প্রেস সচিব শফিকুল আলম:
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ, জড়িত ভারতীয় গণমাধ্যম
-
বক্তব্য রাখছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘জঙ্গি নেতা’ হিসেবে উপস্থাপনের জন্য কোটি কোটি ডলার খরচ করা হচ্ছে এবং এর সঙ্গে ভারতীয় গণমাধ্যম জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আজ (শনিবার) জাতীয় প্রেস ক্লাবে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে জি এম রাজিব হোসেনের ‘দ্রোহের গ্রাফিতি: ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান’র প্রকাশনা উৎসবে তিনি এ কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, "পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ, চোরতন্ত্র ও গুমের জননী বাংলাদেশের ন্যারেটিভকে চ্যালেঞ্জ করতে চাচ্ছেন। বারবার ওদের মেসেজগুলো দেখেন, ৩ হাজার পুলিশ মারা গেছেন। ওদের কাছে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস হলো ‘জঙ্গি লিডার’। এটি খুবই ওয়েল অর্কেস্টেড ক্যাম্পেইন, ইন্ডিয়ার মিডিয়াও এটার সঙ্গে জড়িত। মিলিয়ন অব ডলার খরচ করছে হাসিনার অলিগার্কগুলো।"
পতিত সরকার নতুন ন্যারেটিভ তৈরি করতে চাচ্ছে উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, "বিশ্বকে বোঝাতে চাচ্ছে তুমি যেটাকে গণঅভ্যুত্থান বলতে বলছো, সেটা আসলে গণঅভ্যুত্থান না। সেটা আসলে এটা হয়েছে।"
প্রেস সচিব বলেন, "বাংলাদেশের ইতিহাস বদলের চেষ্টা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ নিয়ে গবেষণা ও লেখা প্রকাশিত হয়নি।"
তিনি বলেন, "যে আফতাব আহমেদ বাসন্তীর ছবি তুলেছেন, তিনি রহস্যজনকভাবে মারা গেছেন। কেউ তদন্ত করেনি। রক্ষীবাহিনীর হাতে ৩০ হাজার লোক মারা গিয়েছিল। ১৫ বছর ধরে ইতিহাস মুছে নতুন ইতিহাস চাপানোর চেষ্টা হয়েছে। শোষণ করার মূল হাতিয়ার ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়া। যে নিপীড়নকারী, সে নিজেকে নিপীড়নের শিকার বলে জাহির করেছে।"
নিজের পরিবারের সদস্যদের কথা উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, তাঁর ভাইকে দিনের পর দিন রাতে রেশনের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। মানুষজনক তাঁদের বাসায় আসত ভাতের মাড়ের জন্য। তিনি নিজেও ভাতের মাড় খেয়েছেন। অথচ সাড়ে ১৫টা বছর বলা হয়েছে শেখ মুজিবের শাসনামল ছিল মহৎ।
শেখ হাসিনা ও তাঁর লোকেরা বাংলাদেশ থেকে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, "সাড়ে তিন হাজার মানুষকে গুম করা হয়েছে। জুলাই-আগস্টে দুই হাজার মানুষকে খুন করা হয়েছে। শেখ হাসিনার সময়ে শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড হয়েছে, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়ের পর কী ভয়ানক হত্যাকাণ্ড হয়েছে।"
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ। এছাড়া সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরী ও সৈয়দ আবদাল আহমেদ প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।#
পার্সটুডে/এমএআর/৮