অসমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বজায় রাখা মুসলিমদের দায়িত্ব : হিমন্ত
-
বিজেপি নেতা হিমন্তবিশ্ব শর্মা
ভারতের অসমের মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা হিমন্তবিশ্ব শর্মা মুসলিমদের সম্পর্কে বলেছেন, ‘সংখ্যালঘুরা এখন সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েছে।
তারা রাজ্যের জনসংখ্যার ৩০/৩৫ শতাংশ। এক কোটি জনসংখ্যার সাথে তারা এখন সবচেয়ে বড় সম্প্রদায় এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করা তাদের দায়িত্ব।’ আজ (বুধবার) হিন্দি গণমাধ্যম ‘জনসত্তা’য় তার ওই মন্তব্য প্রকাশ্যে এসেছে। মঙ্গলবার রাজ্যপালের ভাষণের উপরে ধন্যবাদ সূচক প্রস্তাবে আলোচনার জবাবে, হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, তাদের নিজেদেরকে ‘বহিরাগত’ ভাবা বন্ধ করা উচিত এবং সাম্প্রদায়িক ঐক্য ও সম্প্রীতির দিকে মনোনিবেশ করা উচিত।
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, হিন্দুরা সংখ্যালঘু হওয়ার সাথে সাথে তাদের পরিচয় হারানোর ভয় বাড়ছে এবং এই আশঙ্কা তাদের চারপাশে প্রতিরক্ষামূলক বৃত্ত তৈরি করেছে। কিন্তু প্রতিরক্ষামূলক বৃত্ত বলতে কী বোঝায় সে সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মুসলিমদের বোঝা উচিত যে রাজ্যের অগ্রগতি সরাসরি তাদের ক্রিয়াকলাপের সাথে যুক্ত। এ সময়ে তিনি তাদের দারিদ্র্য বিমোচন, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদির দিকে কাজ করার জন্য রাজ্যের সামনে আসা সমস্যাগুলো হ্রাস করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, মুসলিম সম্প্রদায় রাজ্যের বৃহত্তম জনসংখ্যায় পরিণত হয়েছে এবং তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায় হিসেবে আচরণ করা শুরু করা উচিত। হিমন্তবিশ্ব শর্মা মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করার দায়িত্বও চাপিয়েছেন, বিশেষ করে বাংলাভাষী বংশোদ্ভূত লোকেদের উপর, এই বলে যে অসমের মূল নিবাসী মুসলিমরাও তাদের পরিচয় হারানোর ভয় পায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, তার দাবির সমর্থনে প্রমাণ রয়েছে কিন্তু তা বিধানসভায় উপস্থাপন করেননি।
মুখ্যমন্ত্রী মুসলিমদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা ‘মিয়াঁ’ বাদ দিয়ে শংকরী সংস্কৃতির কথা বলুন। এক মিনিটে রাজ্যে সংহতি চলে আসবে। তিনি জম্মু-কাশ্মীর উপত্যকা সম্পর্কে বলেন, কোনও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপরে যাতে নির্যাতন না হতে পারে সেজন্য অসমের মুসলিম সম্প্রদায়ের সতর্ক থাকা উচিত। অনেকেই ইতোমধ্যে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণে না করা যায়, তাহলে কাশ্মীরের পরিস্থিতি অসমেও হবে। কাশ্মীরে যেভাবে পণ্ডিতরা অত্যাচারের শিকার হয়েছেন, ঠিক একই পরিস্থিতি অসমেও হতে পারে। এই আশঙ্কা অনেকের রয়েছে।’ রাজ্যে মিয়াঁ মিউজিয়াম গঠনের দাবি না তুলে রাজ্যের খিলঞ্জিয়াদের (ভূমিপুত্র) সংস্কৃতি রক্ষার জন্য মুসলিমদের এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, অসমের মোট ৩.১২ কোটি জনসংখ্যার ৬১.৪৭ শতাংশ হিন্দু। মুসলিমরা জনসংখ্যার ৩৪.২২ শতাংশ এবং তারা অনেক জেলায় সংখ্যাগরিষ্ঠ। খ্রিস্টানরা রাজ্যে মোট সংখ্যার ৩.৭৪ শতাংশ। এছাড়া শিখ, বৌদ্ধ এবং জৈনদের হার এক শতাংশেরও কম। #
পার্সটুডে/এমএএইচ/আবুসাঈদ/১৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।