মার্কিন দ্বৈত নীতি: মানবাধিকার রক্ষার দাবি না দখলদারিত্বের পৃষ্ঠপোষকতা?
https://parstoday.ir/bn/news/world-i153540-মার্কিন_দ্বৈত_নীতি_মানবাধিকার_রক্ষার_দাবি_না_দখলদারিত্বের_পৃষ্ঠপোষকতা
পার্সটুডে: ব্রিটিশ গণমাধ্যম 'মিডল ইস্ট আই' এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পশ্চিম তীর দখল পরিকল্পনার বিরোধিতা করছে বলে দাবি করলেও, বাস্তবে তারা শুধু পরিকল্পনাটি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াশিংটন ইসরায়েলি দখদারিত্বের বিরোধিতা করার ভান করছে, কিন্তু বাস্তবে এটি শুধু স্থগিত রাখছে এবং তার আরব মিত্ররাও এতে বিশ্বাস করার ভান করছে।"
(last modified 2025-11-28T10:09:50+00:00 )
অক্টোবর ৩০, ২০২৫ ১৬:০৯ Asia/Dhaka
  • ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু
    ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু

পার্সটুডে: ব্রিটিশ গণমাধ্যম 'মিডল ইস্ট আই' এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পশ্চিম তীর দখল পরিকল্পনার বিরোধিতা করছে বলে দাবি করলেও, বাস্তবে তারা শুধু পরিকল্পনাটি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াশিংটন ইসরায়েলি দখদারিত্বের বিরোধিতা করার ভান করছে, কিন্তু বাস্তবে এটি শুধু স্থগিত রাখছে এবং তার আরব মিত্ররাও এতে বিশ্বাস করার ভান করছে।"

প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে দ্বিমুখী ও প্রতারণামূলক আচরণের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র একদিকে মানবাধিকার ও শান্তির কথা বললেও, অন্যদিকে ইসরায়েলকে অন্ধভাবে সমর্থন দিয়ে ফিলিস্তিন সংকটকে আরও গভীর করছে।

পার্সটুডে জানিয়েছে, 'মিডল ইস্ট আই'-এর বিশ্লেষণে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পশ্চিম তীরের কিছু অংশ ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছিলেন কেবল আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ ও যুক্তরাষ্ট্র–ইসরায়েলের কৌশলগত স্বার্থ রক্ষার জন্য। এই পদক্ষেপ আসলে এক ধরনের রাজনৈতিক চাল, যাতে কূটনৈতিক চাপ কমিয়ে পরবর্তীতে আরও অনুকূল পরিবেশে পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করা যায়।

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, ফিলিস্তিন ইস্যুতে আমেরিকার পক্ষপাতমূলক নীতি নতুন কিছু নয়। ইসরায়েলকে সামরিক, আর্থিক ও কূটনৈতিকভাবে সমর্থন দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বছরের পর বছর ধরে দখলদারিত্ব ও মানবাধিকার লঙ্ঘনকে উৎসাহিত করেছে।

ট্রাম্পের তথাকথিত 'শতাব্দীর চুক্তি'ও (Deal of the Century) এই নীতিরই অংশ। ফিলিস্তিনিদের ন্যায়সঙ্গত দাবিকে উপেক্ষা করে এই চুক্তি কার্যত ইসরাইলি রেজিমের দখলদারিত্বকে বৈধতা দিয়েছে এবং পশ্চিম তীর সংযোজন স্থগিত করাও এই ধারায় বিশ্লেষণযোগ্য; এটি ইসরাইলি রেজিম ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতা রোধ করার একটি কৌশলগত পদক্ষেপ, বিশেষ করে নির্বাচন ও আঞ্চলিক উন্নয়নের প্রাক্কালে।

জাতিসংঘেও যুক্তরাষ্ট্রের এই পক্ষপাত স্পষ্ট। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রস্তাব বারবার ভেটো দিয়ে তারা প্রমাণ করেছে যে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও পশ্চিমা শক্তির স্বার্থ রক্ষার হাতিয়ার হয়ে উঠেছে।

মিডিয়া ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্র একইভাবে কাজ করে। ইসরায়েলের দখল ও সহিংসতা সম্পর্কিত খবর নিয়ন্ত্রণ করে তারা বিশ্ব জনমতকে বিভ্রান্ত করে এবং ইসরায়েলের একটি 'বৈধ' চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, পশ্চিম তীর দখল পরিকল্পনা স্থগিত রাখা যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পরিবর্তনের প্রমাণ নয়। এটি শুধু এক কূটনৈতিক নাটক, যার লক্ষ্য ইসরায়েলের দখলদারিত্ব বজায় রাখা এবং সেটিকে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য করে তোলা। যুক্তরাষ্ট্রের এই দ্বিচারিতা নীতি ফিলিস্তিন সংকট সমাধান তো করেই না, বরং সেটিকে আরও জটিল ও বেদনাদায়ক করে তুলছে।#

পার্সটুডে/এমএআর/৩০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।