ভারতে মুসলিম বিরোধিতা:
জেল থেকে মুক্তি পেয়েই মুসলিম বিরোধী উস্কানি হিন্দুত্ববাদী সাধুর,চলছে সমালোচনা
-
উগ্রহিন্দুত্ববাদী সাধু ইয়েতি নরসিংহানন্দ
ভারতের হরিদ্বারে বিদ্বেষমূলক বক্তৃতা মামলায় জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত উগ্রহিন্দুত্ববাদী সাধু ইয়েতি নরসিংহানন্দ হিমাচল প্রদেশের উনায় একটি 'ধর্মীয়' সম্মেলনে তার জামিনের শর্ত লঙ্ঘন করে ফের মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক বক্তব্য দিয়েছেন।
এনডিটিভি হিন্দি ওয়েবসাইটে প্রকাশ, ওই সভায় সংগঠকরা হিন্দুদেরকে অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়ার জন্য উন্মুক্ত আহ্বান জানান এবং বক্তারা মুসলিমদের হত্যার আহ্বান জানান।
ওই ধর্মীয় সভার আয়োজকদের মধ্যে সত্যদেব সরস্বতী নামে একজন এনডিটিভিকে বলেন, এটি একটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান এবং এখানে প্রশাসনের অনুমতি নেওয়ার দরকার নেই। তিনি বলেন, আমরা আইনে বিশ্বাস করি না। আমরা কাউকে ভয় করি না। এখানে আমরা সত্য বলছি, কোনো বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিচ্ছি না।
ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়ে ইয়েতি নরসিংহানন্দ বলেন, বর্তমানে হিন্দু সমাজ অধঃপতনের দিকে যাচ্ছে। তার দাবি, আগে শুধু অমরনাথ যাত্রা ও বৈষ্ণোদেবী যাত্রায় পাথর ছোড়া হতো, এখন রাম নবমী, হনুমান জয়ন্তী, যে কোনো হিন্দু উৎসবে পাথর নিক্ষেপ হচ্ছে। হিন্দুদের জন্য এর চেয়ে খারাপ আর কী হতে পারে?
তিনি আরও বলেন, দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা মুসলিমদের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। এই কারণেই হিন্দুদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। হিন্দুদের উচিত আরও বেশি করে সন্তান উৎপাদন করা এবং তাদের শক্তিশালী করা যাতে তারা তাদের পরিবারকে রক্ষা করতে পারে।
গত জানুয়ারীতে, হরিদ্বারে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য ইয়েতি নরসিংহানন্দকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ওই কর্মসূচিতে মুসলিমদের গণহত্যার আহ্বান জানানো হয়েছিল। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি নরসিংহানন্দ জামিনে মুক্তি পান।
যদিও চলতি মাসের শুরুতেও ইয়েতি নরসিংহানন্দ দিল্লির বুরাড়িতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে একটি ঘৃণ্য বক্তৃতা দিয়েছিলেন। পুলিশ ইয়েতি নরসিংহানন্দের নামে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছিল, তারা ওই অনুষ্ঠানের অনুমতি দিতে অস্বীকার করেছিল। কিন্তু আয়োজকরা তা সত্ত্বেও একটি ‘মহাপঞ্চায়েত সভা’ আয়োজন করেছিল এবং এতে কমপক্ষে ৭০০/৮০০ জন উপস্থিত ছিলেন।
এবার উনায়, সাধ্বী অন্নপূর্ণা সহ বেশ কয়েকজন উপস্থিত লোকজন ঘৃণ্য বক্তব্য দিয়েছেন, যেখানে তারা আবারও মুসলিমদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহারের ডাক দিয়েছেন।
হরিদ্বার মামলায় নথিভুক্ত এফআইআরে সাধ্বী অন্নপূর্ণার নামও ছিল। সাধ্বীর বিরুদ্ধে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা প্রচার এবং উপাসনালয় অপবিত্র করার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হরিদ্বার কর্মসূচির ভিডিও ক্লিপকে সাবেক সেনাপ্রধান, অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, সমাজকর্মী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এমনকি টেনিস তারকা মার্টিনা নাভ্রাতিলোভাও তীব্র সমালোচনা করেছিলেন।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/আবুসাঈদ/১৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।