ইরাক ও ইরানের নিরাপত্তা একটি অবিচ্ছেদ্য বিষয়- বাগদাদ
যুক্তরাষ্ট্র ইরাককে স্বাধীনভাবে চলতে দিতে চায় না: আলী লারিজানি
-
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আলী লারিজানি ও কাসেম আল-আরাজি
পার্সটুডে : ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব বলেছেন, ইরান ও ইরাকের বিরুদ্ধে বিদেশিদের যেকোনো ধরনের সুযোগ নেওয়ার প্রচেষ্টা রোধ করতে হবে।
ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব আলী লারিজানি গতকাল (সোমবার) ইরাকের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা কাসেম আল-আরাজির সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন।
পার্সটুডে ও ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থার (আইআরআইবি) জানিয়েছে, আলী লারিজানি বলেন, “ইরাক সরকার আমাদের বন্ধু ও ভাইয়ের সরকার। আজ আমরা গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি এবং বাগদাদ সফরের সময় যে বিষয়গুলো উত্থাপিত হয়েছিল তা পুনরায় পর্যালোচনা করেছি। তবে আজকের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল- দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়ন। আমরা যদি টেকসই অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই, তবে নিরাপত্তা ক্ষেত্রেও আমাদের সহযোগিতা জোরদার করতে হবে।”
ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব জোর দিয়ে বলেন, “আঞ্চলিক বিষয়ে ইরাকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের চেষ্টা করতে হবে যাতে বিদেশি শক্তিগুলো ইরান ও ইরাকের ক্ষতির জন্য কোনোভাবে সুযোগ নিতে না পারে।”
লারিজানি ইরানের বিরুদ্ধে ১২ দিনের 'আরোপিত যুদ্ধ'-এ (ইসরায়েলের হামলার প্রসঙ্গ) ইরাকের অবস্থানের প্রশংসা করে বলেন, “দুঃখজনকভাবে, জায়নবাদী শাসকগোষ্ঠী ইরাকের আকাশসীমা ব্যবহার করেছে এবং আমাদের ইরাকি ভাইয়েরাও এ বিষয়ে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন।”
আমেরিকার হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গে লারিজানি বলেন, ““এটি প্রমাণ করে যে, যুক্তরাষ্ট্র ইরাককে স্বাধীনভাবে চলতে দিতে চায় না। তারা চায় ইরাক তাদের নিয়ন্ত্রণেই থাকুক। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের এই আচরণকে গোটা অঞ্চলের দেশগুলোর প্রতি তাদের নীতির প্রতিফলন হিসেবে দেখি।”
সংবাদ সম্মেলনে ইরাকের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা কাসেম আল-আরাজি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, “ইসরায়েলের হামলার ঘটনায় আমরা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অভিযোগ করেছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী আরব লীগের বৈঠকে এবং অন্যান্য দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকেও জোর দিয়ে বলেছেন, কেউই ইরানের বিরুদ্ধে হামলার জন্য ইরাকের আকাশসীমা ব্যবহার করার অধিকার রাখে না।”
তিনি আরও বলেন, “ইরাক ও ইরানের নিরাপত্তা একটি অবিচ্ছেদ্য বিষয়। আমরা বিশ্বাস করি, এই অঞ্চলে নতুন করে যুদ্ধ শুরু হওয়া কারও স্বার্থে নয়। তাই সব দেশকে এ বিষয়ে একযোগে কাজ করতে হবে। আমাদের অঞ্চল ইসরায়েলের আগ্রাসন থেকে অনেক ক্ষতির শিকার হয়েছে—এখন সেই আগ্রাসনের অবসান ঘটানোর সময় এসেছে।”
আল-আরাজি আরও বলেন, “ইরাক সরকার যেকোনো দেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোর বিরোধী। কোনো সমস্যাই, যার মধ্যে ইরানের সমস্যাও অন্তর্ভুক্ত, বলপ্রয়োগের মাধ্যমে নয়—সংলাপের মাধ্যমে সমাধান হওয়া উচিত।”#
পার্সটুডে/এমএআর/২১