ত্রাণ বহরের ওপর হামলা হবে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ: কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারি
বৈশ্বিক সুমুদ মানবীয় ত্রাণবহরের ওপর ইসরায়েলি হামলার আশঙ্কা জোরদার
-
গাজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বৈশ্বিক সুমুদ মানবীয় ত্রাণবহর
পার্স-টুডে:বহুজাতিক মানবিক কনভয় গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় থাকা কর্মীরা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ঘোষণা করেছেন যে তাদের বহর এখন গাজার উপকূল থেকে ১২০ নটিক্যাল মাইল দূরে পৌঁছেছে এবং "উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে" প্রবেশ করছে যেখানে পূর্ববর্তী সাহায্য মিশনগুলোর ওপর ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী হামলা চালিয়েছে বা বাধা দিয়েছে।
আরবি শব্দ "সুমুদ" থেকে নামকরণ করা হয়েছে এই বেসামরিক নৌ-বহরের, সুমুদ অর্থ অবিচলতা। বেসামরিক নৌ-ত্রাণবহরের মাধ্যমে গাজার ওপর ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙ্গার এই বৃহত্তম প্রচেষ্টা বিশ্বের মানবাধিকার কর্মী ও মানবতাবাদীদের ব্যাপক প্রশংসা কুড়াচ্ছে।
এই বহরে রয়েছে ৪৬ দেশের ৫০টিরও বেশি নৌযান ও হাজার হাজার কর্মী এই অভিযানে অংশ নিয়েছেন। নৌযানগুলোর মধ্যেই রয়েছেন ৪৯৭ জন কর্মী।
কর্মীদের সাম্প্রতিক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট অনুসারে, অজ্ঞাত কয়েকটি ছোট জাহাজ ফ্লোটিলায় বেশ কয়েকটি নৌকার খুব কাছে এসে পৌঁছেছিল, কয়েকটি জাহাজের বাতিগুলো ছিল নেভানো। অংশগ্রহণকারীরা বাধা দেয়ার প্রস্তুতির জন্য নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুসরণ করেছেন।
তাদের পোস্টের সর্বশেষ আপডেটে জানানো হয়েছে, "অজ্ঞাত-পরিচয় ছোট জাহাজগুলো এখন ফ্লোটিলা ছেড়ে চলে গেছে। আমরা গাজার দিকে যাত্রা চালিয়ে যাচ্ছি, গাজার ১২০ নটিক্যাল মাইলের কাছাকাছি সেই এলাকার কাছাকাছি যেখানে পূর্ববর্তী বহর বা ফ্লোটিলাগুলোকে আটক করা হয়েছিল অথবা আক্রমণ করা হয়েছিল"।
ড্রপ সাইট নিউজের এক আপডেট অনুসারে, "গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলাকে আটকাতে ইসরায়েলি নৌবাহিনীর জাহাজগুলো এগিয়ে আসছে বলে জানা গেছে। এখনও কোনও জাহাজে চড়া হয়নি, তবে বেশ কয়েকটি নৌকার সিসিটিভি বিঘ্নিত হয়েছে। মানবিক অভিযানে অংশগ্রহণকারীরা সম্ভাব্য ইসরায়েলি হানাদারদের বাধা দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।"
এদিকে কলম্বিয়ার রাষ্ট্রপতি গুস্তাভো পেট্রো এক বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, "বেসামরিক, মানবিক এবং অহিংস গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার উপর যেকোনো ইসরায়েলি আক্রমণ আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।"
আয়োজকরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে আজ রাত বা আগামীকাল ভোরে ফ্লোটিলা ইসরায়েলি আক্রমণের মুখোমুখি হতে পারে, তাই বিশ্বব্যাপী নাগরিকরা যেন এ নৌ-বহরের নিরাপত্তার জন্য তাদের নিজ নিজ সরকারকে চাপ দেন।
"ফ্লোটিলার উপর আক্রমণ হলে তা হবে ফিলিস্তিনের উপর আক্রমণ," বিবৃতিতে জোর দেওয়া হয়ে বলা হয়েছে। ২০০৭ সাল থেকে আরোপিত নৃশংস ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজার ২০ লক্ষেরও বেশি বাসিন্দা পানি, স্বাস্থ্যসেবা এবং মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের তীব্র ঘাটতি সহ্য করে চলেছেন। এই নৌ-মিশনের মাধ্যমে গাজার ২০ লক্ষেরও বেশি বাসিন্দাকে সমর্থন করার প্রতীকী ও বাস্তব বা ব্যবহারিক গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।
কোনো বাধা না দেয়া হলে সুমুদ নৌ-বহর তিন দিনের মধ্যে গাজায় পৌঁছে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর তা সম্ভব হলে এটা হবে গাজাবাসীদের জন্য এক বড় মানবিক ত্রাণ-সাহায্যের করিডোর। #
পার্স টুডে/এমএএইচ/০১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।