স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় রায়হান হত্যায় অভিযুক্ত এসআই আকবর গ্রেফতার
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i84508-স্থানীয়_বাসিন্দাদের_সহায়তায়_রায়হান_হত্যায়_অভিযুক্ত_এসআই_আকবর_গ্রেফতার
সিলেটে  পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন চালিয়ে  রায়হান উদ্দিন নামের এক যুবককে  হত্যার ঘটনায় প্রধান  অভিযুক্ত সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়ির সাবেক ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে আজ সোমবার (৯ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে  কানাইঘাট উপজেলার ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে।
(last modified 2025-10-27T13:35:51+00:00 )
নভেম্বর ০৯, ২০২০ ১৭:০৫ Asia/Dhaka

সিলেটে  পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন চালিয়ে  রায়হান উদ্দিন নামের এক যুবককে  হত্যার ঘটনায় প্রধান  অভিযুক্ত সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়ির সাবেক ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে আজ সোমবার (৯ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে  কানাইঘাট উপজেলার ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে।

সিলেট জেলার কানাইঘাট সার্কেলের  অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মোহাম্মদ আবদুল করিম  আকবরের আটকের খবর নিশ্চিত করে রেডিও তেহরানকে জানিয়েছেন, ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে সীমান্ত এলাকা থেকে  আজ দুপুরে তাকে  গ্রেফতার করেছে সিভিল পোশাকের পুলিশ   

তবে স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে আকবর সীমান্ত গলিয়ে ওপারের খাসিয়া পল্লীতে আশ্রয় নিয়েছিল। পরে খাসিয়ারাই তাকে বাংলাদেশের ভেতরে ঠেলে দেয়। সীমান্ত এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা পাহাড়-জঙ্গল ঘেরা এলাকায় মুখে দাড়ি গজানো অবস্থায় প্যান্ট সার্ট স্যান্ডেল পরিহিত আকবরকে আটক করে নাইলনের দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে। পরে পুলিশ খবর পেয়ে সেখানে যায়।

এদিকে নিহত রায়হান উদ্দিনের পরিবারের নিকটআত্মীয় তানভীর  রেডিও তেহরানকে জানান, তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সাংবাদিকদের কাছ থেকে জানতে পারেন আকবরের আটকের কথা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে আকবরের বক্তব্য উদ্ধৃত করে তানভীর জানিয়েছে, প্রশাসন থেকে তাকে কিছুদিন আত্মগোপনে থাকতে বলা হয়েছিল। তানভীর দাবী করেন পুলিশের কাছ থেকে তদন্তভার র‍্যাবের কাছে নেয়া হলে এটা বের হয়ে আসবে কারা আকবরকে পালাতে সাহায্য করেছিল।

এসআই আকবর গ্রেফতার

উল্লেখ্য, গত ১ অক্টোবর রাতে কর্মস্থল থেকে ঘরে ফেরার পথে রায়হানকে আটকের পর পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সকাল ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে তার মৃত্যু হয়।

প্রথমে পুলিশের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছিল  ছিনতাইকালে রায়হান গণপিটুনিতে  মারা গেছেকিন্তু  নিহতের পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ পুলিশ ধরে নিয়ে ফাঁড়িতে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করেছে। তাকে মুক্ত করার জন্য পরিবারকে টাকা নিয়ে আসতেও বলা হয়েছিল।

এ ঘটনার প্রতিবাদে সোচ্চার হয় স্থানীয় জনগণ। রায়হানের মা তার ছেলে হত্যার বিচার ও আকবরের গ্রেপ্তারের দাবিতে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে অনশন করেন। তার সাথে যোগ দেয় স্থানীয় অধিবাসীরা।  পরে সিটি মেয়রের আশ্বাসে তিনি অনশন প্রত্যাহার করেন।

এ হত্যা ঘটনার একদিন পর ১২ অক্টোবর রাতে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু আইনে নগরীর কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা রুজু করেন রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি।

ওদিকে পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হানের  হত্যার ঘটনায় জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হবার পর ফাঁড়ির ইনচার্জ আকবরসহ চার পুলিশকে বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে সিলেট মেট্রোপলিটান পুলিশ কর্তৃপক্ষ তবে ঘটনার পর থেকে আকবর পলাতক হয়ে যায়

ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নিহত রায়হানের দেহে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এসব আঘাতের ৯৭টি ফোলা আঘাত ও ১৪টি ছিল গুরুতর জখমের চিহ্ন। এসব আঘাত লাঠি দ্বারাই করা হয়েছে। অসংখ্য আঘাতের কারণে হাইপোভলিউমিক শক ও নিউরোজেনিক শকে মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, কিডনিসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো কর্মক্ষমতা হারানোর কারণে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/এনএম/৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।