জুন ১৪, ২০২০ ১৬:৫১ Asia/Dhaka
  • কথাবার্তা: করোনায় বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল, বিপন্ন মানবতা

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ১৪ জুন রোববারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • করোনায় গেল ৩২ প্রাণ, নতুন শনাক্ত ৩,১৪১-দৈনিক কালের কণ্ঠ
  • হাজার হাজার মানুষকে করোনা থেকে রক্ষা করেছে মাস্ক-গবেষণা-দৈনিক ইত্তেফাক
  • লন্ডনে উগ্র-ডানপন্থি, প্যারিসে বর্ণবাদবিরোধীদের সঙ্গে পুলিশে সংঘর্ষ-দৈনিক সমকাল
  • এখনই কলচার্জ বড়ল কেন, কড়া চিঠি বিটিআরসির-দৈনিক প্রথম আলো
  • যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যেই আরেক কৃষ্ণাঙ্গকে গুলি করে হত্যা- দৈনিক যুগান্তর
  • করোনায় বিপন্ন মানবতা-দৈনিক মানবজমিন
  • অর্থ পাচারের শীর্ষে গার্মেন্ট মালিকরা- দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন

ভারতের শিরোনাম:    

  • ভারতে একদিনে ফের রেকর্ড ১২ হাজার করোনায় আক্রান্ত -দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা
  • ফের কড়া লকডাউনের পথে ভারত! কি ছাইছে সবচেয়ে বেশি করোনা প্রভাবিত রাজ্যগুলো?-সংবাদ প্রতিদিন
  • শহরে ফের চালু হলো ট্রাম পরিষেবা, স্বস্তির আশায় যাত্রীরা-আজকাল

পাঠক/শ্রোতা! এবারে চলুন, বাছাইকৃত কয়েকটি খবরের বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক। মহামারি করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা বিশ্বের দেশে দেশে প্রতিমুহূর্তে বাড়ছে। করোনার সর্বশেষ আপডেট, বিভিন্ন দেশে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভের  খবর বিশেষ গুরুত্বসহ পরিবেশিত হয়ছে বিশ্ব মিডিয়ায়। তো সে খবরসহ অন্যান্য খবর দেখে নেয়া যাক।

করোনা বিশ্ব

বিশ্ব করোনা পরিস্থিতি: ওয়ার্ল্ডোমিটারের আজকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী করোনা মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৩২ হাজার ৬৪০ জন, আক্রান্ত ৭৮ লাখ ৮৪ হাজার ৯০৪। করোনায় এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪০ লাখ ৫০হাজার৪ জন। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে মোট মারা গেছেন ১লাখ ১৭ হাজার ৫২৭ জন। এদিকে আক্রান্তের দিক থেকে ভারতের অবস্থান চতুর্থ। এশিয়ার এ অঞ্চলে সংক্রমণ এবং মৃত্যু উদ্বেগজনকহারে বাড়ছে। অন্যদিকে চীনে করোনায় দ্বিতীয় ঢেউ,আংশিক লকডাউনে বেইজিং। যুগান্তরসহ কয়েকটি দৈনিকে এসব খবর লেখা হয়েছে।    

যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যেই শুক্রবার রাতে আটলান্টায় ওয়েন্ডিজ নামে একটি ফাস্টফুড রেস্তোরাঁর সামনে রেশার্ড ব্রুকস নামের  আরেক কৃষ্ণাঙ্গকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে পশ্চিমা গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে দৈনিক যুগান্তরসহ বেশ কয়েকটি দৈনিকে খবর ছাপা হয়েছে। এরজেরে আটলান্টা সিটির পুলিশ প্রধান এরিকা শিল্ডস পদত্যাগ করেছেন। আর দৈনিক সমকাল লিখেছে, লন্ডনে উগ্র-ডানপন্থি, প্যারিসে বর্ণবাদবিরোধীদের সঙ্গে পুলিশে সংঘর্ষ হয়েছে। বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে স্থানীয় সময় শনিবার রাতে উগ্র-ডানপন্থি শ্বেতাঙ্গদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, শতাধিক মানুষকে এ সময় আটক করা হয়েছে। একই দিনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে পুলিশের। 

বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ বিশ্বের দেশে দেশে

যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশি নিপীড়নে জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের পর বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন দেশে। গত কয়েকদিন ধরেই লন্ডনে পুলিশি নিপীড়ন ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে। বিভিন্ন শহরে ঔপনিবেশিক আমলের দাস ব্যবসায়ী ও বর্ণবাদী নেতাদের ভাস্কর্য ভেঙেছেন বিক্ষোভকারীরা।

বাংলাদেশের করোনা আপডেট: বাংলাদেশে গত ২৪ ঘন্টায় আরও ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট মৃতের সংখ্যা১ হাজার১৭১ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮৭ হাজার৫২০ জন।দেশটির স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত  ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়েছে।যুগান্তরসহ সব দৈনিকে খবরটি এসেছে। 

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও প্রবীণ নেতা মোহাম্মদ নাসিমকে রাজধানী ঢাকার বনানী কবরস্থানে আজ সকালে দাফন করা হয়েছে। তাঁকে শ্রদ্ধা জনাতে গিয়েছিলেন সদ্য করোনামুক্ত হওয়া গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের  প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এদিকে বাংলাদেশের ধর্মপ্রতিমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ মারা গেছেন এবং মৃত্যুর পর টেস্টে দেখা গেছে তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন। তাছাড়া করোনায় স্বাস্থ্য সচিবের স্ত্রী মারা গেছেন। এসব খবর ইত্তেয়াকসহ প্রায় সব দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে। আর সাধারণ মানুষের মৃত্যুর খবর সেভাবে মিডিয়ায় না এলেও সংখ্যাটা কেবল বলা হচ্ছে।

করোনায় বিপন্ন মানবতা

করোনা নিয়ে দৈনিক মানবজমিনের একটি লেখার শিরোনাম: করোনা –বিপন্ন মানবতা। এতে লেখা হয়েছে, করোনা মানুষকে বিচ্ছিন্ন করার সর্বগ্রাসী এক ভীতি, আর এর বিপরীতে মানুষকে প্রমাণ করতে হচ্ছে মানবিক অনুভূতির অতলতা ও ব্যাপকতার সামনে করোনা নগণ্য। মানুষের উচ্চতম মূল্যবোধ দিয়েই করোনাকে করুণা করতে হবে। করোনা সন্দেহ হলেই মাকে ফেলে দিতে হবে, বাবাকে ভুলে যেতে হবে, চিরকালীন মানবিক সম্পর্ক অস্বীকার করতে হবে, সমাজের এ চিত্র বড় নিষ্ঠুর। নশ্বর মানুষের জন্য এসব কাজ জঘন্য ও চরম লজ্জার।

অন্যদিকে করোনায় মৃত্যু বরণ করলে লাশ পড়ে থাকবে অবহেলায় রোদে, বৃষ্টিতে। আর কবরস্থানে লাশ দাফন করতে বাধা সৃষ্টির মত ভয়ঙ্কর এবং ঘৃণ্য কর্মকান্ডও ঘটছে। কিন্তু সমাজ ও রাষ্ট্র এ সব ভয়ঙ্কর অমানবিক কর্মকাণ্ডকে প্রতিরোধ না করে নিরবে মেনে নিচ্ছে যা প্রশ্রয় দেয়ার নামান্তর। সমাজের চারিদিক আইনের অবিসংবাদিত কর্তৃত্ব, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিভাবকত্ব এবং রাষ্ট্রশক্তির প্রতিনিধি রুপে স্থানীয় সরকারসহ রাষ্ট্রীয় কোন প্রতিষ্ঠানই এসব ঘৃণ্য কাজ মোকাবেলা করার কোন উদ্যোগই নিচ্ছে না। এসব কাজ যে মানবতাকে পদদলিত করার ঘৃণ্য কৌশল এবং যারা এই নিষ্ঠুর ভয়ঙ্কর কাজে যুক্ত তারা যে আইনের কোন অনুকম্পা লাভ করতে পারবে না তা আমরা প্রকাশ করতে পারিনি।

এসব ঘৃণ্য কাজ যে শাস্তিযোগ্য অপরাধ, এ সব থেকে বিরত থাকার জন্য গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার করার উদ্যোগ আমরা সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় কোনভাবেই নেইনি। রাজনৈতিক কারণে সাঁড়াশি অভিযান চিরুনি অভিযান কত কিছু পরিচালিত হয় আর মানবতা ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নিতে আমাদের রাষ্ট্র অক্ষম। যেসব এলাকায় এসব জঘন্য কর্মকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে সেসব এলাকার বিবেকবান মানুষ, ছাত্র যুবক কেউ প্রতিরোধ গড়ে তুলছে না সঠিক নির্দেশনার অভাবে।

এ ধরণের নিষ্ঠুরতা যে মানবসমাজের অস্থিমজ্জাকে বিদ্ধ করে ফেলছে তা আমাদের সমাজ বা রাষ্ট্র কেউই অনুধাবন করতে পারছেনা। এ সকল কাজ যে আত্মতৃপ্তির কাজ নয় বরং অভিশাপের তা আমরা বলতে পারিনি। মাকে ফেলে যাবার সংবাদ, মাটির দেহ মাটি পাবে না এ সংবাদ ব্যাপক মানুষের মনে কি বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে বা কি পরিমাণ হতাশার জন্ম দেয় আমরা কেউ তা উপলব্ধি করিনি। মাকে যখন ফেলে আসে মার মনে মানুষের এই জগত নিয়ে কি চিন্তার উদয় হয়-কি নির্মম পীড়ণ মাকে পিষ্ট করে ফেলে তা আমরা কেউ জানিনা।

এত নিষ্ঠুর এত নির্মম এত অমানবিক কর্মকাণ্ডের সংবাদ যখন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে তখন বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্বের নাগরিকদের কী বিরুপ ধারণাই না জন্মায়। তখন মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্ম নেয়া বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের ভাবমূর্তির অবস্থান কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়? সরকারের অন্যায়ের অপশাসনের বিরুদ্ধে টু শব্দটি করলেই রাষ্ট্রের ভাবমূর্তির অজুহাতে গ্রেপ্তার মামলা হাতকড়া কারাগার নিশ্চিত হয়ে যায়। কথায় কথায় রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি রক্ষার নামে সরকার কতজন সাংবাদিক কতজন নাগরিককে এ যাবৎ গ্রেপ্তার করে কারাগারে নিক্ষেপ করেছে তা আমাদের জানা নেই। এখন যারা নিষ্ঠুরতার চূড়ান্ত প্রদর্শন করে সারাবিশ্বে বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে বর্বর অমানবিক নিষ্ঠুর রাষ্ট্র হিসাবে চিহ্নিত করে ভাবমূর্তিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে তখন সরকারের কাছে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি রক্ষার কোন তাগিদই সৃ্ষ্টি হলো না।

লাশ দাফন করতে না দেয়ার মত গর্হিত কাজ, পুলিশের লাথিতে কৃষকের মৃত্যু এবং বিনা বিচারে মানুষের ক্রসফায়ারে রাষ্ট্রের মানহানি হয় না। অথচ মত প্রকাশ করলেই সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়।

মা'কে ফেলে দেয়ার ক্ষেত্রে আমরা এখন রোল মডেল। অশ্রু বিসর্জন না করা এখন অধিকারে পরিণত হতে চলছে। মানুষ যদি ক্রমাগত অমানবিক নিষ্ঠুর সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে তাহলে সমাজ নরকের অন্ধকার গর্ভে নেমে যাবে। যে সমাজে সমবেদনা শুকিয়ে যাবে, মনুষ্যত্ব ধূর্ততায় রূপান্তরিত হবে সে সমাজ আর মানুষের থাকবে না। যে সমাজে বিবেকের জায়গা পশুত্ব দখল করে নেবে সে সমাজ নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনবে,, জীবনের পথ থেকে নিজেকে অনেক দূরবর্তী করে ফেলবে।মানুষ জীবনের যে অধিকার নিয়ে জন্মায় সে অধিকারকে অবজ্ঞা করা যায় না, অসম্মানও করা যায় না। আর মানুষ যদি একবার পশুত্বের স্তরে নামতে শুরু করে সে নামতেই থাকে। শেষ পর্যন্ত আর তার আচরণ হয়ে পড়ে জড়পিন্ডের মতো। এই জড়ত্বই ক্রমাগতভাবে সকল মানবিক সত্তাকে গ্রাস করে ফেলে।

করোনার সর্বগ্রাসী ভীতি আমাদের মানবতা যেন অবরুদ্ধ করে না ফেলে। করোনায় আক্রান্ত হওয়া কোন অপরাধ নয়। করোনার ভয়ে যেন মানবতা ভীত না হয়। সন্তান বাবার পাশে থাকবে, ভাই বোনের পাশে থাকবে মানুষ মানুষের পাশে থাকবে। মানুষ অবিচ্ছেদ্য, মানুষ বিপুল সম্মানের। সমাজের জন্য প্রয়োজন মানবিক পরিবেশ। উন্নয়নের আকাশচুম্বী বিলাসী ভাবনা পরিত্যাগ করে মানবিক উন্নয়নের সহজ সরল স্বাভাবিক পথ অনুসরণ করতে হবে। সমাজ যে ক্রমাগত অমানবিক ও অনৈতিক নিষ্ঠুর হয়ে উঠছে তার দায় রাষ্ট্রকেই বহন করতে হবে। অপশাসন অপরাজনীতি অপসংস্কৃতি আমাদের ভিতরে ক্রমাগত বিচ্ছিন্নতার প্রতিধ্বনি অনুরণিত করছে, আমাদের ভিতর ভেঙ্গে তছনছ করে দিচ্ছে।

করোনার ভয়ংকরতার সময় আমরা যেভাবে ত্রাণ আত্মসাৎ করেছি এ সংস্কৃতির চূড়ান্ত রূপ এবং প্রবণতা নিয়ে আমরা কোন উদ্বেগ প্রকাশ করার প্রয়োজন মনে করছি না । কারণ আমরা সবাই লজ্জাহীনতায় ঢাকা পড়ে গেছি। মানুষের উদ্বেগ এবং আতঙ্ক যে প্রশমিত করতে হয় তা আমরা জানিনা। আমরা অন্ধকারের চেয়েও গভীরতর অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছি কিন্তু কেউ দেখতে পারছিনা। আমরা একবারও ভাবছি না আমাদের জীবন প্রদীপ নিমিষেই নিভে যেতে পারে। এই মাটির নিচে আমার দেহ মিশে যাবে। ভালোবাসা মানবিকতা বিলিয়ে দিলে শেষ হয় না বেঁচে থাকা সার্থক হয়।আমরা একবারও ভাবি না যে এখানে রাজপ্রসাদও থাকবে না কুঁড়েঘরও থাকবে না, সব বিলীন হবে। জীবন খুব ক্ষণস্থায়ী কিন্তু নিরর্থক বা লক্ষ্যহারা নয়।

মানবিকতা চিরতরে লুপ্ত করে দিলে সেটা মানুষের জীবন হয় না। জীবনের একটা ন্যায্যতা থাকতে হয়। অমানবিকতা ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম মানুষকে ক্রমাগত নিঃস্বার্থ ও পবিত্র করে তুলে। আমরা একটা নিষ্ঠুর বর্বর গাড়ল সমাজের প্রতিনিধিত্ব করতে পারিনা। আমরা মানব ইতিহাসের আবর্জনা হতে চাই না।

বিশ্ব বিখ্যাত লেখক হাওয়ার্ড ফাস্ট বলেছেন পাথরও কাঁদে, যে বালির উপর দিয়ে আমরা হেঁটে যাই তাও যন্ত্রণায় কাতরায় কিন্তু আমরা কাঁদি না।

বাংলাদেশে প্রতিদিনের অর্থনীতি এবং দুর্নীতি বিষয়ক খবরে লেখা হয়েছে, সুবিধা আদায়ে সরকারের সঙ্গে শুধু দরকষাকষিই নয়, অর্থ পাচারেও শীর্ষে রয়েছেন গার্মেন্ট মালিকরা। ফলে ব্যাক টু ব্যাক এলসি বা ঋণপত্রের মাধ্যমে অর্থ পাচার থামছে না। পাচারের অর্থে উন্নতবিশ্বে ‘স্বর্গ’গড়ে তুলেছেন পোশাকশিল্প মালিকরা। দেশেও তাদের ক্ষমতার প্রদর্শনী চলছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, যারা দেশের উন্নয়নে শিল্প-কারখানা স্থাপন করছেন, তারা অর্থ পাচার করেননি। কিন্তু অনেক পোশাকশিল্প মালিক মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসার আড়ালে অর্থ পাচার করছেন। এভাবেই জনগণের দেওয়া করের ৩৬ শতাংশ পরিমাণ টাকাই পাচার হয়। বর্তমানের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ দেশ থেকে অর্থ পাচার ১৪ দশমিক ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছে গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি-জিএফআই। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি-বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পোশাকশিল্প মালিকদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না। 

ভারতের করোনা পরিস্থিতি (ফাইল ফটো)

এবার ভারতের করোনা পরিস্থিতিসহ কয়েকটি খবর তুলে ধরছি: ভারতে গত ২৪ ঘন্টায় ফের রেকর্ড ১২  হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মোট মৃত্যু ৯ হাজার ছাড়াল। দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকাসহ প্রায় সব দৈনিকের এ  খবরে লেখা হয়েছে,এর আগে একদিনে এত মানুষ আক্রান্ত হয়নি।  এ নিয়ে ভারতের মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ২০ হাজার ৯২২ জন। এত বেশি মানুষ আক্রান্ত হওয়ার কারণে নতুন করে কড়া লকডাউনের কথাও শোনা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

ফের দাম বাড়ল পেট্রল-ডিজেলের, এ নিয়ে গত আট দিনে লিটার প্রতি পেট্রলের দাম বেড়েছে ৪ টাকা ৫২ পয়সা এবং ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ৪ টাকা ৬৪ পয়সা। লকডাউন চলাকালীন ৮২ দিন বিরতির পর আজ নিয়ে পর পর আট দিন পেট্রল ও ডিজেলের দাম বাড়ল। দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত এ খবরে আরও লেখা হয়েছে ২০১৭ সালের পর এত বেশি দাম বাড়ল পেট্রল ও ডিজেলের। এদিকে এই দামের প্রভাব পড়ে বলতে গেলে প্রায় সবকিছুতে। তাতে মধ্যবিত্ত ও নিম্মবিত্তের ওপর কষ্টের বোঝাটা বাড়তে থাকে।

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৪