বিভিন্ন জেলায় অভিযান: বিপুল পরিমান ভোজ্য তেল উদ্ধার, মজুতদারকে জরিমানা
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i107856-বিভিন্ন_জেলায়_অভিযান_বিপুল_পরিমান_ভোজ্য_তেল_উদ্ধার_মজুতদারকে_জরিমানা
সম্প্রতি দেশে ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধির তেলেসমাতি কারবারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে গুদামজাত করে রাখা বিপুল পরিমান ভোজ্য তেল উদ্ধার করা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে বেশ কয়েকজন মজুতদার-দোকানীকে ।
(last modified 2025-10-12T12:48:31+00:00 )
মে ১২, ২০২২ ১৮:২১ Asia/Dhaka
  • বিভিন্ন জেলায় অভিযান: বিপুল পরিমান ভোজ্য তেল উদ্ধার, মজুতদারকে জরিমানা

সম্প্রতি দেশে ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধির তেলেসমাতি কারবারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে গুদামজাত করে রাখা বিপুল পরিমান ভোজ্য তেল উদ্ধার করা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে বেশ কয়েকজন মজুতদার-দোকানীকে ।

নাটোরের বড়াইগ্রামের মৌখাড়া বাজারের স্থানীয় পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা মাজেদুল বারী নয়নের গুদামে অভিযান চালিয়ে ৩ হাজার লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করেছে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। পরে ওই তেল খোলাবাজারে বিক্রি করা হয়।

বুধবার রাত ৮টার দিকে এই অভিযান চালানো হয়। এ ঘটনায় দোকান মালিককে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এ প্রসংগে পৌরমেয়র নয়ন জানান, তিনি রাজনীতি ও পৌরসভার কাজে বেশি ব্যস্ত থাকায় ব্যবসার দিকে খেয়াল রাখতে পারেননি। দোকানের ম্যানেজার এগুলো দেখাশুনা করেন। এভাবে তেল মজুদ রাখা অবশ্যই অপ্রত্যাশিত।

এদিকে, সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা বাজারে সয়াবিন, পামওয়েল তেল মজুদ করে উচ্চ মূল্য বিক্রির অপরাধে দুটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ৩৭ হাজার লিটার তেল জব্দ এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমান করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সলঙ্গা বাজারের রাজলক্ষী বাণিজ্য ভান্ডার ও দুলাল চন্ড কুন্ডু স্টোরে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে রাজলক্ষী বানিজ্য ভান্ডার ২০২০০ লিটার ও দুলাল চন্ড কুন্ডু স্টোরে ১৬৮০০ লিটার তেল জব্দ করা হয়। পরে এসব মজুদকৃত তেল ন্যায্যমূল্যে খোলা বাজারে বিক্রি করা হয়। এসময় সঠিক কোন কাগজ পত্র দেখাতে না পারায় রাজলক্ষী বাণিজ্য ভান্ডারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

খুলনায় র‌্যাব-৬-এর ভ্রাম্যমাণ আদালত  আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা সোয়া ১টা পর্যন্ত  অভিযান চালিয়ে  তিন প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে। এ সময় দুই লাখ ২২ হাজার ৬২০ হাজার লিটার ভোজ্য তেল উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে সাহা ট্রেডার্সে ৩১ হাজার ৬০০ লিটার সয়াবিন ও ৬৩ হাজার ৩০০ লিটার পাম অয়েল মজুদ পাওয়া যায়। এর দায়ে প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী দিলিপ কুমার সাহাকে ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সোনালী এন্টারপ্রাইজে ২৬ হাজার ৭৮০ লিটার সয়াবিন ও ৩১ হাজার ৮০০ লিটার পাম অয়েল মজুদের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী প্রদীপ সাহাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এর আগে রণজিৎ বিশ্বাস অ্যান্ড সন্সে ৯ হাজার ৫৮০ লিটার সয়াবিন ও ৫৯ হাজার ৫৬০ লিটার পাম অয়েল মজুদের অভিযোগে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

র‌্যাব-৬-এর পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাাম জানান, কৃষি বিপণন মজুদ আইন অনুযায়ী ৩০ মেট্রিক টনের বেশি তেল মজুদ করার সুযোগ নেই। গোডাউনগুলো অতিরিক্ত তেলা পাওয়া গেছে। তাদের এ বিষয়ে সতর্ক ও জরিমানা করা হয়েছে। জনস্বার্থে র‌্যাবের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দেবাশীষ বসাক বলেন, জনস্বার্থে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। কেউ যাতে ভোজ্য তেল মজুদ করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।

এদিকে, ব্যাবসায়িদের শীর্ষ সংগঠন   এফবিসিসিআই’ এর  সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন জানিয়েছে, খোলা তেল বিক্রি বন্ধ করলে সয়াবিন তেলের দাম ২০ শতাংশ কমে আসবে ।  গতকাল বিকালে ভোজ্যতেলের আমদানি, মজুদ, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা শীর্ষক এক সভায় এসব কথা বলেন এফবিসিসিআই’ এর  সভাপতি । অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর প্রতিনিধি এবং ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেছেন, বিক্রির স্বার্থে কিছু পণ্য তো ব্যবসায়ীদের মজুদ রাখতে হবে। আবার গুদামে থাকলে বাজারে সরবরাহ করতে হবে। অথচ অনেকে বলছেন পণ্য নেই। পরে সরকারি কর্মকর্তারা গুদাম থেকে পণ্য বের করছেন। এতে ব্যবসায়ীদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

এ ব্যবসায়ী নেতা আরো জানান,  ভোজ্যতেলের দাম, সাপ্লাই এবং চাহিদা বিবেচনায় দীর্ঘমেয়াদি কোনো পরিকল্পনা নেই। অন্যদিকে সরকার কিছুদিন আগে টিসিবির মাধ্যমে দুই কোটি লিটার তেল কিনেছে। এর জন্য আগে থেকে কোনো প্রস্তুতি ছিল না, হঠাৎ করেই নেয়া হলো। এতে সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়েছে।

এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, তেল লুকানোর পথ বন্ধ করার জন্য ১৫ দিন পরপর দাম সমন্বয় করা দরকার। এতে দাম বাড়লে বাড়বে, কমলে কমবে। অসাধু ১ শতাংশ ব্যবসায়ীর জন্য ৯৯ শতাংশ ব্যবসায়ীর দুর্নাম হচ্ছে। আবার ব্যবসায়ীদের বাইরেও অনেকে পণ্য মজুদ করে। এতে সংকট তীব্র হয়। এদের খুঁজে বের করতে হবে।#।

পার্সটুডে/আব্দুর রহমান খান/রেজওয়ান হোসেন/১২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।