হামাসকে নির্মূল করতে গিয়ে নিজেই ধ্বংসের পথে ইসরাইল!
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i132566-হামাসকে_নির্মূল_করতে_গিয়ে_নিজেই_ধ্বংসের_পথে_ইসরাইল!
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইলের আগ্রাসনের ৭৯ তম দিন পেরিয়ে গেছে। স্থল যুদ্ধে দখলদার সেনাবাহিনী ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়া সত্ত্বেও তারা গাজার বিভিন্ন অংশে এখনো ব্যাপক হামলা ও বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। ফিলিস্তিনের গণমাধ্যম জানিয়েছে, উত্তর গাজা উপত্যকার জাবালিয়া আল-বালাদে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধকামী সংগঠন ও দখলদার বাহিনীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ চলছে।
(last modified 2025-10-27T13:35:51+00:00 )
ডিসেম্বর ২৬, ২০২৩ ১৩:১৮ Asia/Dhaka

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইলের আগ্রাসনের ৭৯ তম দিন পেরিয়ে গেছে। স্থল যুদ্ধে দখলদার সেনাবাহিনী ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়া সত্ত্বেও তারা গাজার বিভিন্ন অংশে এখনো ব্যাপক হামলা ও বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। ফিলিস্তিনের গণমাধ্যম জানিয়েছে, উত্তর গাজা উপত্যকার জাবালিয়া আল-বালাদে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধকামী সংগঠন ও দখলদার বাহিনীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ চলছে।

এক মাসেরও বেশি সময় ধরে দখলদার বাহিনী বিমান হামলা ও কামানের গোলা নিক্ষেপের মাধ্যমে জাবালিয়ায় অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে কিন্তু তারা সেখানে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলোর প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়েছে।

সমস্ত গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে ইসরাইলি বাহিনীর হামলা যতই তীব্র হচ্ছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধকামী বাহিনীগুলো গাজা উপত্যকার উত্তরে এবং এমনকি জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরে ইহুদিবাদী ইসরাইলি বাহিনীকে টার্গেট করে তাদের ওপর প্রচণ্ড আঘাত হানছে। 

যুদ্ধ ক্ষেত্রে কিছু প্রমাণ বলে দিচ্ছে যে  ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠী ফিলিস্তিনিদের শক্ত প্রতিরোধের মুখে ধীরে ধীরে পিছু হটছে এবং যুদ্ধ বন্ধে তারা হামাসের দেয়া শর্ত ও দাবির কাছাকাছি আসার চেষ্টা করছে।ইহুদিবাদী ইসরাইলের চ্যানেল 12 একজন উচ্চপদস্থ ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলেছে যে আমরা বন্দীদের মুক্ত করে আনতে নতুন  বন্দি বিনিময়ের দুর্ভাগ্যজনক দিনের জন্য অপেক্ষা করছি।

দখলকৃত অঞ্চলের হাজার হাজার অধিবাসী শনিবার তেল আবিবে একটি বিশাল বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভকারীরা গাজা উপত্যকায় বন্দীদের মুক্তির জন্য হামাসের সাথে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য নেতানিয়াহু সরকারের মন্ত্রিসভার কাছে জোর দাবি জানিয়েছে। এছাড়াও, তেল আবিবের হাবিমা স্কোয়ারে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভে বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পদত্যাগ দাবি করেছে।

গাজায় সামরিক অভিযান শুরুর পর অধিকৃত ফিলিস্তিনে জনমত পরিচালনায় ইসরাইলের সরকার কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। হামাসের হাতে বন্দী  ইহুদিদের মুক্ত করার প্রচেষ্টার উপর জোর দেওয়ার সময় ইসরাইলের শাসকগোষ্ঠী গাজায় সামরিক অভিযানের পরিধি ব্যাপকভাবে বাড়াাতে চায় যাতে ৭ অক্টোবরে হামাসের অবিসম্মরণী ও দুঃসাহসিক অভিযানে বিপর্যস্ত হয়ে পড়া ইসরাইল তার গোয়েন্দা-নিরাপত্তা ব্যর্থতার ন্যায্যতা আদায় করতে পারে।

বিশিষ্ট ইংরেজ লেখক, বিশ্লেষক এবং মিডল ইস্ট আই ওয়েবসাইটের সম্পাদক ডেভিড হার্স্ট, যিনি আল-আকসা তুফান অভিযানের শুরু থেকে গাজা যুদ্ধে ইসরাইলি বাহিনীর ব্যর্থতার বিভিন্ন সূচকের উপর অসংখ্য নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন, তিনি তার নতুন নিবন্ধ লিখেছেন যে গাজা যুদ্ধ ইসরাইলকে একটি নৈতিক এবং সামরিক বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাবে এবং এ যুদ্ধ সারা বিশ্বে ইসরাইলের বিরুদ্ধে  ব্যাপাক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

তিনি জোর দিয়ে আরো বলেন যে ৭ অক্টোবরের পরের রাজনৈতিক বাস্তবতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইলের অন্য সমর্থকদের চিন্তা ভাবনাকে তছনছ করে দিয়েছে। নেতানিয়াহু এবং তার যুদ্ধ মন্ত্রিসভা হামাসকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল বরং গাজা যুদ্ধ ইসরাইলকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

অন্যদিকে, ইয়েমেনের প্রতিশোধমূলক হামলার বিরুদ্ধে ইসরাইলকে সমর্থন করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে জোট গঠন করতে চেয়েছিল তা একেবারে শুরুতেই ভেঙে পড়েছে। ইসরাইলের ওপর ইয়েমেনের হামলা মোকাবেলায় জোটে বিভিন্ন দেশকে যুক্ত করার জন্য আমেরিকার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ওয়াশিংটনের তিনটি ইউরোপীয় মিত্র এই জোটের বিরুদ্ধে নেতিবাচক অবস্থান নিয়েছে।

যাইহোক ইয়েমেনের আনসারুল্লা বাহিনী আগ্রাসী ইসরাইলের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিয়ে এবং লোহিত সাগরে ইসরাইলি বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে তেল আবিব সরকার এবং এর প্রধান সমর্থকদের কেবল অসহায় করে তোলেনি বরং অর্থনৈতিকভাবে ইহুদিবাদী শাসক ও পশ্চিমাদের উপর চাপ সৃষ্টি করার পাশাপাশি গাজার জনগণের বিরুদ্ধে তাদের অপরাধযজ্ঞ বন্ধ করতে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করছে ।#

পার্সটুডে/এমবিএ/২৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।