নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ
১৩ দফা দাবিতে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট’; রাজনৈতিক দায়িত্ববোধের প্রকাশ- মন্তব্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর
বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, গণতান্ত্রিক শিক্ষাঙ্গন, শিক্ষার বাণিজ্যকরণ ও সংকোচননীতি বাতিল, ছাত্র সংসদ নির্বাচন, বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলসহ ১৩ দফা দাবিতে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট’ নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে।
গতকাল (বুধবার) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে এ সংগঠনের ঘোষণা দেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী।
আটটি ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সংগঠনগুলো অন্যান্য হলো—সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (বাসদ), বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মাকর্সবাদী), বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলন, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল।
জোটের প্রথম কর্মসূচি হিসেবে ১৩ দফা দাবিতে আগামী ১৮ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় ঢাবির অপরাজেয় বাংলার সামনে সমাবেশ করবে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট।
নতুন জোট গঠনের কারণ জানতে চাইলে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মিতু সরকার রেডিও তেহরানকে বলেন, বাংলাদেশের উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে ছাত্র সমাজসহ আপামর জনগণ মুক্তি চাইছে। দেশের যেকোনো দুঃসময়ে এদেশের ছাত্র সমাজ কখনো নিশ্চুপ থাকেনি। বর্তমানে দুঃশাসন চলছে দাবি করে তিনি বলেন, দেশের যেকোন দুর্দিনে অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলা সময়ের কর্তব্য মনে করেছে ছাত্র সংগঠনগুলো। আর সেই দায়িত্বের জায়গা থেকেই এ জোট গঠন।
মিতু সরকার বলেন, এই জোট শিক্ষার গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা এবং শিক্ষার্থীদের ন্যায়সঙ্গত দাবির প্রশ্নে আন্দোলন গড়ে তুলবে। পাশাপাশি আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে পাহাড় কিংবা সমতলে জনজীবনের সমস্যা সংকট নিরসনে এবং জাতীয় সম্পদ রক্ষায় আন্দোলন গড়ে তুলবে। শ্রমিক, কৃষক, মেহনতি ও নিপীড়িত জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে ভূমিকা পালনের কথাও জানান এ ছাত্র নেতা।

দেশের রাজনৈতিক ক্রমবর্ধমান উষ্ণায়নের সময়ে ছাত্র সংগঠনগুলোর এমন জোট গঠনকে কিভাবে দেখছেন জানতে চাইলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার রেডিও তেহরানকে বলেন, দেশের রাজনীতির প্রতি নতুন প্রজন্মের আগ্রহ খুবই কম। আর প্রগতিশীল উদার গণতান্ত্রিক নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন রাজনীতির ভাবনা থেকে তো অনেক দূরে শিক্ষার্থীদের অবস্থান। এমন সংকটময় মুহূর্তে আট ছাত্র সংগঠনের এই জোট নিশ্চয় ভালো উদ্যোগের সম্ভাবনাকে হাতছানি দেয়। তবে এই উদ্যোগ জাতীয় রাজনীতিতে আসলে কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের। #
পার্সটুডে/নিলয় রহমান/আশরাফুর রহমান/১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।