মেয়াদোত্তীর্ণ ও নকল ওষুধ বিক্রয়
বাংলাদেশে ৩৪ কোটি টাকার ওষুধ ধ্বংস, পৌনে দুই কোটি টাকা জরিমানা আদায়
বাংলাদেশের বাজারে মেয়াদোত্তীর্ণ ও নকল ওষুধ বিক্রয় ও মজুদ রাখার দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত ১ কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে। একইসঙ্গে ৩৪ কোটি ৭ লাখ ৬৯ হাজার ১৪৩ কোটি টাকার মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ধ্বংস করা হয়েছে।
গত ১ আগস্ট থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ‘মেয়াদোত্তীর্ণ, নকল ও ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর।
আজ (মঙ্গলবার) বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চে একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর।
এর আগে একটি রিট আবেদনের শুনানিতে এক আদেশে সারাদেশে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সংরক্ষণ ও বিক্রি বন্ধ এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ প্রত্যাহার বা ধ্বংস করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর আজ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। আদালত এ ব্যাপারে পরবর্তী আদেশের জন্য ১২ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন।
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরকে উদ্দেশ্য করে আদালত বলেন, ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের ক্ষেত্রে ফার্মেসিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাজা পর্যাপ্ত নয়। অল্প সাজায় সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। একই ফার্মেসিতে একাধিকবার মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া গেলে নিয়মিত মামলা করবেন।
আদালত আরও বলেছে, ভেজাল ওষুধের সাথে জড়িতদের যাবজ্জীবন বা মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত।
আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেছে, কমিশন নিয়ে প্রেসক্রিপশনে বিভিন্ন কোম্পানির ওষধু লেখার কারণে ডাক্তারি পেশা নষ্ট হচ্ছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এবিএম আলতাফ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামরুজ্জামান কচি। বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, এরইমধ্যে যাদের জেল-জরিমানা করা হয়েছে, তারা আবার পুনরায় যদি একই ধরনের অপরাধে অভিযুক্ত হন, তখন তাদের বিরুদ্ধে স্পেশাল পাওয়ারস অ্যাক্টে মামলা দায়েরের জন্য আদালত মৌখিকভাবে আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। যার সাজা যাবজ্জীবন এমনকি মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে। ফলে যারা এ কাজের সঙ্গে জড়িত থাকবেন, তাদের আমরা হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, যেন এ ধরনের মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সংরক্ষণ করবেন না, বিক্রি করবেন না এবং ভেজাল ওষুধ বিক্রির চেষ্টা করবেন না। প্রয়োজনে সরকার আদালতের নির্দেশ মোতাবেক আইনগত দায়িত্ব পালন করবে।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।