ট্রাম্পের স্বীকারোক্তি জাতিসংঘে নথিভুক্ত হয়েছে
মেক্সিকোতে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত হত্যাচেষ্টার অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন ও হাস্যকর’: ইরান
-
ইসমাইল বাকায়ি
মেক্সিকোতে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে হত্যার চেষ্টা করার অভিযোগকে 'ভিত্তিহীন ও হাস্যকর' বলে অভিহিত করেছে ইরান। গতকাল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল অভিযোগ করে যে, ইরান মেক্সিকোতে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে হত্যার চেষ্টা করেছিল।
আজ (সোমবার) ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকায়ি এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “এই অভিযোগ ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর এমন পরিকল্পনার অংশ, যা ইরানের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট করতে চায়।”
তিনি আরও বলেন, মেক্সিকোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইতিমধ্যেই এ ধরনের কোনো পরিকল্পনার অস্তিত্ব অস্বীকার করেছে। তারা মেক্সিকোকে বেছে নেওয়ার একটি কারণ হলো- মেক্সিকোর জনগণের প্রতি প্রতিশোধ, যারা সম্প্রতি গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে স্পষ্ট মত প্রকাশ করেছে।”
বাকায়ি উল্লেখ করেন, আগে অস্ট্রেলিয়াতেও একই ধরনের ভুয়া অভিযোগ করা হয়েছিল, যা পরে ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়।
ট্রাম্পের স্বীকারোক্তি জাতিসংঘে নথিভুক্ত
ইরানি মুখপাত্রের মতে, জুনে ইসরায়েলি আগ্রাসনে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করার পর, তেহরান তৎক্ষণাৎ ট্রাম্পের স্বীকারোক্তি জাতিসংঘ ও নিরাপত্তা পরিষদে নথিভুক্ত করেছে।
তিনি বলেন, “এই স্বীকারোক্তি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পূর্ণ দায়িত্ব বোঝায় এবং ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা হবে।”
বাকায়ি আরও বলেন, ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে চুক্তি চান বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকে দেখানোর চেষ্টা করে যে, তারা আলোচনা চায়- কিন্তু বাস্তবে কোনো সদিচ্ছা দেখায় না।
ট্রাম্পের মন্তব্য সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তরে বাকায়ি পুনর্ব্যক্ত করেন, “একপক্ষীয় যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ইরানি জনগণের বৈধ দাবি।”
তিনি বলেন, “নিষেধাজ্ঞা মানবতার বিরুদ্ধে একটি অপরাধ, যা প্রতিটি ইরানির উপর প্রভাব ফেলেছে। প্রত্যাহার কোনো উপকার নয়, এটি অধিকার।”
বাকায়ি জোর দিয়ে বলেন, ইরান পশ্চিমা দেশের সঙ্গে ভবিষ্যৎ আলোচনার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারকে প্রধান শর্ত হিসেবে বজায় রাখবে।
যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের তৎপরতা আন্তর্জাতিক আইনের জন্য হুমকি
বাকায়ি জানিয়েছেন, তেহরানে “আগ্রাসনের অধীনে আন্তর্জাতিক আইন: আক্রমণ এবং প্রতিরক্ষা'” শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন হবে। সম্মেলনটি মূলত ইরানের বিরুদ্ধে জায়োনিস্ট শাসন ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক আগ্রাসন নিয়ে হবে।
নাটোর সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক রুটে'র সম্প্রতি ইরান ও রাশিয়াকে বৈশ্বিক শৃঙ্খলা ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় বাকায়ি বলেন, “এটি একটি হাস্যকর প্রক্ষেপণ।”
রুটে বলেছিলেন, “রাশিয়া একা নয়; তারা চীন, উত্তর কোরিয়া, ইরানসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা শিল্পে সহযোগিতা বাড়াচ্ছে।”
বাকায়ি বলেন, বাস্তবে ন্যাটোর সদস্যদের কর্মকাণ্ডের জন্য অন্যদের দোষারোপ করা হয়। “কোন পক্ষ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে—ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান নাকি ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্র?”
তিনি আফগানিস্তানসহ অন্যান্য সংঘাত উদাহরণ তুলে ধরেন এবং পশ্চিমা শক্তিকে শান্তি ও নিরাপত্তার প্রকৃত লঙ্ঘনকারী বলে উল্লেখ করেন।#
পার্সটুডে/এমএআর/১০