গণভোটের মধ্য দিয়ে সংবিধান সংশোধন হয়ে যাবে না: সালাহউদ্দিন আহমদ
https://parstoday.ir/bn/news/event-i154024-গণভোটের_মধ্য_দিয়ে_সংবিধান_সংশোধন_হয়ে_যাবে_না_সালাহউদ্দিন_আহমদ
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, মনে রাখতে হবে, গণভোটের মধ্য দিয়ে আইনপ্রণয়ন করা হয়ে যাবে না। গণভোটের মধ্য দিয়ে সংবিধান সংশোধন হয়ে যাবে না। এর জন্য আগে অবশ্যই জাতীয় সংসদ গঠিত হতে হবে।
(last modified 2025-11-28T10:09:50+00:00 )
নভেম্বর ১৪, ২০২৫ ১৩:৪৩ Asia/Dhaka
  • বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ
    বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, মনে রাখতে হবে, গণভোটের মধ্য দিয়ে আইনপ্রণয়ন করা হয়ে যাবে না। গণভোটের মধ্য দিয়ে সংবিধান সংশোধন হয়ে যাবে না। এর জন্য আগে অবশ্যই জাতীয় সংসদ গঠিত হতে হবে।

আজ (শুক্রবার) রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত এক কর্মসূচিতে এ কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ।

'নারীর ওপর ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও অসম্মান: প্রতিরোধে প্রস্তুত সচেতন নারী সমাজ’ শীর্ষক এই মৌন মিছিল ও সমাবেশের আয়োজক নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোট হবে একই দিনে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এই সিদ্ধান্ত জানান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান সালাহউদ্দিন আহমদ।

জুলাই জাতীয় সনদ যেভাবে স্বাক্ষরিত হয়েছে, তা প্রতিপালনে বিএনপি অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেন দলটির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এর বাইরে চাপিয়ে দেওয়া, জবরদস্তিমূলক কোনো প্রস্তাব যদি দেওয়া হয়, তা জনগণ বিবেচনা করবে।

জাতীয় সংসদের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বিএনপি সোচ্চার থাকবে বলে উল্লেখ করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সার্বভৌমত্ব কোনোভাবে ক্ষুণ্ন হোক, তা তাঁরা চান না। সে জন্য কোনো আরোপিত আইন দিয়ে, আদেশ দিয়ে, জবরদস্তিমূলক প্রস্তাব দিয়ে জাতীয় সংসদের সার্বভৌমত্বের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ তারা করতে দেবেন না।

দেশে একটি দল ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানিয়ে ব্যবসা করছে বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, তাদের হাতে নারীরা নির্যাতিত হচ্ছে। তারা চায়, এ দেশের নারীরা যেন অন্দরমহলে বন্দী থাকে। যেন বাংলাদেশে অর্ধেক জনসমষ্টি অন্ধকারে থাকে। নারীর অগ্রগতি-উন্নতি যেন না হয়। সে জন্য তারা বলছে, কর্মঘণ্টা কমিয়ে দিতে হবে। কিন্তু কর্মঘণ্টা কমিয়ে দিলে নারীদের কর্মসংস্থান কমে যাবে।

নারীরা যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে কাজ করবে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।

সমাবেশে সভাপতি নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা বলেন, তারা ভেবেছিলেন, গত ১৭ বছর নারীরা যেভাবে খুন-ধর্ষণের শিকার হতো, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটবে। নারীরা তাঁদের মর্যাদা ফিরে পাবেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, দেশে আজ আবার নারীরা অন্ধকারে ফিরে যাচ্ছেন। নারীদের ঘরে ফিরিয়ে দিতে কর্মঘণ্টা কমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। কাজেই অধিকার আদায়ে নারীদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। মর্যাদা ফিরে পেতে নারীদের সমস্বরে আওয়াজ দিতে হবে।

সমাবেশ সঞ্চালক নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্যসচিব নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, আজ তাঁরা এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সংকেত দিয়ে গেলেন যে নারীর অধিকার নিয়ে কোনো সংকট তৈরি করা হলে দেশের পুরো নারী সমাজ জেগে উঠবে। এ সময় তিনি স্লোগান দেন, ‘পাঁচ নয় আট, তুমি বলবার কে।’

নারী কর্মপরিসরে কাজ করবে না ঘরে থাকবে—এটা একান্তই নারীর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সদস্য চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস। তিনি বলেন, ‘নারী অধিকার হলো মানুষের অধিকার। নারীর কোনো দান, দয়া, দাক্ষিণ্যের প্রয়োজন হয় না। নারীরা ঘর সামলাবেন না বাইরে থাকবেন, সেটা একান্তই নারীদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতার বিষয়। নারীদের সিদ্ধান্ত নারীদেরই নিতে দিন।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাহরীন ইসলাম খান বলেন, ‘পুরুষ আমাদের সহযোদ্ধা। পুরুষ আমাদের শত্রু নয়। তাই নারীর পাশাপাশি যে পুরুষকে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হতে হয়, আমি তাঁর পক্ষে দাঁড়াই।’

যে জুলাই সনদে নারীর কথা নেই, সেই জুলাই সনদ নারীরা প্রত্যাখ্যান করছেন বলে মন্তব্য করেন নাহরীন ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘দেশের প্রবৃদ্ধি প্রকৃত উন্নয়ন নয়। প্রকৃত উন্নয়ন হচ্ছে সেই উন্নয়ন, যেখানে রাত্রিবেলায় নারী নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন।’

সমাবেশে ডাকসুর গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক সানজিদা আহমেদ তন্বি তার বক্তব্যে বলেনবলেন, ‘রাজনৈতিক ক্ষেত্রে হোক, পারিবারিক ক্ষেত্রে হোক বা যেকোনো ক্ষেত্রে হোক, যখনই তাঁরা কথা বলতে গিয়েছেন, তখনই দেখেছেন, বিভিন্নভাবে নারীদের হ্যারেস করা হয়েছে। হয়তো নারীর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে, অথবা কোনো মতাদর্শ নিয়ে, অথবা পোশাক নিয়ে। নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে নারীকে কথা বলতে হবে।’#

পার্সটুডে/জিএআর/১৪