গুলবার্গ সোসাইটিতে গণহত্যার রায় মোদির জন্য কলঙ্ক : রাজিন্দর সাচার
-
রাজিন্দর সাচার
ভারতের গুজরাটে ভয়াবহ দাঙ্গার সময় গুলবার্গ সোসাইটিতে গণহত্যার ঘটনায় আদালতের রায়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গায়ে কালো দাগ লাগল বলে মন্তব্য করেছেন দিল্লি হাই কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি রাজিন্দর সাচার।
২০০২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি একদল উন্মত্ত জনতা মুসলিম অধ্যুষিত গুলবার্গ সোসাইটি আবাসনে আগুন ধরিয়ে দিলে প্রাণ হারান সাবেক কংগ্রেস সংসদ সদস্য এহসান জাফরিসহ ৬৯ জন মুসলিম। দীর্ঘ ১৪ বছর পর গতকাল বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদের বিশেষ আদালত এ সংক্রান্ত এক রায়ে ২৪ জনকে দোষী সাব্যস্ত এবং ৩৬ জনকে বেকসুর খালাস দেয়। খালাসপ্রাপ্তদের মধ্যে বিজেপি কর্পোরেটর বিপিন প্যাটেলসহ অন্যরা রয়েছেন। দোষী সাব্যস্তদের মধ্যে রয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা অতুল বৈদ্য, হরেশ ভাটসহ তাদের একাধিক নেতা।

বহুল আলোচিত ওই হত্যা মামলার রায় নিয়ে মুখ খুলেছেন দিল্লি হাইকোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি রাজিন্দর সাচার। ভারতীয় মুসলিমদের আর্থ-সামাজিক এবং শিক্ষাগত অবস্থান খতিয়ে দেখার উদ্দেশ্যে ২০০৫ সালে তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং কর্তৃক গঠিত রাজিন্দর সাচ্চার কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন দিল্লি হাই কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি রাজিন্দর সাচ্চার। সাচার কমিটির রিপোর্ট নিয়ে একসময় গোটা দেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল।
গুলবার্গ রায় নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিকে সরাসরি আঙুল তুলে বলেছেন, ‘ঘটনার সময় গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। আজ তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু গুলবার্গ হত্যাকাণ্ডের দায় তিনি ঝেড়ে ফেলতে পারেন না। কারণ, তার রাজত্বেই এই ঘটনা ঘটেছিল। তাই গুলবার্গ হত্যাকাণ্ড নিয়ে আদালতের রায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য একটি কলঙ্ক হয়ে থাকল। তার গায়ে কালো দাগ লাগল।’

প্রসঙ্গত, এই মামলায় ২০১০ সালে অন্যদের পাশাপাশি গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্ত কর্মকর্তারা। যদিও বিশেষ তদন্ত টিমের রিপোর্টে তাকে ক্লিন চিট দেয়া হয়।
বিচারপতি রাজিন্দর সাচার গত ফেব্রুয়ারিতে মুসলিমদের অবস্থা সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘মোদি সরকারের আমলে মুসলিমরা ভীত সন্ত্রন্ত হয়ে রয়েছে। মুসলিমদের কল্যাণের পরিবর্তে তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে।’ মোদি সরকার মুসলিমদের উন্নয়ন এবং সুরক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/এআর/৩