ঢাকায় নামতে না পেরে ৯টি ফ্লাইট গেল চট্টগ্রাম ও সিলেটে
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ, আগুন এখনও জ্বলছে
-
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সব ধরনের উড়োজাহাজ ওঠানামা সাময়িকভাবে বন্ধঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।।
আজ (শনিবার) বিকেল পৌনে চারটার দিকে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

বেলা আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে (পণ্য রাখার স্থান) আগুন লাগে। কার্গো ভিলেজের যে অংশে আগুন লেগেছে সেখানে আমদানি করা পণ্য মজুত রাখা হয়।
ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে। এছাড়া ১২টি ইউনিট ঘটনাস্থলের দিকে যাচ্ছে।

আগুন নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সিভিল এ্যাভিয়েশনসহ ফায়ার সার্ভিস এবং বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর দুটি ফায়ার ইউনিট কাজ করছে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর। নৌবাহিনীও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে যোগ দিয়েছে বলে আইএসপিআর জানিয়েছে।
দুই প্লাটুন বিজিবিও আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দিয়েছে। শাহজালাল বিমানবন্দরের পোস্ট অফিস ও হ্যাঙ্গারের মাঝামাঝি স্থানে কার্গো ভিলেজ।

আগুন লেগেছে আমদানির কার্গো কমপ্লেক্স ভবনে। এটির অবস্থান বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটের পাশে। এই গেটকে হ্যাঙ্গার গেট বলা হয়। আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে গেট আছে ৩টি। আগুন লাগে কমপ্লেক্সের উত্তর দিকে, ৩ নম্বর গেটের পাশে। আগুন এখন পুরো ভবনে ছড়িয়েছে।

উড়োজাহাজ থেকে মালামাল ওঠানো–নামানোয় যুক্ত থাকা কোম্পানি ভয়েজার এভিয়েশনের গাড়িচালক মো. রাসেল মোল্লা বলেন, আগুন লাগার সময় তার গাড়িটি ৮ নম্বর গেটের ১০০ মিটারের মধ্যে ছিল। তিনি সেখান থেকে গাড়িটি দ্রুত সরিয়ে নেন। এসময় ভেতরে থাকা মানুষদের বের করে দেওয়া হয়।
রাসেল আরো বলেন, আগুন লেগেছে আমদানি করা মালামাল রাখার স্থানে।
ঢাকায় নামতে না পেরে ৯টি ফ্লাইট গেল চট্টগ্রাম ও সিলেটে
এদিকে, ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত নয়টি ফ্লাইট ঢাকায় নামতে না পেলে চট্টগ্রাম ও সিলেটের বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটটি ও সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি ফ্লাইট অবতরণ করে।
চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মুখপাত্র মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল আজ বিকেলে জানান, যে আটটি ফ্লাইট চট্টগ্রামে অবতরণ করেছে, তার মধ্যে দুটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট ছিল। অপর ৬টি ফ্লাইটের একটি ব্যাংকক থেকে, আরেকটি মধ্যপ্রাচ্য থেকে ঢাকায় অবতরণ করার কথা ছিল। বাকি চারটিও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। এ সব ফ্লাইট ঢাকার বদলে চট্টগ্রামে অবতরণ করেছে।
এদিকে শনিবার বেলা তিনটা ৩১ মিনিটে সৌদি আরবের রিয়াদ থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক মো. হাফিজ আহমেদ মিডিয়াকে বলেন, বাংলাদেশ বিমানের বিজি-৩৪০ ফ্লাইটটি ৩৯৬ জন যাত্রী নিয়ে রিয়াদ থেকে উড়াল দিয়েছিল। তবে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে না পেরে বিকেল ৩টা ৩১ মিনিটে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে উড়োজাহজটি সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা আছে।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে নভো এয়ারের একটি উড়োজাহাজ বেলা তিনটা ১২ মিনিটে যাত্রী নিয়ে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। উড়োজাহজটিকে সিলেট থেকে বেলা সাড়ে তিনটায় ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কার্গো ভিলেজে আগুন লাগায় উড়োজাহাজটি সিলেট ত্যাগ করেনি। এ ছাড়া সিলেট থেকে ঢাকাগামী অন্য কোনো উড়োজাহাজের ফ্লাইট বাতিল হয়নি।#
পার্সটুডে/জিএআর/১৮