১৭ থেকে ২৬ মার্চ মিছিল-মিটিং করলে রাষ্ট্রদ্রোহী বিবেচনা: ডিএমপি কমিশনার
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত কোনো কর্মসূচি না দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পুলিশের বিশেষ শাখার নতুন প্রধান মনিরুল ইসলাম। ‘এরপরও কোনো দল যদি মিছিল-মিটিং করে তাহলে পুলিশ রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে বিবেচনা করবে এবং শক্তভাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে’ বলেও জানান নবনিযুক্ত এসবি প্রধান।
রোববার (১৪ মার্চ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর উদ্বোধনে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানের আগমন উপলক্ষে আয়োজিত নিরাপত্তা ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনকে সামনে রেখে যারা মোদিবিরোধী মিছিল-মিটিং করছে কিংবা করবে তাদেরকেও হুঁশিয়ারি দেন ডিএমপির ভারপ্রাপ্ত এই কমিশনার। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, বিদেশি অতিথিদের অসম্মানের কর্মসূচি দিলে কঠোর হাতে দমন করা হবে।
এসময়, ভিভিআইপিদের চলাচলের কারণে রাজধানীতে যানজট তৈরি হতে পারে জানিয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, রাজধানীর সড়কগুলোতে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে। এর ফলে অধিকাংশ সড়কগুলোতে যান চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। আসন্ন উৎসবে বিদেশি অতিথিদের আমন্ত্রণ উপলক্ষে অনেক সড়কে চলাচলে কিছুটা বিঘ্ন হবে। রাষ্ট্রের সম্মানের কথা চিন্তা করে জনগণের এইটুকু স্যাক্রিফাইস করতে হবে। এ জন্য নির্ধারিত সময়ের আগেই অফিস-আদালত কিংবা পরীক্ষার জন্য আগে বের হওয়ার অনুরোধ করছি।
তিনি বলেন, ১৭ থেকে ২৬ মার্চের মধ্যে সাপ্তাহিক ও সরকারি মিলিয়ে ৪ দিন ছুটি রয়েছে। এ সময়ে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব সড়কে চলাচলে ভোগান্তি যতটা সম্ভব কমানোর।
বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে রাষ্ট্রীয়ভাবে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছে। এতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পাঁচটি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান অংশ নেবেন।
এ প্রসঙ্গে, বাংলাদেশের সরকারের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার জানিয়েছেন, ‘আমন্ত্রিত সম্মানিত বিদেশি অতিথিদের মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান ও মালদ্বীপের চারজন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান পৃথক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।’
প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর গ্রামে তাঁর মাজার পরিদর্শনে যাবেন। এ ছাড়া তিনি ঢাকার বাইরে গোপালগঞ্জ ও সাতক্ষীরায় দুটি হিন্দু মন্দির পরিদর্শন করবেন।’
এই মন্দিরগুলো বিশেষত হিন্দু মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রার্থনার স্থান। এদের একটি বড় অংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বাস করে।
সুরথ কুমার সরকার জানান, মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বিদেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানগণ ভিন্ন ভিন্ন তারিখে বাংলাদেশে আসবেন এবং তারপর দেশে ফিরে যাবেন। নরেন্দ্র মোদি ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের মূল অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
অপরদিকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন গণমাধ্যমে এক ব্রিফিংকালে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সফরকারী সব রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করবেন। তবে, ‘তাঁদের এ সফরের মূল লক্ষ্য হচ্ছে উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগদান করা’।
সফরসূচি অনুযায়ী, সব বিদেশি নেতা মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পরিদর্শনে যাবেন, বিশেষ সামরিক কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করবেন, রাষ্ট্রীয় ভোজ-সভায় অংশ নেবেন এবং বঙ্গবন্ধু জাদুঘর পরিদর্শন করবেন
১৭ মার্চ সারা দেশে মার্কেট-দোকান বন্ধ
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী ১৭ মার্চ সারা দেশের সব মার্কেট ও দোকান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি। রোববার (১৪ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সংগঠনটি।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানিয়েছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ১৭ মার্চ সারা দেশে মার্কেট ও দোকান বন্ধ রাখা হবে। একইসঙ্গে মার্কেটগুলোতে আলোকসজ্জা করার জন্য দোকান মালিকদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।