বাংলাদেশে ধর্ষণের বিরুদ্ধে বিভিন্নমহলের প্রতিবাদ: এর দায় কেউ এড়াতে পারবে না-কাদের
বাংলাদেশে গণধর্ষণ ও ধর্ষণ করে হত্যার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে বিভিন্নমহল। আজকেও রাজধানীর শাহবাগে শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে নাগরিক সমাজের প্রতিবাদ সমাবেশ এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রাজধানীর নয়াপল্টনে মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপি নেতারা ধর্ষণের বিরুদ্ধে নারীদের সম্ভ্রম রক্ষায় দেশব্যাপী প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন।

তাছাড়া গতকাল বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় অভিযোগ করা হয়েছে সরকারের জবাবদিহিতার অভাবে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। তাই সন্ত্রাস,খুন ও ধর্ষণের ঘটনা বাড়ছে।
এদিকে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগে’র সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আজ সচিবালয়ে এক সভায় ধর্ষণে প্রশ্রয়দাতাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
ধর্ষণের সঙ্গে সরকারি দল সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের নাম আসছে-এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন,‘যেই হোক। এটার দায় কেউ এড়াতে পারবে না। সরকার ক্ষমতায়,সরকার কীভাবে দায় এড়াবে? সরকার এটাকে আবার প্রশ্রয়ও দিচ্ছে না। এসব ঘটনায় যারাই জড়িত থাক,আমাদের দলীয় পরিচয়েও কেউ যদি থাকে,অবশ্যই তাকে আইনের আওতায়; শাস্তির আওতায় আনতে হবে। সেটা শুধু মুখে বলা হচ্ছে না,বাস্তবেও কার্যকর করা হচ্ছে।’

এসময় ওবায়দুল কাদের বলেন ‘সব ইস্যু নিয়ে রাজনীতি করার কোনো প্রয়োজন নেই। অন্তত এ ধরনের একটি ইস্যু নিয়ে আমরা রাজনৈতিক দলগুলো,সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন,স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন-সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’

অপরদিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সরকারের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আজ সচিবালয়ে ভিন্ন এক অনুষ্ঠানে বলেছেন,ধর্ষণকারীরা যে পরিচয়ই ব্যবহার করার চেষ্টা করুক না কেন তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন করার জন্য সরকার বদ্ধপরিকর
আওয়ামী লীগের অপর এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এর আগে বলেছেন,সিলেটের এমসি কলেজে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের অহেতুক বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় না করিয়ে সরাসরি ক্রসফায়ার দেয়া দরকার। যদিও আমরা ক্রসফায়ার ও নির্বিচারে হত্যার বিরুদ্ধে;তারপরও বলি যারা এ ধরনের পাশবিক নির্যাতন করে তাদের পশুর সঙ্গে তুলনা করা ছাড়া উপায় নেই।
সাংবাদিকদের প্রতিবাদ
সারাদেশে নারীর শ্লীলতাহানি,নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে আজ সোমবার (৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে মানববন্ধন করেছেন ঢাকায় কর্মরত সংবাদকর্মীরা।
কর্মসূচিতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সহ-সভাপতি ও সিনিয়র সাংবাদিক নজরুল কবির বলেন,আমাদের মা-বোনেরা আজ নিজেদের ইজ্জত রক্ষা করতে ঘরবন্দি হয়ে পড়ছেন। মুক্তভাবে তারা চলাফেরা করার স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলছেন। নারী নির্যাতনকারীরা অপরাধ করেও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকছে। অনেককে আবার আইনের আওতায় আনা হলেও নানাভাবে তারা ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। এ কারণে দেশে নারী নির্যাতন বেড়ে চলছে।
এসময় একুশে টেলিভিশনের সিনিয়র সাংবাদিক মুশফিকা নাজনীন বলেন,ধর্ষণের ভয়ে নারীরা আজ ঘরবন্দি হয়ে পড়ছেন। ঘরের বাইরে নারীরা নিজেদের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। নির্যাতনের ভয়ে নারী ঘরবন্দি হলে দেশের সকল খাতে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। তাই নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্যাতন ও ধর্ষণকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/গাজী আবদুর রশীদ/৫
- বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।