মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার রক্ষার নিশ্চয়তা দিতে হবে: বাংলাদেশ
রাখাইন থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য মিয়ানমারকেই প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ সরকার।
শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে চলতি ৭৪তম সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটির আওতায় মানবাধিকার ইস্যুতে দেয়া বক্তব্যে জাতীয় সংসদে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মজিদ খান এ মন্তব্য করেন।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনের মূল কমিটিসমূহের চলমান বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে বর্তমানে নিউইয়র্ক অবস্থান করছেন আব্দুল মজিদ খান।
সেখানে তিনি বলেন, একজন রোহিঙ্গা সদস্যও মিয়ানমারে ফিরে যেতে রাজি নন যতক্ষণ না তারা নিশ্চিত হচ্ছেন যে মিয়ানমার তাদের নিরাপত্তা, জীবিকা, ন্যায়বিচার ও অধিকার রক্ষার বিষয়গুলোর নিশ্চয়তা দেবে। তাই টেকসই প্রত্যাবাসন শুরু করতে হলে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার রক্ষার নিশ্চয়তা দিতে হবে, প্রত্যাবাসনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে তাদের আস্থা পুনরুজ্জীবিত করতে হবে।
মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর নৃশংসতার শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে নিজ ভূমি থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ সরকার যে মানবিকতা ও উদারতা দেখিয়েছে, তা উল্লেখ করেন আব্দুল মজিদ খান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ মানবাধিকার রক্ষা ইস্যুতে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে, সেগুলোও সভাকে অবহিত করেন তিনি।
আব্দুল মজিদ খান বলেন, ২০১৮ সালের মে মাস পর্যন্ত তিনবার ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ও প্রতিবেদন উপস্থাপন, জেনেভাস্থ নিপীড়ন বিরোধী কমিটিতে (Committee Against Torture) দেশ পর্যায়ের প্রতিবেদন উপস্থাপন ও ২০১৭ সালে হিউম্যান রাইটস কমিটি’র ১১৯তম সেশনে বাংলাদেশে বেসামরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের চলমান অবস্থার ওপর প্রতিবেদন উপস্থাপন এসব পদক্ষেপের মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
এই সংসদ সদস্য বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার বিভাগ ও স্বাধীন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যেকোনো মানবাধিকার ইস্যু বিবেচনায় নিতে সবসময় প্রস্তুত। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও বিধিবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে যখনই জাতীয় কোনো আইন বা বিধির পুনঃমূল্যায়ন ও হালনাগাদ করা প্রয়োজন, দেশের সংসদ তখনই সেটি করছে।
বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার সুরক্ষা ও অগ্রায়নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের অব্যাহতভাবে কাজ করে যাওয়ার যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে, তা পুনর্ব্যক্ত করেন জাতীয় সংসদের এই সংসদ সদস্য।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ বর্তমানে মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।