২০২৯ সাল যুদ্ধ নাকি শান্তির বছর?
-
ইউরোপের কৌশলগত হিসাবে যুদ্ধের প্রত্যাবর্তন
পার্সটুডে-ন্যাটো গোয়েন্দা মূল্যায়ন এবং ইউরোপীয় নিরাপত্তায় মার্কিন ভূমিকা কমে যাওয়ায় ২০২৯ সালকে জার্মানি এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতিরক্ষা হিসাব-নিকাশ একটি সংবেদনশীল বিন্দুতে পরিণত করেছে।
উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা (ন্যাটো) থেকে সাম্প্রতিক গোয়েন্দা সতর্কতা প্রমাণ করে, রাশিয়া সম্ভবত এই দশকের শেষ নাগাদ ন্যাটো সদস্যদের উপর আক্রমণ করার ক্ষমতা অর্জন করতে পারে; যদিও এই হুমকি কতটা বাস্তব তা এখনও স্পষ্ট নয়।
যুগপত দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এই পরিস্থিতিকে গুরুতর করে তোলে: ইউক্রেন যুদ্ধের ছায়ায় রাশিয়ার সামরিক শক্তি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাওয়া এবং ইউরোপীয় নিরাপত্তায় মার্কিন ভূমিকা ধীরে ধীরে হ্রাস পাওয়া। এই সমন্বয়টি বিশেষ করে জার্মানির জন্য একটি নজিরবিহীন শঙ্কায় পরিণত হয়েছে। পার্সটুডে আরও জানায় এই উদ্বেগের মূলে রয়েছে ২০২৩ সালে ন্যাটোর সামরিক প্রতিবেদন; একটি প্রতিবেদন গোয়েন্দা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল যে রাশিয়া ৫ বছরের মধ্যে ১.৫ মিলিয়ন লোকের একটি সেনাবাহিনী সংগঠিত করতে সক্ষম হবে। রাজনৈতিক কারণে ২০২৮ সালের মূল তারিখ পরে "২০২৯" এবং তারপর "দশকের শেষ" করা হয়, এমন একটি পরিবর্তন প্রমাণ করে যে এই তারিখটি তথ্য নিশ্চিতকরণের চেয়ে জনমত পরিচালনা এবং ইউরোপে প্রতিরক্ষামূলক প্রণোদনা তৈরির একটি হাতিয়ার।
অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেওয়ার ফলে উদ্বেগ আরও তীব্র হয়েছে। জার্মান কমান্ডাররা পেন্টাগনের সাথে সরাসরি যোগাযোগ হ্রাসের কথা বলছেন এবং জার্মানির কাছে ন্যাটো সামরিক নেতৃত্ব হস্তান্তরের ব্যাপারে ওয়াশিংটনের সাম্প্রতিক প্রস্তাবকে আস্থার চিহ্নের চেয়ে আমেরিকার দিক পরিবর্তনের সতর্কতা হিসেবেই বেশি দেখা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ইউরোপের ব্যাপারে মৌলিক যে প্রশ্নটি উত্থাপিত হয় তা হলো: আমেরিকা যদি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ন্যাটোর সাথে না থাকে তাহলে কি জোট এখনও কার্যকর থাকবে?
জার্মানির সামরিক বাজেট জিডিপির ৩.৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা এবং তার সেনাবাহিনীকে ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী সেনাবাহিনীতে রূপান্তর করার চেষ্টা করা কেবল একটি সেনাবাহিনী পুনর্গঠন নয় বরং একটি নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুনর্গঠন করা। ইতোমধ্যে মূল প্রশ্নটি রয়েই গেছে: রাশিয়া কি হামলার পরিকল্পনা করছে? সাক্ষ্য-প্রমাণ থেকে বোঝা যায় হুমকি দেওয়ার ক্ষমতা থাকা স্বয়ং ইউরোপকে চাপ দেওয়ার এবং ন্যাটোর সংহতি পরীক্ষা করার একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার।
২০২৯ সাল তাহলে অবশ্যম্ভাবী যুদ্ধ কিংবা শান্তির বছর হচ্ছে না; তবে অবশ্যই এমন একটি বছর হবে যা ইউরোপকে বাধ্য করবে নিরাপত্তাকে একটি ডিফল্ট ও প্রয়োজনীয় প্রকল্প হিসেবে বিবেচনা করতে।#
পার্সটুডে/এনএম/৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।