এপ্রিল ১৮, ২০২৩ ১৫:৩২ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতাবন্ধুরা! আজ ১৮ এপ্রিল মঙ্গলবারের কথাবার্তার আসরে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • শিশু জন্মে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় ২৩৬৯ কোটি টাকা-প্রথম আলো
  • বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রধানমন্ত্রীর ৯ কোটি টাকা ঈদ উপহার–ইত্তেফাক
  • বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে নির্মূল নীতি অবলম্বন করেছে সরকার : প্রিন্স-নয়া দিগন্ত
  • বাংলাদেশের উন্নয়নে ভারত সবসময়ই পাশে থাকবে : প্রণয় ভার্মা- বাংলাদেশ প্রতিদিন
  • রেকর্ড বিদ্যুৎ উৎপাদনেও লোড শেডিং, প্রতিমন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ-কালের কণ্ঠ
  • দেশজুড়ে তীব্র লোডশেডিং, বিপর্যস্ত জনজীবন-মানবজমিন
  • নির্বাচনে অংশ না নিলে রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাবে বিএনপি: তোফায়েল-যুগান্তর

কোলকাতার শিরোনাম:

  • আতিকের পর হিটলিস্টে আরও ৬১ গ্যাংস্টার! যোগীর নির্দেশের অপেক্ষায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ-সংবাদ প্রতিদিন
  • অভিষেককে বদনাম করতে বাবাকে নিয়ে নোংরা রাজনীতি চলছে, অভিযোগ মুকুলপুত্র শুভ্রাংশুর- আনন্দবাজার
  • ‘বেআইনি’ আধার কার্ড চিহ্নিত করতে তৎপর কেন্দ্র-গণশক্তি

শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি- 

কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:

১. পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পর সিইসি'র সঙ্গে বৈঠকে ইইউ রাষ্ট্রদূত, নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা। এটা মানবজমিনের শিরোনাম। আসলে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কী হচ্ছে?

২. ইরানের প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী টেলিফোনে আলাপ করেছেন। তারা কী নিয়ে আলোচনা করলেন এবং বিষয়গুলো কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর

পুড়ছে মার্কেট, সর্বস্বান্ত ব্যবসায়ীরা, দোষারোপের রাজনীতি আগুন নিয়েও, নিরপেক্ষ তদন্ত ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা * রাজনৈতিক বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তবতার মিল দিনদিন কমে যাচ্ছে -ড. শাহদীন মালিক

বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ড

বাংলাদেশে দোষারোপের রাজনীতি অনেকটা স্থায়ী সংস্কৃতি হয়ে উঠেছে। কোনো ঘটনা ঘটার পরপরই রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছে। সব ছাপিয়ে ঘটনাটি তখন রাজনৈতিক ইস্যুতে রূপ নেয়। এভাবে দোষারোপের রাজনীতির কারণে বেশির ভাগ ঘটনারই প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন সম্ভব হয় না। কোনো ঘটনায় তৃতীয় পক্ষ ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করলেও তারা রয়ে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। সম্প্রতি দেশের মার্কেটগুলোয় একের পর এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটছে। এতে নিঃস্ব হচ্ছেন শত শত ব্যবসায়ী। এসব ঘটনার পেছনে নাশকতা রয়েছে কি না, চারদিকে সেই সন্দেহ ঘুরপাক খাচ্ছে। ঠিক সেই সময়ে আগুন নিয়েও শুরু হয়েছে দোষারোপের রাজনীতি। বড় দুটি দল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপি এসব ঘটনায় সরাসরি একে অপরকে দায়ী করছে। তাদের এমন বক্তব্যে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, প্রতিটি ঘটনা নিয়েই রাজনৈতিক দলগুলো ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করে, যা মোটেও কাম্য নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। চাঞ্চল্যকর বা ভয়াবহ ঘটনার ক্ষেত্রে আগ বাড়িয়ে কাউকে দোষারোপ করা উচিত নয়। এতে মূল তদন্ত ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বিশেষ করে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ঘটনার সঙ্গে কারও জড়িত থাকার ইঙ্গিত দেওয়া হলে তদন্তকারীদের ওপর একটা মানসিক চাপ তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তদন্তের ক্ষেত্রে সরকারের চাওয়াপাওয়ার একটা প্রভাব পড়তে পারে। অতীতে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার ক্ষেত্রে এমনটাই দেখা গেছে। এতে ঘটনার প্রকৃত কারণ থেকে যাচ্ছে অজানাই। অতীতেও এমন ঘটনা ঘটেছে। যেমন: ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার পর গঠিত তদন্ত কমিটির ক্ষেত্রেও প্রভাবিত হওয়ার অভিযোগ ওঠে। সেবার রাজনৈতিক প্রভাবে প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে ‘জজ মিয়া’ নামে নাটক সাজায় তদন্তকারী সংস্থা।

৪ মার্চ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বঙ্গবাজারের কয়েকটি মার্কেট পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে পথে বসেন শত শত ব্যবসায়ী। এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পেছনে নাশকতা ছিল বলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মনে একটা সন্দেহ শুরু থেকেই তৈরি হয়। যদিও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন গঠিত তদন্ত কমিটি নাশকতার কোনো আলামত পায়নি। বঙ্গবাজারের আগুনের রেশ কাটতে না কাটতেই শনিবার পুড়ে ছাই হয়ে যায় ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটের কয়েকশ দোকান। এ অগ্নিকাণ্ডের পর নাশকতার বিষয়টি আরও জোরালো হয়ে ওঠে। বিশেষ করে দুটি মার্কেটে আগুন লাগার সময় প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় এ সন্দেহ আরও জোরদার হয়। ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান সবাই। কিন্ত তদন্ত কমিটি গঠন এবং কাজ করার আগেই শুরু হয় দোষারোপের রাজনীতি।

নিউ সুপার মার্কেট

নিউ সুপার মার্কেট যেদিন আগুন লাগে, সেদিনই ছিল আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভা। গণভবনে অনুষ্ঠিত ওই সভায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নিসন্ত্রাসের কথা ভুলে যাবেন না। কারণ, তাদের অগ্নিসন্ত্রাস অন্য কোনো উপায়ে আছে কি না বা তারা বিভিন্ন উপায়ে তা ঘটিয়েছে কিনা, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’ সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আগুনের মতো ঘটনা ঘটিয়ে তারা (বিএনপি-জামায়াত) ভিন্নপথ বেছে নিচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা উচিত। আগে তারা সাধারণ মানুষকে পুড়িয়েছে। এখন তারা অর্থনীতিকে পঙ্গু করার পথ নিয়েছে কি না-আমাদের এই রহস্য বের করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যকে ‘দায়িত্বহীন’ বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওইদিনেই এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বলা উচিত ছিল, এ ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তা না করে আগে থেকেই বলে দিচ্ছেন-এটার সঙ্গে বিএনপি জড়িত আছে কি না, সেটা দেখতে হবে। অর্থাৎ আগেই বলে দিচ্ছেন যারা তদন্ত করবে বা করতে পারে, তাদের ওই দিকে দেখতে হবে। অর্থাৎ উদ্দেশ্য একটাই-যেভাবেই হোক বিএনপিকে জড়িত করে দোষী সাব্যস্ত করা।’

এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট আইনজীবী সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক যুগান্তরকে বলেন, কোনো ঘটনার পর একে অপরকে দোষারোপ বাস্তবতাবিবর্জিত রাজনীতির যে প্রচলন, সেটারই বহিঃপ্রকাশ। রাজনৈতিক বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তবতার মিল দিনদিন কমে যাচ্ছে। অতিরঞ্জিত বা অবাস্তব বক্তব্যই এখন আমাদের রাজনীতির মূলধারা। নিরপেক্ষভাবে আইনের প্রয়োগ না থাকায় তদন্তে প্রভাবিত হবে এবং রাজনৈতিক কারণে প্রকৃত ঘটনা আড়াল হবে, এটাই প্রচলিত হয়ে গেছে।

দেশজুড়ে তীব্র লোডশেডিং, বিপর্যস্ত জনজীবন-মানবজমিন

দেশব্যাপী গত দুই সপ্তাহ ধরে বইছে তাপদাহ। এরমধ্যেই দেশজুড়ে হচ্ছে প্রচণ্ড লোডশেডিং। এতে অসহ্য গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শহরের তুলনায় গ্রামে লোডশেডিং হচ্ছে বেশি। গ্রামাঞ্চলে দিনে-রাতে ১০ থেকে ১৫ ঘণ্টারও বেশি বিদ্যুৎ থাকছে না। লোডশেডিংয়ের নেই কোন শিডিউল। যখন-তখনই চলে যাচ্ছে বিদ্যুৎ। অনেক গ্রামে রাতে বিদ্যুৎ একবার গেলে আর আসেই না। এতে ফুঁসে উঠছে মানুষ। অনেক এলাকার বিক্ষুব্ধ মানুষ বিদ্যুৎ অফিসে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে।

রেকর্ড সংখ্যক উৎপাদনের পরও লোডশেডিংয়ের কারণে অনেক শিল্পকারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। কয়েকদিন ধরে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটে ঢাকা, গাজীপুর, সাভার, কোনাবাড়ী, আশুলিয়া, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ময়মনসিংহ এলাকার পোশাকসহ অন্যান্য কারখানায় উৎপাদন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এতে ঈদের আগে ব্যবসা-বাণিজ্য চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিল্প মালিকরা।

জানা যায়, গ্রামে অর্থাৎ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) আওতাভুক্ত এলাকায় লোডশেডিং হচ্ছে গড়ে দুই হাজার মেগাওয়াটেরও বেশি। লোডশেডিংয়ে বেশি নাজুক ৬৩টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।

এদিকে রাজধানীসহ দেশের বড় শহরগুলোর পরিস্থিতি তুলনামূলক ভালো হলেও গ্রামাঞ্চলের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কারণে রাতে ঘুমাতে পারছে না মানুষ। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন। রোববার রাতে ফেনীর ছাগলনাইয়ায় বিদ্যুৎ অফিসে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা।

ছাগলনাইয়া পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. জানে আলম জানিয়েছেন, ‘বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে বিক্ষুব্ধ দুই সহস্রাধিক জনতা বিদ্যুৎ অফিসে হামলা চালিয়ে অফিসের গেট, আসবাবপত্র, দরজা ও জানালার কাচ ভাঙচুর করেছে। এ সময় ভয়ে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেন।

এ বিষয়ে সোমবার এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, গরম বেশি পড়লে বিদ্যুতের তার গরম হয়, তখন ঝুঁকিও বাড়ে।’ সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের জন্য এটাও কারণ হতে পারে বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, ‘বিদ্যুতের অবস্থা আগের চেয়ে উন্নতি হয়েছে। কিছুদিন আগেও পরিস্থিতি ভালো ছিল না। জ্বালানি সংকটের মধ্যে এখন আর বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব না।

জানা গেছে, এখন সারা দেশে সরকারিভাবে ১০০০ মেগাওয়াটের মতো লোডশেডিংয়ের কথা বলা হলেও বাস্তবে তা আরও বেশি। বিতরণ কোম্পানিগুলোর হিসাবে এই লোডশেডিং ১৫শ থেকে ২ হাজার মেগাওয়াট। সর্বোচ্চ চাহিদার সময় এখন গড়ে ১৪ হাজার ৫০০ থেকে সাড়ে ১৫ হাজারের ওপরে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে।

শিশু জন্মে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় ২৩৬৯ কোটি টাকা-প্রথম আলো

বছর বছর দেশে সন্তান প্রসবে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার বাড়ছে। ২০২২ সালে প্রসবকালে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচারে কমপক্ষে ২ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ বাড়তি খরচের তথ্য পাওয়া গেছে।

জনস্বাস্থ্য ও প্রসূতি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রসবে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার বেড়ে যাওয়ার পেছনে বাণিজ্যিক কারণই প্রধান। এর জন্য বেসরকারি হাসপাতালের মালিকপক্ষ যেমন দায়ী, তেমনি সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদেরও দায় আছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রসূতি রোগবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রওশান আরা বেগম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিশেষ করে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। প্রসব হয় এমন প্রতিটা হাসপাতালে লেবার রুম থাকতে হবে। অনৈতিক কাজ যেন না হয়, তার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নজরদারি বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে।

অস্ত্রোপচারে কত ব্যয়

বেসরকারি হাসপাতালে প্রসবের ক্ষেত্রে একটি অস্ত্রোপচারে ব্যয়ের কোনো সীমা নির্ধারণ করা নেই। রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকার একটি বড় হাসপাতাল জানিয়েছে, প্রসবে অস্ত্রোপচারে তারা ২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে। অতিসম্প্রতি খিলক্ষেতের এক নারী উত্তরার একটি বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের বিল দিয়েছেন এক লাখ টাকা।

প্রথম আলোর রাজশাহী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, রাজশাহী শহরে এ বাবদ খরচ হয় ২০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা। চট্টগ্রাম প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চট্টগ্রামে প্রসবে অস্ত্রোপচারের খরচ ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা।

* অস্ত্রোপচারের বাড়তি খরচ দিয়ে ১৪ হাজার ২০৮টি কমিউনিটি ক্লিনিকের ৩ বছরের খরচ চলবে।

* বেসরকারি হাসপাতালের ৬৯ শতাংশ অস্ত্রোপচার হচ্ছে প্রয়োজন ছাড়াই।

* ২০২২ সালে ৩৬ লাখ ৩ হাজার ৫০৬টি শিশুর মধ্যে ৪৫ শতাংশের জন্ম অস্ত্রোপচারে।

এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

আতিকের পর হিটলিস্টে আরও ৬১ গ্যঅংস্টার

আতিকের পর হিটলিস্টে আরও ৬১ গ্যাংস্টার! যোগীর নির্দেশের অপেক্ষায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ-সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতিতে পুলিশি ঘেরাটোপে খুন হয়েছেন গ্যাংস্টার রাজনীতিবিদ আতিক আহমেদ (Atiq Ahmed) এবং তার ভাই আশরফ। এই ঘটনার পর যোগীরাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আসরে নেমেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। একের পর এক এনকাউন্টার ও শুট আউট নিয়ে তাদের মন্তব্য, যোগী আদিত্যনাথের (Yogi Adityanath) প্রশ্রয়ে গুন্ডারাজ চলছে উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh)। সেখানে সংবিধান তথা বিচার ব্যবস্থা গুরুত্বহীন। এই অবস্থায় রাজ্যের দাগি দুষ্কৃতীদের স্বস্তিতে থাকতে দিতে নারাজ ইউপি পুলিশ। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে ৬১ জন দাগি দুষ্কৃতী এবং তাদের শাকরেদদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এদের উপর নজর রাখা হচ্ছে। অপরাধীদের হাতে এবং ভাতে মারতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।

উত্তরপ্রদেশ পুলিশ সূত্রে খবর, ৬১ জন দাগি দুষ্কৃতীদের মধ্যে রয়েছে মদ মাফিয়া, জঙ্গল মাফিয়া, বালি মাফিয়া, গরু পাচারকারী ও অন্যান্য অপরাধী। এই মাফিয়াদের মোট ৫০০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী সবুজসংকেত দিলেই কাজ শুরু হবে। এদের মধ্যে মদ মাফিয়া সুধাকর সিং বর্তমানে জেলবন্দি। মাথার দাম ১ লক্ষ টাকা। মূলত প্রতাপগড়, সুলতানপুর এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় রাজত্ব চালায়। আরেক মদ মাফিয়া গুড্ডু সিংও জেলবন্দি। গত বছর গুড্ডুর নিয়ন্ত্রিত একাধিক ঘাঁটিতে হানা দিয়ে ১২ কোটি টাকার অবৈধ মদ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। আরেক ত্রাশের নাম গব্বর সিং। তার বিরুদ্ধে জমি ক্রোক, ডাকাতি, খুন-সহ ৫৬টি মামলা ঝুলছে। মাথার দাম ১ লক্ষ টাকা।

এছাড়াও উত্তরপ্রদেশ পুলিশের প্রথম ২৫ দুষ্কৃতীর তালিকায় রয়েছে উধম সিং। তার বিরুদ্ধে খুন, হত্যা, জোর পূর্বক টাকা আদায়-সহ অগুন্তি অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। উন্নাও জেলে বন্দি রয়েছে উধম। এছাড়াও যোগেশ ভাদৌরা, বদন সিং, অজিৎ চৌধুরী, ধর্মেন্দ্র কিরথাল, সুনীল রাঠি, অভিষেক সিং, নিহাল আলিয়াস, রাজন তিওয়ারি, সুধীর কুমার সিং, বিনোদ উপধ্যায়, রিজওয়ান জাহির, দিলীপ মিশ্র, অনুপম দুবে, হাজি ইকবাল, বাচ্চু যাদব, জুগনু ওয়ালিয়া, লাল্লু যাদবের মতো ভয়ংকর দুষ্কৃতীরা যোগীর পুলিশের হিটলিস্টে রয়েছে। যোগীর নির্দেশ মিলতেই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কী সেই ব্যবস্থা? 

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘মন্তব্য’ ঘিরে অভিযোগ সুপ্রিম কোর্টে।এক দিকে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একের পর এক নির্দেশে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ জারি হচ্ছে। অন্য দিকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য সম্পর্কেও সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ উঠছে।এর আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মুকুল রোহতগি সুপ্রিম কোর্টে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সম্পর্কে বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরীর বেঞ্চে অভিযোগ তুলেছিলেন। বলেছিলেন, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের দুর্নীতির মামলা শুনছেন। সেই মামলা নিয়েই টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন। তাঁর মামলা শোনার কোনও অধিকার থাকতে পারে না! আজ সুপ্রিম কোর্ট নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিষেকের বিরুদ্ধে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের তদন্তের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে।

জীবনকৃষ্ণ গ্রেফতারি নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী, বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন মমতার-আনন্দবাজার পত্রিকা

Image Caption

 

বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করা নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও বিধায়কের নাম করেননি তিনি। সোমবার নবান্নে মমতার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, রাজ্যের আরও এক বিধায়কের নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া প্রসঙ্গে তিনি কিছু বলতে চান কি না। জীবনকৃষ্ণের নাম করেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, বড়ঞার বিধায়কের বিরুদ্ধে যে ৫০০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, সে প্রসঙ্গেই বা কী বলবেন? জবাবে মমতা প্রশ্নকর্তাকে থামিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘‘বললেই হয়ে গেল? ৫০০ কোটি টাকা গুণে দেখেছেন? আমি যদি কাল আপনার বাড়িতে গিয়ে বলি ৫০০ কোটির হিসাব পাওয়া গিয়েছে, আপনি মেনে নেবেন?’’ এর পরে মমতার সংযোজন, ‘‘কোনও প্রমাণ আছে? ৫০০ কোটি যে পাওয়া গিয়েছে তার কোনও প্রমাণ দেখাতে পারবে?’’

এনকাউন্টারের কাউন্টার কী? সংবাদ প্রতিদিনের সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, সত‌্যপাল মালিকের বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার প্রকাশ্যে আসার পর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই এলাহাবাদে ঘটেছে প্রাক্তন সাংসদ ও গ‌্যাংস্টার আতিক আহমেদের হত‌্যাকাণ্ড। আতিকের হত‌্যাকাণ্ড দেশে গণতন্ত্রের ভবিষ‌‌্যৎ নিয়ে কিছু গূঢ় প্রশ্ন সামনে নিয়ে এসেছে, যাতে এই জোড়া হত‌্যাকাণ্ডের পিছনে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকাকেও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। লোকসভা ভোটে যে এই দুই ইস্যুর ছায়া পড়বে, তা নিয়ে সংশয় নেই।

জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ‌্যপাল সত‌্যপাল মালিকের সাম্প্রতিক বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার এবং গ‌্যাংস্টার আতিক আহমেদের রহস‌্যজনক খুন অস্বস্তি বাড়াল বিজেপির। মাস দুয়েক বাদেই সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হবে। বাজেট অধিবেশন আদানি ইস্যুকে সামনে রেখে হইহট্টগোলে শেষ হয়েছে। বাদল অধিবেশন সত‌্যপাল মালিকের সাক্ষাৎকার এবং আতিক আহমেদের হত‌্যাকাণ্ডকে ঘিরে যে উত্তপ্ত হবে, তা এখন থেকেই বলে দেওয়া যায়।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৮

ট্যাগ