ভোটের জোট ও মনোনয়ন: সিদ্ধান্তহীনতার দোলাচালে কারো দোটানার অভিনয়
বাংলাদেশের গেলো তিনটি জাতীয় নির্বাচনের মতো আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও জোটবদ্ধ হয়ে ভোটে অংশগ্রহন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।এরই অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ ১০টি রাজনৈতিক দল। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ছাড়া আরও ছয়টি দল ১৪-দলীয় জোটের শরিক হিসেবে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক ‘নৌকা’ নিয়ে নির্বাচন করবে বলে ইসিকে জানিয়েছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ইচ্ছুক একাধিক নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল মিলে নির্বাচনী জোট গঠন করে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করতে পারে। জোটভুক্ত দলগুলো জোটের শরিক যেকোনো দলের প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে।
ইসির সূত্রে জানায়, যে দলগুলো জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করার বিষয়ে ইসিকে জানিয়েছে, সেগুলো হলো আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি (জেপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, তরীকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, জাতীয় পার্টি (জাপা), বিকল্পধারা বাংলাদেশ ও তৃণমূল বিএনপি। এসব রাজনৈতিক দলগুলোর বেশিরভাগেরই দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়েছে, কারো বা শেষের পথে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রি এক উৎসবে পরিণত হয়েছে দলটির কেন্দ্রীয় অফিসসহ দেশজুড়ে বিভিন্ন বিভাগ, জেলা ও শাখা অফিসেও। দলটির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, ২৩ নভেম্বর বসবে মনোনয়ন বোর্ডের সভা। এর মাধ্যমে চুড়ান্ত হবে তাদের প্রার্থী।
বাংলাদেশে এবারের জাতীয় রাজনীতির খুব আলোচিত নতুন দল তৃণমূল বিএনপিতেও চলছে মনোনয়ন ফরম বিক্রি। দলটির চেয়ারপারসন শমশের মবিন চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনে না এলে ক্ষতি নেই, কিন্তু নির্বাচনে অংশ নিলে আয়োজনের গ্রহনযোগ্যতা বাড়বে। ওয়াকার্স পার্টি সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, আসন্ন নির্বাচন নিয়ে সব ধরনের প্রস্তুতিই ইতোমধ্যে শেষ করছে তাদের দল। মনোয়ন বিক্রি পরে শুরু করলেও নির্বাচনে অংশ নেয়ার দৌড়ে পিছিয়ে নেই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। তাদের জোটবদ্ধ নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা জানালেন দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার।
তবে বহুল রাজনীতির মাঠের আলোচিত দল ক্ষমতাসীন সরকারের গেল সংসদের অংশীদার এবং সংসদের বিরোধীদল জাতিয় পার্টি তাদের মনোনয় ফরম বিক্রি শুরু করেছে। জোটবদ্ধ নির্বাচনে নৌকা ও লাঙ্গল প্রতিকে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিলেও নির্বাচনে প্রকৃতপক্ষে অংশগ্রহণের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত এখনো জানায় নি। তবে প্রস্তুতি সবটাই আছে বলেই জানালেন, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। দেশজুড়ে নির্বাচনী মনোনয়ন বিক্রির উৎসবে ভিন্ন চিত্র বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর অফিস কিংবা নেতৃবৃন্দের মাঝে। তাদের অনেক কেন্দ্রীয় নেতাই কারাগারে। আর যারাও বা বাইরে আছেন, তাদের আবার অনেকেই আত্মগোপনে। এরমধ্যেই চলছে তাদের হরতাল অবরোধের মত রাজনৈতিক প্রতিবাদ কর্মসূচি। #
পার্সটুডে/বাদশা রহমান/এমবিএ/২১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।