সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩ ১৬:০৯ Asia/Dhaka

শ্রোতাবন্ধুরা, আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক প্রীতি আর শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি চিঠিপত্রের আসর 'প্রিয়জন'। আজকের আসরে আপনাদের সঙ্গে রয়েছি আমি নাসির মাহমুদ এবং আমি আশরাফুর রহমান।

আশরাফুর রহমান: প্রত্যেক আসরের মতো আজও অনুষ্ঠানের শুরুতেই আমি একটি বাণী শোনাতে চাই। ইমাম আলী (আ.) বলেছেন:  'যে ব্যক্তি অন্যের কাছে নিজের সমস্যাকে প্রকাশ করে, সে নিজের জন্য অপমানকে পছন্দ করে।'

নাসির মাহমুদ: আমরা নিজেদের সমস্যা অন্যদের কাছে প্রকাশের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করব- এ কামনায় নজর দিচ্ছি চিঠিপত্রের দিকে।

আসরের প্রথম মেইলটি এসেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুপী থেকে। আর পাঠিয়েছেন মহ: হাফিজুর রহমান।

তিনি লিখেছেন, "রংধনু আসরে মোল্লা নাসিরউদ্দিন হোজ্জার পরিচিতি ও তাঁর সুন্দর চারটি মজার গল্প অত্যন্ত ভালো লাগল, দারুণভাবে উপভোগ করলাম। আমাদের স্কুলের লাইব্রেরিতে মোল্লা নাসিরউদ্দিনের গল্পের বই থাকলেও রংধনু আসরে প্রচারিত গল্পগুলো ছিল একেবারেই অজানা। তাই উপভোগটা আরো ভালোভাবে করলাম। এছাড়া, আসরের শেষের দিকে চট্টগ্রাম মহানগরীর নিহারিকা ফুলকুঁড়ি আসরের সদস্যদের কণ্ঠে 'কঁচি কাঁচার ভিড়ের মেলায় আয়রে ছুটে আয়' শিরোনামের একটি দেশের গান শুনলাম। রংধনু আসরের প্রযোজকসহ রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগের সবার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই।"

আশরাফুর রহমান: আসরের পরের মেইলটিও রংধনু আসর সম্পর্কে। আর পাঠিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট থেকে বিধান চন্দ্র সান্যাল।

তিনি লিখেছেন, "৭ সেপ্টেম্বর রেডিও তেহরানের সান্ধ্য অনুষ্ঠানে রংধনু আসরে '-এক কবুতর দম্পতির গল্প'  শুনে খুব খুব ভালো লাগল। গাজী আব্দুর রশীদ ও আক্তার জাহানের সুমধুর কণ্ঠে নাট্য রূপের ভঙ্গিমায় অপরূপ পরিবেশনা আমাকে যেন শৈশবে নিয়ে যায়। অনুষ্ঠানটি শুনে মনে হলো- আগামী দিনে হয়তোবা রূপকথার গল্প কাহিনী এবং নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রংধনু অনুষ্ঠানের উপর ভর দিয়ে আমরা যেতে পারব কল্পলোকে, সেখানে থাকবে নিছক আনন্দের উপাদান, তার ভেতরেই আমরা খুঁজে নিতে পারব বাস্তবকে, অচেনা চেহারায় বাস্তব ধরা দেবে আমাদের সামনে। ধন্যবাদ রংধনু আসরের প্রযোজককে। ধন্যবাদ রেডিও তেহরানকে।"

নাসির মাহমুদ: রংধনু আসর সম্পর্কে চমৎকার মতামতের জন্য ভাই নিজামুদ্দিন শেখ ও বিধান চন্দ্র সান্যাল আপনাদের দু'জনকেই অসংখ্য ধন্যবাদ।

ভারতের পর এবার বাংলাদেশের চিঠি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার ছোট জামবাড়িয়া থেকে মুহাম্মদ আব্দুল হাকিম মিঞা পাঠিয়েছেন দুটি মেইল।

আশরাফুর রহমান: চলতি বছর এই প্রথম আব্দুল হাকিম ভাইয়ের মেইল পেলাম। একসঙ্গে দুটি চিঠি পেয়ে বেশ ভালো লাগল। তো কী লিখেছেন তিনি?

নাসির মাহমুদ: সালাম ও শুভেচ্ছা জানাবার পর একটি মেইলে তিনি লিখেছেন,  গত ১০ জুলাই সকালে আল-খলিল শহরের একটি বাড়িতে দুইজন ইহুদিবাদী নারী সেনা মজলুম ফিলিস্তিনি নারীদের বিবস্ত্র করে তল্লাশি চালিয়ে ঘৃণ্য অপরাধ করেছে। তারা যে জঘন্য অপরাধ করেছে তার কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববাসী তথা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রথম চিঠিটি শেষ করেছেন তিনি।

আশরাফুর রহমান: আর দ্বিতীয় চিঠিতে আব্দুল হাকিম ভাই কী লিখেছেন?

নাসির মাহমুদ: এই চিঠিতে তিনি একটি প্রশ্ন করেছেন। জানতে চেয়েছেন ইরানের মোট জনসংখ্যার কত শতাংশ শিয়া আর কত শতাংশ সুন্নি?  এর বাইরে কোন্‌ কোন্‌ ধর্মের মানুষ ইরানে বসবাস করে?

আশরাফুর রহমান: ইরানের মোট জনসংখ্যার ৯৯ শতাংশই মুসলমান। তাদের মধ্যে ৮৯ শতাংশ শিয়া এবং ১০ শতাংশ সুন্নি। বাকিরা অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।

নাসির মাহমুদ: আব্দুল হাকিম ভাইয়ের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলো। যদিও তার চিঠি এখনও শেষ হয়নি। তিনি ইরানের প্রসিদ্ধ একটি ইসলামি গান শুনতে চেয়েছেন।

আশরাফুর রহমান: আব্দুল হাকিম ভাইয়ের অনুরোধের গানটি আমরা আজকের অনুষ্ঠানের শেষ দিকে শোনানোর চেষ্টা করব। তো দীর্ঘ বিরতির পর আবারো চিঠি লিখায় আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

নাসির মাহমুদ: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বারুইপাড়া থেকে এস এম নাজিম উদ্দিন পাঠিয়েছেন ৩টি মেইল। একটিতে তিনি লিখেছেন, "রেডিও তেহরান এর সাথে নিয়মিত নানা বৈচিত্র্যপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিজেকে সমৃদ্ধ করে চলেছি। আপনাদের নিরবিচ্ছিন্ন কর্মদক্ষতায় রেডিও তেহরান আজ লক্ষ লক্ষ শ্রোতার মন জয় করে নিতে পেরেছে। যার প্রমাণ মেলে অনুষ্ঠানের লাইভ অনুষ্ঠান চলাকালীন শ্রোতাদের মন্তব্য ও জনপ্রিয় অনুষ্ঠান 'প্রিয়জন' এর আসর শুনলে। গত ৪ঠা সেপ্টেম্বর, সোমবারের 'প্রিয়জন' অনুষ্ঠান শুনলাম। বরাবরের মতোই আসরটি ছিল জমজমাট। তবে ইদানিং প্রিয়জনে আক্তার জাহান আপা ও গাজী আব্দুর রশিদ ভাইকে পাচ্ছি না- এর কারণ কী? তারা নিশ্চয় ছুটি কাটাচ্ছেন?"

আশরাফুর রহমান: নাজিম ভাইয়ের ধারণা একদম সঠিক। তারা দুজনই বাংলাদেশে গেছেন ছুটি কাটাতে। তবে তারা শিগগিরই প্রিয়জনে যোগ দেবেন বলে আমরা আশাবাদী। তো চিঠি লিখার জন্য নাজিম ভাই, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

রংপুরের মাহিগঞ্জ থেকে মোঃ মাসুদ রানা খান পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি। তিনি আইআরআইবি ফ্যান ক্লাব রংপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক।

মাসুদ ভাই লিখেছেন, "রেডিও তেহরান আমার পছন্দের গণমাধ্যম। কেননা, রেডিও তেহরান বাংলা ধর্মীয় মনস্তাত্ত্বিক চিন্তাধারার অনুষ্ঠান নির্মাণ ও সম্প্রচার করে  নিরপেক্ষতা বজায় রেখে। অনুষ্ঠান শুনতে এটি আমাকে খুবই প্রভাবিত করে।"

নাসির মাহমুদ: এর পর তিনি লিখেছেন, "রেডিও তেহরান থেকে প্রচারিত ৪ সেপ্টেম্বরের বিশ্ব সংবাদ ভালো লেগেছে। সেদিনের দৃষ্টিপাত অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিয়ে প্রতিবেদনটিও ভালো লেগেছে।" এছাড়া কথাবার্তা ও প্রিয়জন অনুষ্ঠানেও প্রশংসা করেছেন তিনি।

আশরাফুর রহমান: ভাই মাসুদ রানা খান, আমাদের কয়েকটি অনুষ্ঠান সম্পর্কে ভালোলাগার অনুভূতি জানিয়ে ইমেইল করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আসরের পরের মেইলটি এসেছে ভারতের ছত্তিশগড়ের দুর্গ জেলার ভিলাই থেকে। আর পাঠিয়েছেন পরিবার বন্ধু শর্টওয়েভ লিসেনার্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট আনন্দ মোহন বাইন।

তিনি লিখেছেন, "রেডিও তেহরানের প্রায় সব অনুষ্ঠান আমার পছন্দ। পাশ্চাত্যের  মিডিয়া যে খবরগুলো চেপে যায় আপনারা তা প্রচার করেন। ভারত বাংলাদেশের খবর দেওয়ার সময় আপনারা যেভাবে দুই পক্ষের কথা তুলে ধরেন সেটি আজকাল অধিকাংশ সংবাদ মাধ্যম করে না।"

নাসির মাহমুদ: এরপর আনন্দ মোহন বাইন লিখেছেন, "২১ আগস্ট  চিঠিপত্রের আসর প্রিয়জন শুনেছি। এই অনুষ্ঠানের একটি বড় বৈশিষ্ট্য হল- আশরাফুর রহমান সাহেব কোনো হাদিস বা বাণী দিয়ে আসর শুরু করেন যা থেকে আমরা কিছু মূল্যবান কথা জানতে পারি। শ্রোতাদের চিঠিপত্র বা সাক্ষাৎকার শুনতে খুব ভালো লাগে তবে আমার মনে হয় শ্রোতারা গঠনমূলক পত্র কম লেখেন। তবে একথা সত্য যে, রেডিও তেহরানের শ্রোতা সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া ফেসবুকে বেশ কিছু বন্ধু নিয়মিত অন্য বন্ধুকে শেয়ার করছেন।"

আশরাফুর রহমান: রেডিও তেহরানের শ্রোতাসংখ্যা দিন দিন বাড়ছে জেনে ভালো লাগল। তো চিঠি আর মতামতের জন্য আনন্দ মোহন বাইন আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

শ্রোতাবন্ধুরা, অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে আমরা একটি অডিও বার্তায় আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে মতামত জানব। এটি পাঠিয়েছেন, বাংলাদেশের গাজীপুরের সিনিয়র শ্রোতা মো. খোরশেদ আলম সরকার।   

মো. খোরশেদ আলম সরকার

নাসির মাহমুদ: আমাদের পুরোনো শ্রোতা খোরশেদ আলম ভাইকে কথাগুলো ভালো লাগল। তিনি একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বলে লিখতে পারেন না। তবে কথা বলেন বেশ সাজিয়ে-গুছিয়ে। আশা করি মাঝেমধ্যে তার অডিও বার্তা পাব।

আশরাফুর রহমান: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার শীতলকুচি থানার গাদোপোতা থেকে সহিদুল ইসলাম পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি। তিনি লিখেছেন,  "গত ৪ আগস্ট তারিখে রেডিও তেহরানের রংধনু অনুষ্ঠানে পিঁপড়া ও অহংকারী রাজার গল্পটি ছিল শিক্ষণীয়। গল্পটি থেকে জানতে পারলাম, অহংকারী রাজার শেষ পরিণতি ও সামান্য একটি ক্ষুদ্র পিঁপড়ের বুদ্ধিমত্তার পরিচয়। পৃথিবীতে কাউকে ছোট করে দেখতে নেই।শিক্ষণীয় এই গল্পটি প্রচার করার জন্য রেডিও তেহরানকে ধন্যবাদ জানাই।"                                            

নাসির মাহমুদ: ভাই সহিদুল ইসলাম, রংধনু আসরে প্রচারিত গল্প থেকে আপনি শিক্ষালাভ করতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগল। আশা করি আমাদের অন্য অনুষ্ঠানগুলো সম্পর্কেও লিখবেন।

বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের জলিরপাড় থেকে সিনিয়র শ্রোতা বিধান চন্দ্র টিকাদার পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি।

তিনি লিখেছেন, "প্রিয়জন একটি সুন্দর অনুষ্ঠান। এখানে শ্রোতারা রেডিও তেহরান বাংলা অনুষ্ঠানের উপর মতামত দিয়ে থাকেন যা শুনে খুব ভালো লাগে। শুধু প্রিয়জন অনুষ্ঠানই নয়, রেডিও তেহরানের সকল অনুষ্ঠান আমার খুব প্রিয়। স্বাস্থ্যকথা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রোগ নিয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের আলোচনা শুনে অনেক উপকৃত হতে পারছি। শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও তার বাংলা তর্জমা দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয় যা অনেক ভালো লাগে।"

আশরাফুর রহমান: প্রিয়জন, স্বাস্থ্যকথা এবং অর্থসহ কুরআন তেলাওয়াত সম্পর্কে ভালোলাগার অনুভূতি জানানোয় ভাই বিধান চন্দ্র টিকাদার আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আজকের আসরের শেষ মেইলটি এসেছে বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের খড়মপট্টি থেকে। আর পাঠিয়েছেন শরিফা আক্তার পান্না। তিনি ইরানের বর্তমান চিকিৎসাব্যবস্থা সম্পর্কে কিছু তথ্য জানতে চেয়েছেন। তার প্রশ্নগুলো হলো: ইরানে চিকিৎসা ব্যবস্থা কি সম্পূর্ণ সরকারি? নাকি আমাদের মত বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকও আছে?ইরানে বর্তমানে কতটি হাসপাতাল আছে?

নাসির মাহমুদ:  বোন শরিফ আক্তার পান্না, আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, ইরানে সরকারি ও বেসরকারি দু'ধরনের চিকিৎসাকেন্দ্রই চালু আছে। ২০২০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ইরানে সরকারি হাসপাতালের সংখ্যা ৭৩৯টি এবং বেসরকারি হাসপাতাল ৯৫২টি। আর ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের সময় সরকারি হাসপাতাল ছিল মাত্র ১১০টি। সেসময় সরকারি হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ছিল ৫৭ হাজার আর বর্তমানে রয়েছেন ১ লাখ ৪০ হাজার।

আশরাফুর রহমান: তো শ্রোতাবন্ধুরা, আমাদের আজকের অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত সময় প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। বিদায় নেওয়ার আগে রয়েছে শ্রোতাবন্ধু আব্দুল হাকিম মিঞার অনুরোধের একটি ফার্সি গান। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিবেদিত গানটির কণ্ঠশিল্পী মোহসেন মির্জাজাদেহ। 

নাসির মাহমুদ: তো বন্ধুরা, আপনারা গানটি শুনতে থাকুন আর আমরা বিদায় নিই প্রিয়জনের আজকের আসর থেকে। 

 

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২১

ট্যাগ