মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক সহায়তায় তারা ভেনেজুয়েলার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ভেনেজুয়েলা সরকারকে বিচ্ছিন্ন করার আহ্বান জানাচ্ছে। এই লবিগুলো বিশেষ করে ফ্লোরিডা রাজ্যে রুবিওর অবস্থানকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলো "ট্রেন ডি আরাগুয়া" নামক অপরাধী সংগঠনের সাথে মাদুরোর সংযোগ সম্পর্কে রুবিওর দাবি অস্বীকার করেছে, কিন্তু এই দাবিটই এই অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি এবং মার্কিন ভূখণ্ডে ভেনেজুয়েলার লক্ষ লক্ষ নাগরিকের অস্থায়ী সুরক্ষা মর্যাদা বাতিল করার একটি অজুহাত হয়ে ওঠে; এটি এমন একটি পদক্ষেপ যা ফ্লোরিডার কিছু অঞ্চলে ভোটারদের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি করেছিল।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে মার্কো রুবিও ভেনেজুয়েলা সংক্রান্ত মার্কিন নীতিতে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এই মেয়াদে তাকে আরও বেশি প্রভাবশালী হিসেবে দেখা যাচ্ছে।#
পার্সটুডে/এসএ/১৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।