সুন্দরবনের সংকটাপন্ন এলাকায় বায়ু দূষণকারী ৫ কারখানা: সংসদে পরিবেশমন্ত্রী
-
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়কমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন
বাংলাদেশে সুন্দরবন সংরক্ষিত বনাঞ্চলের বাইরে ১০ কিলোমিটার বিস্তৃত এলাকাকে সরকার প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) হিসেবে ঘোষণা করলেও ৬ কিলোমিটারের মধ্যেই দেয়া হয়েছে শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণের অনুমতি। একই সঙ্গে সংকটাপন্ন এলাকায় পরিবেশ দূষণকারী শিল্প কারখানা স্থাপনে পরিবেশগত ছাড়পত্র না দেবার নীতি থাকলেও পাঁচটি বায়ু দূষণকারী সিমেন্ট কারখানাকে পরিবেশগত ছাড়পত্রও দেয়া হয়েছে।
শনিবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে দুই সংসদ সদস্যের টেবিলে উত্থাপিত পৃথক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়কমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য লুৎফুন নেসা খানের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সুন্দরবনের নিকটতম স্থানসমূহে বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলার মোংলাবন্দর শিল্প এলাকায় পাঁচটি বায়ু দূষণকারী সিমেন্ট কারখানাকে পরিবেশগত ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানসমূহ হলো- মেঘনা সিমেন্ট মিলস লিমিটেড, বসুন্ধরা সিমেন্ট মিলস লিমিটেড, মোংলা সিমেন্ট মিলস লিমিটেড, দুবাই-বাংলা সিমেন্ট মিলস লিমিটেড এবং হোলসিম (বাংলাদেশ) লিমিটেড।’
মন্ত্রী সংসদকে জানান, ‘প্রতিষ্ঠানগুলো সুন্দরবন রিজার্ভ ফরেস্ট থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এ প্রতিষ্ঠানের কারণে যাতে পরিবেশ দূষণ না হয় সেজন্য পরিবেশ অধিদফতর এসব শিল্পকারখানা নিয়মিত পরিবীক্ষণ করছে এবং উদ্যোক্তদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছে। সুন্দরবনের নিকটতম স্থানে এলপিজি প্ল্যান্টসহ বেশ কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠান থাকলেও সেগুলো দূষণকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান নয়।’

এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘সুন্দরবন প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় পরিবেশ দূষণকারী শিল্প কারখানা স্থাপনে পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদান করা হয় না। সুন্দরবন ইসিএ এলাকায় অবস্থিত বিদ্যমান শিল্প কারখানাগুলোতে মালিকরা পরিবেশ ও প্রতিবেশ দূষণের প্রয়োজনীয় প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।’
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো গত সপ্তাহেই বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভৃক্ত সুন্দরবনকে 'সংকটাপন্ন' তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাব করছে এবং এ অঞ্চলে রামপাল কয়লা বিদ্যুত কেন্দ্রসহ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণে বিরত থাকার জন্য সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে। দেশের পরিবেশবাদী সংগঠন, সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলা বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার থাকলেও সরকার এসব ক্ষতিকর পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকছে না। এ নিয়ে আগামী সপ্তাহে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে এক বৈঠক বসছে। #
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/২৯