লিঙ্গসমতার শ্লোগান, নারীবাদের উৎপত্তিস্থল ফ্রান্সে এখন নারী অধিকারের অবস্থা কেমন?
-
বেতন বৈষম্যের কারণে নারীদের প্রতিবাদ
পার্সটুডে- ফ্রান্সের জাতীয় পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউটের সাম্প্রতিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ফরাসি নারীরা গড়ে পুরুষদের চেয়ে ১৪.২ শতাংশ কম বেতন পান, যদিও তাদের কর্মঘণ্টা অভিন্ন।
ফরাসি দৈনিক লা ফিগারো জানিয়েছে, ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী ফ্রান্সে নারী ও পুরুষের মজুরির ব্যবধান গড়ে ১৪.২ শতাংশ। যদিও ২০১৬ সালে এই ব্যবধান ছিল ১৫.১ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ০.৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
নারী অধিকারকর্মীদের মতে, এই হারে চলতে থাকলে প্রকৃত মজুরি সমতা অর্জন হতে আরও ১৪২ বছর লাগবে অর্থাৎ ২১৬৭ সালে গিয়ে তা সম্ভব হবে। তারা দাবি করছেন, যেসব পেশায় নারীর সংখ্যা বেশি, সেখানে বেতন বৃদ্ধি করতে হবে এবং নারী ও পুরুষ উভয়কেই সমপরিমাণ মাতৃত্ব ও পিতৃত্বকালীন ছুটি দিতে হবে।
এছাড়া, তারা চান সরকারি চুক্তি বা অনুদান পাওয়ার শর্ত হিসেবে লিঙ্গভিত্তিক সমতাকে যুক্ত করতে হবে। এটা সম্ভব হলে, সরকারি বাজেটের মাধ্যমে লিঙ্গবৈষম্য আর বাড়বে না।
এর আগে ফরাসি দৈনিক লামানিতায় “নারীরা বিনা বেতনে কাজ করে” শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ফ্রান্সে পুরুষ ও নারীর মজুরির পার্থক্য গড়ে ২২ শতাংশে পৌঁছেছে অথচ দেশটি নিজেকে লিঙ্গসমতার অগ্রদূত হিসেবে উপস্থাপন করে থাকে।
তবে ফরাসি নারীদের সমস্যা শুধু মজুরি বৈষম্যেই সীমাবদ্ধ নয়। নারীরা গার্হস্থ্য ও সামাজিক সহিংসতার শিকারও হচ্ছেন। এমনকি এই সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফ্রান্সের বর্তমান প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু তার সরকার ব্যর্থ হওয়ায়, তিনি এক বিবৃতিতে নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ইস্যুতে ফ্রান্সের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি নিহত নারীদের তালিকা প্রকাশ করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
আকর্ষণীয় স্লোগান ও নারীবাদী আন্দোলনের আড়ালে বাস্তবতা হলো, ২১ শতকেও ইউরোপের বহু দেশে নারী ও পুরুষ একই কাজের জন্য সমান বেতন পান না। শিল্পবিপ্লবের পর পশ্চিমে নারীদের শ্রমবাজারে যুক্ত করা হয়েছিল সস্তা শ্রমের উৎস হিসেবে, এখনও বহু দেশে এমনকি নারীবাদের জন্মভূমি ফ্রান্সেও তারা এখনো তুলনামূলকভাবে সস্তা শ্রমশক্তি হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।#
পার্সটুডে/এসএ/১০
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।