সাম্য হত্যা-গ্রেপ্তার ৩
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা ‘পূর্বপরিকল্পিত’: সারজিস আলম
-
এনসিপি–এর উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাম্যর হত্যাকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের সঙ্গে অসভ্য আচরণ এবং দায় চাপানোর অপচেষ্টায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)–এর উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সারজিস আলম বলেন, ‘ভাই সাম্য হত্যাকাণ্ডের পর ভিসি ও প্রক্টরের সঙ্গে যে ব্যবহার করা হয়েছে, তা অপচেষ্টা এবং সত্য আড়াল করার চেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়।’ তিনি অভিযোগ করেন, ঘটনার স্থান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা ‘পূর্বপরিকল্পিত’।
তিনি আরও বলেন, উদ্যানের নিরাপত্তা বা ব্যবস্থাপনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আওতায় নয়। বরং সেখানে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, হেনস্তা ইত্যাদি কাজ চলে বিভিন্ন প্রভাবশালী সংগঠন ও তাদের পৃষ্ঠপোষকতায়।
বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘উদ্যানের গেট ও আশপাশে ভাসমান দোকানগুলো বসিয়েছে ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা কিছু ব্যক্তি ও সংগঠন। এগুলো থেকে চাঁদা আদায় করা হয়, যা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নয়, বরং ওইসব সংগঠনের নেতাকর্মীরা পরিচালনা করে।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘মাদক সিন্ডিকেট, চাঁদাবাজি ও অবৈধ দোকান বসানোর মাধ্যমে যারা ক্যাম্পাসে পরিবেশ নষ্ট করেছে, তারাই এই হত্যাকাণ্ডের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ কেউ এসব সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত বলেও অভিযোগ করেন তিনি।’
সারজিস আলম আরও বলেন, ‘টিএসসিকে ক্যাম্পাসের চা দোকানের আখড়ায় পরিণত করা হয়েছে। প্রায় ৩০টি চা দোকান প্রতিদিন পুরো ঢাকা শহর থেকে হাজার হাজার বহিরাগতকে টেনে আনে, যার মধ্যে মাদকসেবীও থাকে। এতে শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।’
তিনি দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব দোকান উচ্ছেদ করতে গেলে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ে। চাঁদাবাজি, মাদক বাণিজ্য ও অবৈধ দখলদারির বিরুদ্ধে প্রশাসনের ব্যবস্থা নিতে গেলে ‘একটি গোষ্ঠী’ বাধা দেয়।
সারজিস আলম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ রক্ষা করতে হলে ভাসমান দোকান উচ্ছেদ, বহিরাগত নিয়ন্ত্রণ ও টিএসসিতে শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যাফেটেরিয়া চালু করতে হবে।’সবশেষে তিনি বলেন, ‘সাম্য হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সকল অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। প্রশাসন যেন অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়, যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো শিক্ষার্থীকে প্রাণ হারাতে না হয়।’
সাম্য হত্যার ঘটনায় আটক ৩

এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য (২৫) হত্যার ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। খবরটি নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর।
বুধবার (১৪ মে) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এই তিন ব্যক্তিকে আটক করা হয় বলে জানান ওসি। তবে তাদের নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানায়নি পুলিশ।
শাহবাগ থানার ওসি মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, ‘আটক হওয়া তিনজন পেশায় ভাসমান হকার। তারা রাতে মদ-গাঁজা খায়, নেশা করে। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাদের আটক করা হয়েছে। এখন তাদের আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।’#
পার্সটুডে/জিএআর/১৪