প্রিয়া সাহা সাময়িক বহিষ্কার, তথ্য বিকৃতির অভিযোগ ড. বারকাতের
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i72180-প্রিয়া_সাহা_সাময়িক_বহিষ্কার_তথ্য_বিকৃতির_অভিযোগ_ড._বারকাতের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অসত্য অভিযোগ দেয়া প্রিয়া সাহাকে (প্রিয়া বালা বিশ্বাস) বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
(last modified 2025-11-28T10:09:50+00:00 )
জুলাই ২২, ২০১৯ ২৩:৫০ Asia/Dhaka
  • প্রিয়া সাহা
    প্রিয়া সাহা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অসত্য অভিযোগ দেয়া প্রিয়া সাহাকে (প্রিয়া বালা বিশ্বাস) বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

আজ (সোমবার) পরিষদের স্থায়ী কমিটির এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সংগঠনের কার্যালয়ে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন ঐক্য পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক।

পরে সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঐক্য পরিষদের অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহাকে ‘শৃঙ্খলাবিরোধী কাজের জন্য’ সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে সব সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে।

ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের মিথ্যা অভিযোগ করেন প্রিয়া সাহা

এদিকে, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ড. আবুল বারকাত অভিযোগ করেছেন, প্রিয়া সাহা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ পত্র-পত্রিকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দেশত্যাগ ও সংশ্নিষ্ট বিষয়ে তার নাম জড়িয়ে কিছু তথ্য-উপাত্ত বিকৃতভাবে উপস্থাপন করেছেন। বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহা  বলেছেন, ‘বাংলাদেশ থেকে ৩ কোটি ৭০ লাখ সংখ্যালঘু নিখোঁজ রয়েছেন।’ এরপর ভিডিও সাক্ষাৎকারে তিনি আমার নাম উল্লেখ করে বলেছেন, উল্লেখিত পরিসংখ্যান আমার গবেষণাউদ্ভূত তথ্য-উপাত্তের সঙ্গে মিলে যায় (অথবা একই)। তিনি এও বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন ৬৩২ জন লোক হারিয়ে যাচ্ছে। ২০১১ সালে স্যারের সঙ্গে সরাসরি কাজ করেছিলাম, যার কারণে বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবহিত।’

ড. আবুল বারকাত বলেন, ‘প্রিয়া সাহার উপরোক্ত বক্তব্যের সঙ্গে আমার গবেষণার তথ্য-উপাত্তের কোনো মিল নেই। আমার গবেষণায় যা আছে, তা হলো- আমার হিসাবে প্রায় ৫ দশকে ১৯৬৪ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত  আনুমানিক ১ কোটি ১৩ লাখ হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ নিরুদিষ্ট হয়েছেন। (উৎস: আবুল বারকাত বাংলাদেশে কৃষি ভূমি জলা সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি-২০১৬)। অর্থাৎ, আমি কোথাও ৩ কোটি ৩৭ লাখ সংখ্যালঘু নিখোঁজ রয়েছেন বলিনি। উপরন্তু তিনি কোথাও বললেন না, আমার গবেষণা তথ্যটির সময়কাল ৫০ বছর (১৯৬৪ থেকে ২০১৩ সাল)।’

ড. আবুল বারকাত

অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত আরও বলেন, ‘প্রিয়া সাহা কখনও আমার সহ-গবেষক, গবেষণা সহযোগী অথবা গবেষণা সহকারী ছিলেন না। ২০১১ সালে সরকারি আদমশুমারি তথ্যের  ভিত্তিতে ১৯০১-২০০১ সাল পর্যন্ত  ধর্মগোষ্ঠীর আনুপাতিক হার উল্লেখ করেছি মাত্র। একজন সমাজ গবেষক হিসেবে আমি নিশ্চিত হতে চাই যে, প্রিয়া সাহা আমার নাম উল্লেখ করে যেসব বিভ্রান্তিমূলক ও নীতি গর্হিত  বক্তব্য দিয়েছেন তিনি অতি দ্রুত তা প্রত্যাহার করে নেবেন।’

প্রিয়া সাহা সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন শেষে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পান। বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান নিখোঁজ হয়ে গেছেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কাছে এ সময় তিনি অভিযোগ করেন। তার এ অভিযোগের বিষয়টি প্রচার হলে দেশব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।# 

 

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২২