আসামী এখনও দেশ ছেড়ে পালায়নি-জুমা
সায়েরের চাঞ্চল্যকর তথ্য: হাদির ওপর হামলাকারী ভারতে পালিয়ে গেছেন
-
শ্যুটার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ও তার সহযোগী বাইকচালক আলমগীর হোসেন
বাংলাদেশে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্রপ্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করার ঘটনার সঙ্গে জড়িত শ্যুটার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ও তার সহযোগী বাইকচালক আলমগীর হোসেন বর্তমানে আসামের গুয়াহাটিতে অবস্থান করছেন বলে দাবি করেছেন আল-জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের।
আজ (রোববার ১৪ ডিসেম্বর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এমন দাবি করেন। পোস্টে সায়ের বলেন, তারা ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের বর্তমান অবস্থান আসামের গুয়াহাটি শহরে।
জুলকারনাইনের দাবি, ভারতে তাদের সহায়তা করছেন আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানকের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) মো. মাসুদুর রহমান বিপ্লব। বিপ্লবের তত্বাবধানে এই হত্যাকারীরা ভারতে অবস্থান করছে।
হাদির ওপর হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে- অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এই আক্রমণ করা হয়েছে এবং আরও কয়েকটি হিট টিমের একইরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তির পরিকল্পনা রয়েছে।
সায়ের বলেন, এদিকে মূল শ্যুটার ফয়সাল তার ঘনিষ্ঠ মহলে দাবি করেছেন, ব্যবহৃত অস্ত্রটি জ্যাম হয়ে যাওয়ায় তিনি কেবল একটি গুলি করতে সক্ষম হন। তার পরিকল্পনা ছিল চারটি গুলি করার।
সায়েরের পোস্ট অনুযায়ী, সূত্র দাবি করেছে ফয়সালের মতোই আরেক অস্ত্রধারী ক্যাডার চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য মো. সাজ্জাদ, যাকে গত ১৩ মে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রামের মুরাদপুরে ফয়সাল আহমেদ শান্ত হত্যার মামলায়। তবে ২৯ জুলাই সাজ্জাদ সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে কারামুক্ত হন।
সাংবাদিক সায়ের বলেন, অনতিবিলম্বে কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠনের যে সব অস্ত্রধারী ক্যাডারকে বিভিন্ন মামলায় জামিন দেওয়া হয়েছে, তাদের প্রত্যকের বর্তমান অবস্থান যাচাই ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া জরুরি।#
'হাদিকে খুনের চেষ্টাকারীর সহযোগীরা হাসপাতাল পর্যন্ত চলে এসেছিল’
সন্ত্রাসীর গুলিতে আহত হয়ে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছেন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদি। এখন তিনি লাইফ সাপোর্টে আছেন রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে।
তবে তাকে হত্যার চেষ্টা করেছে যারা, সেই তাদের সহযোগীরা হাসপাতাল পর্যন্ত চলে এসেছিল। এমনটাই দাবি করেছেন ইনকিলাব মঞ্চের কর্মী ও ডাকসু সদস্য ফাতিমা তাসনিম জুমা। তিনি সম্প্রতি একটি ফেসবুক পোস্টে এমন দাবি করেন।
ঘটনার দুই দিন হতে চলেছে, তবে এখনও হত্যাকারীকে ধরতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এখানে তাদের সদিচ্ছার অভাব দেখতে পাচ্ছেন জুমা। তিনি বলেন, ‘যে আসামী অলরেডি একবার গ্রেপ্তার হয়েছে তার সকল তথ্য সংস্থাগুলোর কাছে আছে। তবুও তাকে চিহ্নিত করতে পারছেনা, আঁটকাতে পারছেনা এইটা আমাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য নয়।’
তিনি বিশ্বাস করেন আসামী এখনও দেশ ছেড়ে পালায়নি। তার কথা, ‘দ্বিতীয়ত, আমাদের বিশ্বাস আসামী পালায়নি, পালিয়ে গিয়েছে বলে হতাশা তৈরি করে দায়মুক্তি নিতে চাইছে, অথবা পালাতে সহযোগিতা করার একটা প্লান এটা।’
এরপরই তিনি জানান, হাদিকে হত্যাকারীর সহযোগীরা হাসপাতাল পর্যন্ত চলে এসেছিল। তিনি বলেন, ‘এই প্লান একজন করেনি, একজন এক্সিকিউট করেনি। এই পুরো সিন্ডিকেট এখনো এক্টিভ এবং খুনিদের সহযোগিরা হাসপাতালে এসেছিল বলেও আমাদের কাছে তথ্য এসেছে।’
তিনি শেষে এসে ওসমান হাদিসহ সবার নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘পুরো সিন্ডিকেটকে আমরা জীবিত গ্রেপ্তার দেখতে চাই। ওসমান ভাইয়ের নিরাপত্তা সহ সকলের নিরাপত্তা জোরদার করেন। অনেক কষ্ট করে ধৈর্য্য ধরে আছি আমরা। কিন্তু সেটা বেশিক্ষণ পারবো না।’#
পার্সটুডে/জিএআর/১৪