ঢাকায় ফিরে শহিদুল আলম: ফিলিস্তিন মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে
-
আজ ভোরে ঢাকায় ফিরলেন দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম।
ইহুদিবাদী ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুল হয়ে দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশি আলোকচিত্রী, মানবাধিকারকর্মী ও দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম। আজ (শনিবার) ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি।
মুক্ত হয়ে দেশে ফিরে আসতে সহযোগিতার জন্য তিনি বাংলাদেশ ও তুরস্ক সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের মতো আরও হাজার ফ্লোটিলা যাওয়া দরকার, যত দিন না ফিলিস্তিন স্বাধীন হয়।’
ইসরায়েলি সেনাদের হাতে কঠিন সময় পার করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের উপর নির্যাতন গেছে, কঠিন সময় গেছে। কিন্তু গাজাবাসী যে নির্যাতনের মধ্যে আছে, তার তুলনায় কিছুই না। গাজাবাসী যতক্ষণ মুক্ত না হয়, আমাদের কাজ শেষ হয়নি।” ফিলিস্তিন মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে বলে জানান শহিদুল আলম।
বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেখে ইসরায়েলি বাহিনী তা ছুড়ে ফেলে দেয় জানিয়ে শহিদুল বলেন, “আমার সবচেয়ে অপমানবোধ হয়েছে, যখন বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেখে ইসরায়েলি সেনা সদস্যরা বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে যায় এবং বাংলাদেশি পাসপোর্ট মাটিতে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। এটা দেখে আমার খুবই খারাপ লেগেছে। এর জন্য আমাদেরকে বিচার আদায় করে নিতে হবে। একটি দেশের পাসপোর্ট এমনভাবে ছুড়ে ফেলে অপমান করে পার পেয়ে যাবে—তা মেনে নেওয়া যায় না।”
শহিদুল আলমকে বরণ করতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন তাঁর স্ত্রী ও মানবাধিকারকর্মী রেহনুমা আহমেদ, জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক তানজিম ইবনে ওয়াহাব, আলোকচিত্রী ও গবেষক মুনেম ওয়াসিফসহ অনেকে।
শহিদুল আলমের দেশে ফেরার ছবি আজ (শনিবার) সকাল সাতটার দিকে স্বাধীন মিডিয়া প্রতিষ্ঠান দৃকের ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়। দৃকের ইনোভেশন ম্যানেজার রাহাত খানও শহিদুল আলমের দেশে ফেরার বিষয়টি জানান।
পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটের ফেসবুক পেজেও শহিদুল আলমের দেশে ফেরার ছবি প্রকাশ করা হয়েছে।
আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলমসহ 'কনশানস' জাহাজের সব সাংবাদিক, স্বাস্থ্যকর্মী ও ক্রু সদস্যকে গত বুধবার ভোরে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী অপহরণ করে। এরপর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দপ্তর থেকে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক শহিদুল আলমকে আটকের পর জর্ডান, মিশর ও তুরস্কে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোকে সংশ্লিষ্ট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার এবং তার মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য তাৎক্ষণিক কূটনৈতিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। দেশে ফেরার আগে তিনি তেল আবিব থেকে তুরস্কে পৌঁছান।
এদিকে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শহিদুল আলমের মুক্তি ও নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে সহায়তার জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।#
পার্সটুডে/এমএআর/১১