শেষ হল প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: এবারের নির্বাচন নতুন যুগের সূচনা করবে
ভোটকেন্দ্রে জনগণের ব্যাপক উপস্থিতি ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ইরানে ১৩তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ নির্বাচনে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইয়েদ ইব্রাহিম রায়িসি ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে বিজয় লাভ করেছেন। করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল সকাল ৭টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয় এবং ভোটার সংখ্যা বাড়তে থাকায় পাঁচ দফায় ভোট গ্রহণের সময়সীমা বাড়াতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।
গত কয়েক মাস আগ থেকেই ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ ও রাজনৈতিক মহলের চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে এবং নির্বাচন নিয়ে বিশ্বমিডিয়ায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। বার্তা-সংস্থা রয়টার্স, এসোসিয়েটেড প্রেস, সিএনএন, শিনহুয়া, স্পুতনিকসহ অন্যান্য বড় বড় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, বিপুল সংখ্যক ভোটারের উপস্থিতিতে ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে, ইরানে ইসলামি বিপ্লবী আদর্শ ও সরকার ব্যবস্থা টিকে থাকার জন্য গতকালের নির্বাচনের দিনটি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ভাগ্য নির্ধারনী দিন।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী গতকাল শুক্রবার সকাল সাতটায় প্রথম ভোট দিয়ে এই নির্বাচনকে আজ জাতির ভাগ্য নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, আজকের দিনটির মালিক জনগণ এবং ভোট কেন্দ্রগুলোতে ব্যাপক ভোটার উপস্থিতির প্রথম সুফল পাবে এদেশের জনগণ; সেইসঙ্গে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ইরানের মর্যাদা সমুন্নত হবে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জনগণের ব্যাপক উপস্থিতিতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার এই বক্তব্যের প্রতিফলন ঘটেছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ না নিতে শত্রুদের ব্যাপক অপপ্রচার ও উস্কানি সত্বেও এ নির্বাচনে জনগণের ব্যাপক উপস্থিতি থেকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা উঠে এসেছে। প্রথম বার্তা হচ্ছে, স্পর্শকাতর মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে ইরানের জনগণের রাজনৈতিক সচেতনতার বিষয়টি ফুটে উঠেছে। ইরানের জনগণ এমন সময় নির্বাচনে অংশ নিয়ে তাদের ধর্মীয় ও জাতীয় দায়িত্ব পালন করেছে যখন দেশের মানুষ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধি, ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্বসহ তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত এবং এ পরিস্থিতির জন্য জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। এ অবস্থায় ইরানের জনগণও জানে নির্বাচনে সঠিক সিদ্ধান্ত এ সংকট থেকে তাদের মুক্তি দিতে পারে। অভ্যন্তরীণ সুযোগ সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন সবচেয়ে জরুরি। তাই একটি নির্বাচনে জনগণের সঠিক সিদ্ধান্ত এসব লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে পারে।
নির্বাচনে জনগণের উপস্থিতির দ্বিতীয় বার্তা হচ্ছে, ইসলামি বিপ্লব বিজয়ের পর এ পর্যন্ত যত নির্বাচন হয়েছে তাতে বিপ্লবের ভিত্তি আরো মজবুত হয়েছে। এ ব্যাপারে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা যেমনটি বলেছেন, নির্বাচনে জনগণের ব্যাপক উপস্থিতির গুরুত্ব উপলব্ধি করেই শত্রুরা সবসময় ইরানের জনগণকে নির্বাচনের ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করার চেষ্টার করে আসছে। কেননা তারা জানে নির্বাচনে জনগণের উপস্থিতির অর্থই হচ্ছে রাজনৈতিক সংহতি এবং ধর্মীয় ও জাতীয় ঐক্যকে আরো জোরদার করবে। তাই নিঃসন্দেহে ইরানের এবারের নির্বাচন নতুন যুগের সূচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। #
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।