বাংলাদেশের ২১ জেলায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ, বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ
(last modified Sun, 30 Jan 2022 06:59:57 GMT )
জানুয়ারি ৩০, ২০২২ ১২:৫৯ Asia/Dhaka
  • বাংলাদেশের ২১ জেলায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ, বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ

বাংলাদেশের প্রায় ২১ জেলার উপর দিয়ে বইছে শৈত্যপ্রবাহ। এছাড়া আরও ৯ জেলার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যেই আছে। মেঘলা আকাশ, কুয়াশা, সঙ্গে হাড় কাঁপানো কনকনে শীতল বাতাস। সব মিলিয়ে জবুথবু জনজীবন।

শনিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া ও কুড়িগ্রামের রাজারহাটে। ডিসেম্বর-জানুয়ারি এই দুই মাসে ৪৬ দিনই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। এই সময়ে এখানে সর্বোচ্চ ১০-১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করেছে।

আবহাওয়াবিদগণ জানান, চলতি মৌসুমের তৃতীয় দফা শৈত্যপ্রবাহ এটি। শুক্রবার  গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলাসহ রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল। শনিবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কিশোরগঞ্জ, ফেনী, বরিশাল। এছাড়া শৈত্যপ্রবাহভুক্ত বিভাগে যুক্ত হয় ময়মনসিংহ ও সিলেট। এই পরিস্থিতি আরও নতুন নতুন এলাকায় বিস্তার লাভ করতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ (রবিবার) টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাঙ্গামাটি, ফেনী, মৌলভীবাজার, সীতাকুণ্ড উপজেলাসহ রংপুর এবং রাজশাহী বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং আরও অন্তত দুদিন এ পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে। এর পর তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে। তবে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাত হতে পারে। আর বৃষ্টি হলে ফের শীত বাড়তে পারে।

প্রাপ্ত খবরে জানা যায়, উত্তরের জেলাগুলিতে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের প্রভাবে তীব্র ঠান্ডায় বেড়েছে জনদুর্ভোগ। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। কনকনে শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে কাজে বের হতে পারছেন না খেটে খাওয়া মানুষ। প্রতিদিন হাসপাতালে বাড়ছে শীতজনিত রোগের আক্রান্ত রোগী। এদের মধ্যে শিশু ও বয়স্কের রোগীর সংখ্যা বেশি।

দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জানান, গত দুদিন ধরেই (শুক্র ও শনিবার) দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী ২-১ দিনের মধ্যে চলমান শৈত্যপ্রবাহ কিছুটা প্রশমিত হতে পারে এবং তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কিছুটা বাড়তে পারে। এদিকে অব্যাহত হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ জেলার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

যমুনা তীরবর্তী শেরপুর জেলায় শনিবার নাগাদ কুয়াশার ঘনত্ব অনেকটা কমে গেলেও হালকা বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ছে শিশির। সকালে সূর্যের দেখা মিললেও উত্তাপ নেই। বিকালের আগেই মিলিয়ে যাচ্ছে সূর্যের আলো। ঠাণ্ডা বাতাসে হাড় কাঁপানো শীতে জনজীবনে দুর্ভোগ চলছে। 

ফরিদপুর জেলার চরাঞ্চলে গত তিন দিনের শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বাড়ছে শীতজনিত ভাইরাস জ্বর, সর্দিজ্বর, ঠাণ্ডাকাশি ও হাঁপানি রোগের প্রাদুর্ভাব। সেই সঙ্গে শিশু ও বৃদ্ধদের মাঝে দেখা দিয়েছে কোল্ড ডায়েরিয়া রোগের ছড়াছড়ি। চরাঞ্চল, নদীর পাড়, বিভিন্ন বেড়িবাঁধ ও উন্মুক্ত মাঠে বসবাসকারীরা তীব্র শীতে কাবু হয়ে পড়েছেন। চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেন জানান, ‘গত কয়েক দিন ধরে অধিকাংশ রোগী শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছেন।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/৩০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।