তেহরান-ইসলামাবাদ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির ব্যাপারে শাহবাজের গুরুত্বারোপ
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তেহরান ও ইসলামাবাদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়েদ ইব্রাহিম রায়িসিও পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শক্তিশালী ও গভীর করতে পুরোপুরি প্রস্তুত বলে ঘোষণা করেছেন। প্রতিবেশীদের সাথে সকল ক্ষেত্রে সম্পর্ক সম্প্রসারণ ইরানের পররাষ্ট্রনীতিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচিত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দু'দেশের সম্পর্ক বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইরানের সাথে পাকিস্তানের ৯০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। ইরানের সঙ্গে পাকিস্তানের গ্যাস পাইপ লাইন স্থাপনের একটি যৌথ প্রকল্পের কাজ নিয়ে ২০১৪ সাল থেকেই প্রচেষ্টা চলছে। কিন্তু ইরান ওই প্রকল্পের ব্যাপারে নিজস্ব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে এগিয়ে এলেও পাকিস্তান মার্কিন অবরোধের অজুহাত দেখিয়ে অঙ্গিকার বাস্তবায়নে সময়ক্ষেপণ করে আসছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি বলেছে ইরান-পাকিস্তান গ্যাস পাইপ লাইন বিষয়ক যৌথ প্রকল্প নিয়ে আমেরিকার অবস্থান প্রসঙ্গে ইসলামাবাদের সঙ্গে আলোচনা করবে। কিন্তু পাকিস্তান এবার সাফ জানিয়ে দিয়েছে নিজেদের মাটিতে গ্যাস পাইপ লাইন স্থাপনের ব্যাপারে ইসলামাবাদ সরকার তৃতীয় কোনো দেশের সঙ্গে আলোচনা কিংবা পরামর্শ করার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করে না। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মমতাজ জাহরা বালুচ আরও বলেছেন: পাকিস্তানে তেল-গ্যাসের কমতি রয়েছে। 'শান্তির পাইপ লাইন' হিসেবে পরিচিত এই প্রকল্প তাই পাকিস্তানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। তিনি আরও বলেছেন আমেরিকাসহ বিদেশি শক্তিগুলোর চাপের কারণে গুরুত্বপূর্ণ ওই প্রকল্পের কাজটি বাস্তবায়িত হয় নি। এ কারণে পাকিস্তানকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। কাতার থেকে তরল গ্যাস আমদানি করাসহ বিভিন্ন উপায়ে ওই গ্যাসের অভাব পূরণ করতে হয়েছে। জাহরা বালুচ তাই তাঁর সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন: পাকিস্তান সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইরানের সঙ্গে গ্যাস পাইপ লাইন স্থাপনের যৌথ প্রকল্পের কাজ অচিরেই শুরু করবে। ৮০ কিলোমিটার পাইপ লাইনের কাজ নিজেদের ভূখণ্ডেই করা হবে বলে তিনি জানান।।
মমতাজ জাহরা জোর দিয়ে বলেন: পাকিস্তান ইরানের সাথে যৌথ গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ইসলামাবাদ তাই তৃতীয় কোনো দেশের সাথে এ বাপারে পরামর্শ করার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করে না। তৃতীয় কোনো দেশ বলতে তিনি আমেরিকাকেই বুঝিয়েছেন।
চলতি মাসের শুরুর দিকে পাকিস্তানের তেল মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি দিয়েছে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে ইরানের সাথে যৌথ গ্যাস প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা হলে ইসলামাবাদের জ্বালানি নিরাপত্তা শক্তিশালী হবে। পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রিসভার জ্বালানি বিষয়ক কমিটি এ বিষয়ে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। গোয়াদর বন্দর থেকে যৌথ সীমান্ত পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণের ব্যাপারে ইরানের সঙ্গে সম্মত হয়েছে পাকিস্তান।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানয়ানিও সম্প্রতি তার সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন: ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যে গ্যাস পাইপ লাইন নির্মাণ বিষয়ে দু'দেশের জ্বালানি বিষয়ক কর্মকর্তারা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। পাকিস্তান এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ৮০ কিলোমিটার পাইপ লাইন নির্মাণের কাজ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এই প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা পাকিস্তান সরকারের জ্বালানি কমিটি অনুমোদন করেছে বলেও জানান তিনি।#
পার্সটুডে/এনএম/৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।