প্রতিরক্ষা শিল্প দিবস
অত্যাধুনিক ড্রোনসহ সামরিক সরঞ্জামাদি নির্মাণে ইরান স্বয়ংসম্পূর্ণ
ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি গতকাল একটি অত্যাধুনিক নয়া ড্রোন উন্মোচন করেছেন। গতকাল ছিল ইরানে প্রতিরক্ষা শিল্প দিবস। ওই দিবস উপলক্ষে প্রতিরক্ষা বিভাগ এ ক্ষেত্রে তাদের নতুন নতুন অর্জনগুলো প্রদর্শনীর আয়োজন করে।
প্রেসিডেন্ট রায়িসি ওই প্রদর্শনী দেখতে গিয়ে নয়া ড্রোন মুহাজির-১০ উন্মোচন করেন। ৭ হাজার মিটার উচ্চতায় এই ড্রোনটি টানা ২৪ ঘণ্টা উড়তে পারে। সাড়ে ৪ শ লিটার তেল পরিবাহী এই ড্রোন ৩০০ কেজি ওজন বহন করতে সক্ষম। ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার গতির মুহাজির-১০ ড্রোনের রেঞ্জ হলো ২ হাজার কিলোমিটার। এই ড্রোন ইলেক্ট্রনিক যুদ্ধ ও গোয়েন্দা সরঞ্জামাদিসহ সব ধরনের গোলাবারুদ বহন করতে পারে।
ইরানের প্রতিরক্ষা শিল্পে এই ড্রোন একটি প্রশংসনীয় অর্জন। মুহাজির-১০ এর ডিজাইন ইরানি গবেষকদের নিজস্ব মেধা ও পরিকল্পনায় করা হয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ চালকবিহীন বিমান নির্মাণ বা ইউএভি শক্তিগুলির একটি হিসাবে বিবেচিত ইরান।
ইরানের ড্রোন কর্মসূচি ১৯৮০'র দশকে শুরু হয়েছিল। তার পর থেকে ইরান আর থেমে থাকে নি। অব্যাহত গতিতে ড্রোন নির্মোণের কাজ এগিয়ে নিয়ে এসেছে। গোয়েন্দা এবং সামরিক কাজের বাইরেও ড্রোনের বিচিত্র ব্যবহার রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে যুদ্ধ এবং সামরিক সংঘাতের অভিজ্ঞতা থেকে প্রমাণিত যে যুদ্ধের ফলাফল নির্ধারণে ড্রোন একটি নির্ধারক ভূমিকা পালন করতে পারে।
সশস্ত্র বাহিনীতে নিজস্ব বিশেষজ্ঞদের প্রচেষ্টায় ইরান এখন সামরিক সরঞ্জাম উত্পাদন ও তৈরির ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। প্রতিরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ৯০ শতাংশেরও বেশি সামরিক সরঞ্জাম দেশের ভেতরেই উত্পাদিত হয়। ইসলামি বিপ্লবের পর প্রথম মাস থেকেই ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু ওই নিষেধাজ্ঞা তীব্র হওয়া সত্ত্বেও ইরান থেমে থাকে নি। কাসেদ, শাহেদ, সি-মোরগ, মুহাজির ইত্যাদি ড্রোন ইরান তৈরি করেছে। এর বাইরেও কাওসার, অজারাখশ, সায়েকে ও ইয়াসিন এয়ারক্রাফট তৈরি ও উৎপাদন করেছে ইরান। ফাতেহ, জামারান এবং দামাভান্দের মতো সাবমেরিন ও যুদ্ধজাহাজের উৎপাদন ও উন্নয়ন, সেইসাথে স্টিলথ অস্ত্রও তৈরি করেছে ইরান।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সামরিক প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ইরানের অবিশ্বাস্য পর্যায়ের উন্নতি হয়েছে। গতকাল মোহাজির-১০ ইউএভির উন্মোচন প্রমাণ করলো বিশ্বের কোনো শক্তিই ইরানকে আর দমিয়ে রাখতে পারবে না। আমেরিকা এবং ইহুদিবাদী ইসরাইলসহ তাদের ইউরোপীয় মিত্ররা ইরানের এই সামরিক শক্তি বৃদ্ধির ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।#
পার্সটুডে/এনএম/২৩
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।