৭ অক্টোবরের অভিযানে হামাসের অনন্য অর্জন; ইসরাইলের ৪৬,০০০ কোম্পানি বন্ধ
পার্স টুডে- হিব্রু ভাষার সংবাদপত্র 'মা'রিভ' ইসরাইলকে একটি 'পতনশীল সরকার' হিসেবে উল্লেখ করেছে। পত্রিকাটি জানিয়েছে, গাজায় আগ্রাসন চালাতে গিয়ে ইসরাইলের অর্থনীতিতে ধ্বংসাত্মক প্রভাব পড়েছে এবং অধিকৃত অঞ্চলে ৪৬,০০০ ইসরাইলি কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেছে।
পার্স টুডে জানিয়েছে, ইসরাইলের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কোম্পানি কোফেস বিডিআই'র (CofaceBdi) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সিইও) ইওয়েল আমির গত বুধবার মা'রিভকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, গাজা যুদ্ধ শুরু থেকে অধিকৃত অঞ্চলে ৭৭ শতাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ হওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৩৫,০০০ ছোট আকারের; যেগুলো সর্বোচ্চ পাঁচজন কর্মচারী দিয়ে পরিচালিত হতো।
কোফেস বিডিআই'র সিইও মনে করছেন- চলতি বছরের শেষ নাগাদ ৬০,০০০ ইসরাইলি কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাবে।
ইহুদিবাদী সূত্রে জানা গেছে, গাজা যুদ্ধের ফলে দখলীকৃত অঞ্চলের বিভিন্ন বাণিজ্যিক খাত বিশেষ করে শিল্প, পর্যটন, কৃষি ও সেবা খাতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দখলীকৃত অঞ্চলগুলোতে এখন বিদেশি পর্যটন নেই বললেই চলে।
ফাঁস হওয়া তথ্য অনুসারে, ইসরাইলি কোম্পানিগুলো খুব কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে- শ্রমের ঘাটতি, বিক্রয় হ্রাস, সুদের উচ্চ হার, পরিবহন ও কারিগরী সমস্যা, কাঁচামালের ঘাটতি এবং যুদ্ধকবলিত অঞ্চলে কৃষি জমিতে প্রবেশাধিকারের ঝুঁকি এবং সেইসাথে ক্রমবর্ধমান অধিগ্রহণ খরচ।
এদিকে, ইহুদিবাদী সূত্রে জানা গেছে, দখলকৃত ভূখণ্ডে লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর হামলা স্থানীয় ব্যবসাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। কারণ হামলার কারণে হাজার হাজার বসতি স্থাপনকারীকে তাদের বসতি সরিয়ে নিতে বাধ্য করা হয়েছে।
হিজবুল্লাহর সাথে উত্তেজনা বৃদ্ধির ফলে এই উদ্বেগও সৃষ্টি হয়েছে যে, লেবাননের সাথে যেকোনো পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ ইহুদিবাদী ইসরাইলের অর্থনীতিকে পতনের অতল গহ্বরে নিয়ে যাবে।
মা'রিভের প্রতিবেদন অনুসারে, লেবাননের হিজবুল্লাহ সম্প্রতি হুদহুদ ড্রোনের সাহায্যে ধারণ করা ভিডিও মাধ্যমে দেখিয়েছে যে, তারা ইসরাইলের জ্বালানি অবকাঠামো যেমন তেল শোধনাগার এবং গ্যাস ট্যাঙ্কগুলোতে আক্রমণ করতে পারে।
এদিকে, ইয়েমেনি সামরিক বাহিনীর নৌ-অভিযানও ইসরাইলের অর্থনীতি ধ্বংসে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ইহুদিবাদী সূত্রের মতে, ইসরাইলের প্রধান বন্দর ইলাতের রাজস্ব উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে পশ্চিমা দেশগুলোর পূর্ণ সমর্থন নিয়ে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠী ফিলিস্তিনের অসহায় ও নিপীড়িত জনগণের বিরুদ্ধে গাজা উপত্যকা এবং পশ্চিম তীরে ব্যাপক গণহত্যা শুরু করেছে। অন্যদিকে, গাজায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠনগুলো এবং লেবানন, ইরাক, ইয়েমেন ও সিরিয়ার অন্যান্য প্রতিরোধগোষ্ঠী ঘোষণা করেছে যে, তারা দখলদার সরকারের কাছ থেকে এসব অপরাধের মূল্য আদায় করবে।
সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের নতুন আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে ৩৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন এবং ৮৮ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৩