বাংলাদেশে বিভিন্ন পেশা এবং উদোক্তাদের ওপর করোনার প্রভাব: সরকারি থোক বরাদ্ধের দাবি
(last modified Fri, 03 Apr 2020 12:18:28 GMT )
এপ্রিল ০৩, ২০২০ ১৮:১৮ Asia/Dhaka
  • বাংলাদেশে বিভিন্ন পেশা এবং উদোক্তাদের ওপর করোনার প্রভাব: সরকারি থোক বরাদ্ধের দাবি

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারনে বাংলাদেশেও স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মানুষ ঘরে থাকছে স্বেচ্ছা কোয়ারেনটাইনে। খাদ্য, ওষুধপত্র ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র ছাড়া বাকী সকল দোকান-পাট বন্ধ রয়েছে।

করোনা দুর্যোগের কবলে পড়ে এবার বাংলাদেশের প্রধান কয়েকটি উৎসব যেমন ফাল্গুনের বসন্তবরণ, মার্চের স্বাধীনতা দিবস এবং এপ্রিলের পহেলা বৈশাখ বাতিল হয়ে গেছে। এমন দু:সময়ের প্রেক্ষাপটে আসন্ন ঈদুল ফিতরের উৎসব নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বাংলাদেশে এসব উৎসবের সাথে জড়িয়ে আছে নতুন পোশাকের চাহিদা। আধুনিক নারীদের চাহিদা বাহারী রঙিন নানা ডিজাইনের তাঁতের শাড়ী, পুরুষদের নক্সাকরা পাঞ্জাবী-ফতুয়া,কিশেরী-যুবকতীদের জন্য বাটিক বা কারুকাজ করা ত্রি-পিস, ছেলেদের স্ক্রীন প্রিন্টের টি শার্ট আর গেরস্থঘরের লুঙ্গি বা পাড়ের শাড়ী এসব  না হলে উৎসবের আমেজ পূরণ হয় না।

কিন্তু  করোনার প্রভাবে এবছর এসবের ল্যাটা চুকে গেছে। ব্যবসা লাটে উঠেছে। মরতে বসেছে লাখো কারিগর, তাঁতী, আর ঘরে থেকে নকসা-বুটিকের কাজে যুক্ত  কয়েক লক্ষ ক্ষুদ্র উপার্জনকারী অসহায় নারী।

ফ্যাশন এন্টারপ্রেনর এসোসিয়েশন আব বাংলাদেশের হিসেব মতে, এসব দেশীয়  বস্ত্র বয়ন ও পোশাক তৈরিতে কমপক্ষে পাঁচ লক্ষ মানুষ জড়িত। আর যারা পোশাক ডিজাইন, সেলাই, নক্সাকরা বা বুটিকের কাজ করেন তাদের ৮০ ভাগই হচ্ছে নারী। করোনার কারনে এতগুলো মানুষের জীবন-জীবিকা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে।

ফ্যাশন এন্টারপ্রেনর এসোসিয়েশন  অব বাংলাদেশের সভাপতি এবং ফ্যাসন হাউস  অঞ্জনস’ এর স্বত্বাধিকারী মো: শাহীন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেছেন, বৈশাখে  দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলি দু’হাজার কোটি টাকার পন্য বিক্রয় করে থাকে। এ বছর করোনার কারনে তাদের পুরো লগ্নিটাই আটকে গেছে। 

এ প্রসঙ্গে দেশজ বস্ত্র ও তাঁতের  তৈরি শাড়ী ও মেয়েদের ফ্যাশন পরিধেয় বিক্রির আউটলেট প্রবর্তনা’ র  নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার রেডিও তেহরানকে জানান, বাংলাদেশে উৎসব কেন্দ্রিক পোশাকের বাজারে যে বিপর্যয় এসেছে তাতে বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দেশের উৎপাদক শ্রেণী এবং বিক্রেতাগণ।  বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি সামাল দেয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হবেনা বলেই তিনি আশঙ্কা করছেন।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের ফ্যাশন হাউস, হ্যান্ডলুম ফ্রাব্রিকস ও পোশাক উৎপাদনকারী  এবং  রপ্তানীদের সংগঠন বাংলাক্রাফট এর সদ্য বিদায়ী সভাপতি এবং নিপুন ফ্যাশন হাউসের স্বত্বাধিকারী আরিফুর রহমান মনে করেন, এ খাতের সাথে যুক্ত উদ্যাক্তা ও কয়েক লক্ষ শ্রমিককে রক্ষা করতে তিনমাসের জন্য অন্তত: ১৫০০ কোটি টাকার থোক বরাদ্ধ জরুরি দরকার।

বস্ত্রখাতের উদ্যাক্তারা জানিয়েছেন, করোনার প্রভাবে বৈশাখের উৎসব তো বন্ধ হয়েই গেছে;  এরপর  আসন্ন  ঈদ-উল ফিতরের পোশাকের বাজারও  অনিশ্চিত। এর ফলে বড় আকারের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে বস্ত্র শিল্পের অনেক উদ্যোক্তাই আর টিকে থাকতে পারবে না। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশন পাঁচ দফা দাবী পেশ করে ঋণ ও  শুল্ক সুবিধা  এবং  বিদ্যুত ও গ্যাস বিলের ক্ষেত্রে রেয়াত দাবী করেছে।#

পার্সটুডে/বাবুল আখতার/আবদুর রহমান খান/৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ