কমিশনের বিরুদ্ধে ছাত্র শিবিরের অভিযোগ
নীলনকশা ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ: জাকসু নির্বাচন বর্জন করেছে ছাত্রদল
-
ছাত্রদলের ভোট বর্জন
জাকসু নির্বাচন বর্জন করছে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল। নির্বাচনে ভোট গ্রহণে অসঙ্গতিসহ নানা অভিযোগ তুলেছে তাঁরা।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ টার দিকে মওলানা ভাসানী হলের অতিথি কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা দেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী তানজিলা হোসাইন বৈশাখী। এ সময় প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী মো. শেখ সাদী হাসানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে নীল নকশা, প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ছাত্রদল প্যানেলের ভিপি প্রার্থীর
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ জানিয়েছে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সহ–সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী শেখ সাদী হাসান।
ভোট গ্রহণ শুরুর চার ঘণ্টা পরে আজ বৃহস্পতিবার বেলা একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হলে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ জানান শেখ সাদী হাসান।
শেখ সাদী হাসান বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপুল সাড়া পেয়ে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল জাকসুতে বিজয়ের আশা করেছে। লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, ‘ভোট গ্রহণের আগের রাতে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখতে পাই যে জামায়াতে ইসলামীর কোনো এক অখ্যাত কোম্পানি থেকে যথাযথ ক্রয় প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে নির্বাচন কমিশন জাকসু নির্বাচনের ব্যালট পেপার ও ভোট গণনার ওএমআর মেশিন সরবরাহ করেছে।’ নির্বাচনে ছাত্র শিবিরের প্যানেলকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে এমন করা হয়েছে বলে দাবি করেন শেখ সাদী হাসান।
শেখ সাদী হাসান আরও অভিযোগ করেন, ‘আমরা এ নিয়ে ভোট গণনায় কারচুপির শঙ্কা করেছি। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে নির্বাচন কমিশন তাৎক্ষণিকভাবে ওএমআর মেশিনে ভোট গণনার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। কিন্তু একই কোম্পানির সরবরাহকৃত ব্যালট পেপার দিয়েই আজকের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।’
ছাত্র শিবির তাদের নিজস্ব কোম্পানি থেকে আলাদা করে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করে কারচুপির মাধ্যমে জয়ী হওয়ার জন্য নীল নকশা করে রেখেছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন শেখ সাদী হাসান।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আশপাশে জামায়াত শিবিরের অনেক নেতা-কর্মী জড়ো হয়েছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন শেখ সাদী হাসান। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আতংকিত বলেন তিনি।
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি ভালোভাবে নেয়নি নির্বাচন কমিশন: ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী

এদিকে, জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক অসঙ্গতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট।
এই জোটের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আরিফ উল্লাহ বলেছেন, ‘আমরা গতকাল থেকে দেখতে পেয়েছি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।’

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আরিফ উল্লাহ।
আরিফ উল্লাহ বলেন, 'সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনারের যে পরিমাণ প্রস্তুতি থাকার কথা, তার একটি প্রস্তুতিও তারা ভালোভাবে গ্রহণ করেনি।'
ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে এবং হলগুলোতে সাবেক ছাত্রদল নেতা–কর্মীদের দেখা গেছে বলে অভিযোগ করেন আরিফ উল্লাহ।
বিভিন্ন হলে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল তাঁদের ভোট দেওয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন আরিফ উল্লাহ। ক্যাম্পাসের চারপাশে ছাত্রদলের বহিরাগতদের বেশি আনাগোনা দেখা যাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
ওএমআর ও ব্যালট পেপার ছাপানোর অভিযোগের বিষয়ে আরিফ উল্লাহ বলেন, এইচআরসফট বিডি নামে যে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রোকমুনুর জামান রনি বিএনপি সমর্থক। অথচ এ নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।
বেলা ২টা পর্যন্ত ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে: নির্বাচন কমিশন

জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে বেলা ২টা পর্যন্ত ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার। আজ বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে তিনি এ কথা বলেন।
মাফরুহী সাত্তার বলেন, ‘এরইমধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি ভোটার ভোট দিয়েছেন। কয়েকটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার জন্য কিছু সময়ের জন্য ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। আমরা সেসব কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্তদের নির্দিষ্ট সময়ের পর ভোটার এলে কিছু সময়ের জন্য ভোট নিতে বলেছি।’
এর আগে আজ সকাল ৯টা থেকে জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। শুরুর দিকে ভোটার উপস্থিতি বেশ কম থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বেড়েছে। ভোট গ্রহণ চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ভোটার ৫ হাজার ৭২৮ জন, ছাত্র ভোটার ৬ হাজার ১৫ জন। ২৫টি পদে লড়ছেন ১৭৭ জন প্রার্থী।#
পার্সটুডে/জিএআর/১১