জানুয়ারি ১৮, ২০২৪ ১৭:৩৩ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতাবন্ধুরা! আজ ১৮ জানুয়ারি বৃহস্পতিবারের কথাবার্তার আসরে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • ৬৪৮ জন এমপি’র ব্যাখ্যায় যা বললেন আইনমন্ত্রী-ইত্তেফাক
  • বিএনপি আর টিআইবির ভাষা মিলে গেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী-প্রথম আলো
  • প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ, দ্বিপাক্ষিক ও বৈশ্বিক ইস্যুতে মতবিনিময়-মানবজমিন
  • জাতি সংকট থেকে ওঠে এসেছে: সিইসি-যুগান্তর

কোলকাতার শিরোনাম:

  • রামলালার অযোধ্যায় মোদিই রাম, যোগী লক্ষ্মণ, বিরোধীদের ‘অ্যান্টিডোট’ কী?-সংবাদ প্রতিদিন
  • দেশ বাঁচাতে হঠাও মোদীকে-সীতারাম ইয়েচুরি-গণশক্তি
  • ঋণ বাড়ছে ভারতের, শীঘ্রই ছাড়িয়ে যেতে পারে দেশের জিডিপিকে!-আনন্দবাজার পত্রিকা
  • বিশ্বের শক্তিশালী ১০ মুদ্রার তালিকায় একবারে নিচে ‘ডলার’-আজকাল

শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি- 

কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:

১. টিআইবি বিএনপির দালাল- একথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এটা মানবজমিনের শিরোনাম। কী বলবেন আপনি?

২. পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অবস্থান লক্ষ্য করে ইরান হামলা চালানোর পর পাকিস্তান তার নিন্দা করেছে এবং পরে ইরানের ভেতরে হামলা করেছে। প্রতিবাদে ইরান পাকিস্তানি চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্সকে তলব করেছে। এসব ঘটনাকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর

বিএনপি আর টিআইবির ভাষা মিলে গেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী-প্রথম আলো

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রতিবেদনের সমালোচনা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘বিএনপির ভাষা আর টিআইবির ভাষা মিলে গেছে। রিজভী আহমেদ প্রতিদিন প্রেস কনফারেন্স করে যে কথাগুলো বলেন, সেগুলোকে একটু পরিশীলিতভাবে গতকাল টিআইবি উপস্থাপন করেছে বলেই মনে হচ্ছে।’ আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন। এ সময় হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রে টিআইবি গবেষণা না করেই শ্যালো কিছু বিষয় বা পত্রিকার রিপোর্ট এবং তড়িঘড়ি করে কিছু তথ্য–উপাত্ত সংগ্রহ করে সেটার ভিত্তিতেই প্রেস ব্রিফিং করে। গতকালেরটা আমার সে রকম মনে হয়েছে।’

বিভেদ কমাতে তৃণমূলে যাবেন আওয়ামী লীগ নেতারা-প্রথম আলো

দলের মনোনীত ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী–সমর্থকদের মধ্যে দূরত্ব কমাতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা জেলায় জেলায় সফর করবেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর কৌশলের প্রেক্ষাপটে দলের তৃণমূলে কোন্দল–বিরোধ বেড়েছে। এখন দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সফরের মাধ্যমে তৃণমূলে বিভেদ মিটিয়ে ঐক্য সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগ। 

গতকাল বুধবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে মহানগর ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের যৌথ সভায় এই কথা জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। 

জনগণকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছে। অনেক দেশ পর্যবেক্ষক পাঠিয়েছে। বিএনপির বর্জন করা ছাড়া এ নির্বাচন নিয়ে তাদের কোনো কথা বলার নেই। ভালো নির্বাচন হয়েছে, সে প্রশংসা আসছে। কেবল বিএনপি নির্বাচনকে গ্রহণ করতে পারছে না। তারা এখন বলছে সংসদ অবৈধ।

ওবায়দুল কাদের, সাধারণ সম্পাদক, আওয়ামী লীগ

বৈঠকের শুরুতে ওবায়দুল কাদের গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে বক্তৃতা করেন। এরপর উপস্থিত কেন্দ্রীয়, ঢাকা মহানগর ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল কৌশলের অংশ হিসেবে। জয়–পরাজয় যা–ই হোক না কেন, এখন ভেদাভেদ ভুলে এক হয়ে কাজ করতে হবে। কোথাও সহিংসতা হলে দায়ী ব্যক্তিদের ছাড় দেওয়া হবে না। এরপর তিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের জেলায় জেলায় সফরের কথা বলেন। সফরের সময়সূচি এবং কারা কোন জেলায় যাবেন, তা পরে ঠিক করা হবে। 

উল্লেখ্য, নির্বাচন–পরবর্তী সহিংসতায় সারা দেশে চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক। সহিংসতায় বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে। এসব ঘটনায় আক্রমণকারী ও আক্রমণের শিকার প্রায় সবাই নৌকা ও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী–সমর্থক।

যুগান্তরের খবরে লেখা হয়েছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হওয়ায় একটি ‘সংকট এড়ানো গেছে’। এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জাতি উদ্বেগ ও সংকট থেকে ওঠে এসেছে।  তবে এটা স্থায়ী সমাধান নয়।সিইসি মনে করেন, রাজনীতিবিদদের যদি আস্থা না থাকে, তাহলে নির্বাচন কমিশনের গ্রহণযোগ্যতা থাকে না। নির্বাচন নিয়ে প্রতি পাঁচ বছর পর পর যদি সংকট সৃষ্টি হয়, তাহলে দেশের উন্নয়নও বাধাগ্রস্ত হবে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে আয়োজিত ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও সফলভাবে সম্পন্ন করায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সিইসি। ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে চার কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সবপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা যে ‘অনেকটা হ্রাস পেয়েছে’, সেই বাস্তবতা তুলে ধরে সংস্কারের আহ্বান জানান কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্বেরও একটি পদ্ধতি অন্বেষণ করা প্রয়োজন হবে।

বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর বর্জনের মুখে গত ৭ জানুয়ারি বিচ্ছিন্ন দুই-একটা ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এতে নিরঙ্কুশ জয় পেয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জানিয়েছে, সেই নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ।

সিইসি বলেন, একটি বড় দল শুধু বর্জন করেনি, প্রতিহত করতে চেয়েছিল। নির্বাচন উঠিয়ে আনায় জাতি স্বস্তিবোধ করছে, আমরা স্বস্তিবোধ করছি।

তিনি বলেন, সরকারের সহায়তা ছাড়া এত বড় কর্মযজ্ঞ সফল করা সম্ভব হয় না। আমাদের অপবাদ, বদনাম দুটোই নিতে হবে। সেজন্য রাজনৈতিক নেতাদের একটি গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি খোঁজার তাগিদ দেন তিনি।

সিইসি বলেন, নির্বাচন পদ্ধতিতে সংস্কার আনা সম্ভব হলে আগামীতে নির্বাচন আরও বেশি গ্রহণযোগ্য হবে।

এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

ধোপে টিকল না শুভেন্দুর আপত্তি, মমতার সংহতি মিছিলে অনুমতি হাই কোর্টের-সংবাদ প্রতিদিনের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, ধোপে টিকল না শুভেন্দুর আপত্তি, মমতার সংহতি মিছিলে অনুমতি হাই কোর্টের। আদালতের এই রায়কে হাতিয়ার করে বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। শুভেন্দু অধিকারী এবং অমিত মালব্যকে আক্রমণ করে তাঁর তোপ,”বিজেপির রাজনীতিই হল উন্নয়নের ব্যর্থতা থেকে নজর ঘোরাতে মেরুকরণের চেষ্টা করা। সম্প্রীতির বাংলায় বিষ ঢালার জন্য প্ররোচনা দিচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী, হাই কোর্টের রায়ের পরই তোপ কুণালের। এদিকে রামমন্দির উদ্বোধনে অর্ধদিবস ছুটি ঘোষণা  করেছে কেন্দ্র। সংবাদ প্রতিদিনের অন্য এক খবরের শিরোনামে লেখা হয়েছে, রামলালার অযোধ্যায় মোদিই রাম, যোগী লক্ষ্মণ, বিরোধীদের ‘অ্যান্টিডোট’ কী?

ঋণ বাড়ছে ভারতের, শীঘ্রই ছাড়িয়ে যেতে পারে দেশের জিডিপিকে!-আনন্দবাজার পত্রিকার এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, ‘বিজ়নেস স্ট্যান্ডার্ড-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতকে সতর্ক করে আইএমএফ জানিয়েছে, ভারত সরকারের ঋণের পরিমাণ দেশের জিডিপি অর্থাৎ, ৩.১৮ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।বিপদে পড়তে পারে ভারত! এমনই তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার (আইএমএফ)-এর রিপোর্টে।

আজকালের খবরে লেখা হয়েছে, বিশ্বের যত মুদ্রা আছে তার মধ্যে মার্কিন ডলারের মাধ্যমেই সবচাইতে বেশি লেনদেন হয়ে থাকে অধিকাংশ দেশে। তবে চমকপ্রদ তথ্য হল, রাষ্ট্রসংঘের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ১৮০টি মুদ্রার মধ্যে মার্কিন ডলার বিশ্বের সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী মুদ্রা নয়। আমেরিকা বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। তার পরও স্বয়ংক্রিয়ভাবে মার্কিন ডলার বিশ্বের সেরা মুদ্রা হিসেবে জায়গা করে নিতে পারেনি।

মার্কিন সাময়িক পত্রিকা ফোর্বসের তালিকা অনুযায়ী, ২০২৪ সালের বিশ্বের সেরা ১০টি মুদ্রার তালিকার একবারে নিচে রয়েছে ডলার।্র

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ১৮

ট্যাগ