বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার চিত্র
দুর্ঘটনায় মৃত্যু বেশি ঢাকা বিভাগে; সড়কে নিহত বাড়াচ্ছে মোটরসাইকেল
বাংলাদেশে দুর্ঘটনায় বেশি মৃত্যু ঘটছে ঢাকা বিভাগে। আর মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বাড়ছে মৃত্যুহার। আজ শনিবার শনিবার রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের পাঠানো ‘এপ্রিল মাসের দুর্ঘটনা প্রতিবেদন’ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এপ্রিল মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৩১টি। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪৯৭ জন এবং আহত হয়েছেন ৭৭৮ জন। নিহতের মধ্যে ৪৯ জন নারী এবং ৮৮ জন শিশু ছিলেন।
মোট দুর্ঘটনার মধ্যে ১৯১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২০১ জন, যা মোট নিহতের ৪০.৪৪ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪৪.৩১ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১০৯ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২১.৯৩ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৭১ জন, অর্থাৎ ১৪.২৮ শতাংশ।
একই সময়ে ৯টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত ও ৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ১৬টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত এবং ৬৭ জন আহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়—মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ২০১ জন, বাস যাত্রী ১৪ জন, ট্রাক-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি আরোহী ৩১ জন, প্রাইভেটকার আরোহী ৫ জন, থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা) ৯৯ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-চান্দের গাড়ি-মাহিন্দ্র-টমটম-লাটাহাম্বা) ১৮ জন এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশা ভ্যান আরোহী ২০ জন নিহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১২২টি দুর্ঘটনায় ১৩৪ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম সিলেট বিভাগে। ২১টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত হয়েছেন। একক জেলা হিসেবে চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি ২১টি দুর্ঘটনায় ৩৩ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম রাঙ্গামাটি ও বরগুনা জেলায়। এই দুইটি জেলায় সামান্য মাত্রার চারটি দুর্ঘটনায় কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।
রাজধানী ঢাকায় ২৩টি দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত ও ৩৪ জন আহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি; চালকদের মানসিকতা আর অদক্ষতাকে দায়ী করা হয়েছে। সংস্থাটির সুপারিশে বলা হয়েছে— দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে; চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা সার্ভিস রোড তৈরি কো ও পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করারও পরামর্শ দেয় সংগঠনটি।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্টনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে বলে জানানো হয়েছে।#
পার্সটুডে/বাদশাহ রহমান/আশরাফুর রহমান/১৩