ইসরাইলি আগ্রাসনবিরোধী লড়াইয়ে ওআইসি'র ভূমিকা ও মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের পরীক্ষা
https://parstoday.ir/bn/news/world-i151964-ইসরাইলি_আগ্রাসনবিরোধী_লড়াইয়ে_ওআইসি'র_ভূমিকা_ও_মুসলিম_বিশ্বের_ঐক্যের_পরীক্ষা
পার্সটুডে: ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিতে দোহা গেছেন। এই সম্মেলন মুসলিম দেশগুলোর ঐক্য ও সহযোগিতার মাধ্যমে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের যুদ্ধকামী ও সংকট সৃষ্টিকারী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ তৈরি করতে পারে।
(last modified 2025-09-14T14:00:55+00:00 )
সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫ ১৪:২৫ Asia/Dhaka
  • সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি
    সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি

পার্সটুডে: ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিতে দোহা গেছেন। এই সম্মেলন মুসলিম দেশগুলোর ঐক্য ও সহযোগিতার মাধ্যমে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের যুদ্ধকামী ও সংকট সৃষ্টিকারী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ তৈরি করতে পারে।

আজ (রোববার) আরাকচি দোহায় পৌঁছান। কাতারের অনুরোধে এই জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে, যেখানে ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসনের বিষয়ে আলোচনা হবে। আগামীকাল (সোমবার) ইসলামি-আরব শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান অংশগ্রহণ করবেন।

এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে এমন সময়ে যখন আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন ও দেশগুলোর আকাশসীমা ভঙ্গ করা ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর একপ্রকাশ নিয়মে পরিণত হয়েছে। ফলে বিশ্ব সম্প্রদায়েরও এ বিষয়ে দৃঢ় প্রতিক্রিয়া দেখানো প্রয়োজন।

ওআইসি’র দায়িত্ব ও সম্ভাবনা

বিশ্ব ইসলামের অন্যতম বৃহৎ আন্তর্জাতিক সংস্থা হিসেবে ওআইসি-এর কাছে ইহুদিবাদী ইসরায়েলকে মোকাবিলার জন্য উল্লেখযোগ্য ক্ষমতা ও সুযোগ রয়েছে। তবে এসব পদক্ষেপ কতটা কার্যকর হবে তা নির্ভর করছে সদস্য দেশগুলোর রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও পারস্পরিক সমন্বয়ের ওপর। এই সংস্থার নৈতিক, রাজনৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব রয়েছে সদস্য দেশগুলোর নিরাপত্তা রক্ষায়।

ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরেই মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে আসছে। কাতারে সাম্প্রতিক হামলাও সেই আগ্রাসী নীতিরই ধারাবাহিকতা। এ ধরনের কর্মকাণ্ড রুখতে ওআইসি কূটনৈতিক, আইনগত ও গণমাধ্যমভিত্তিক বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করতে পারে।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বাধ্যতামূলক প্রস্তাব গ্রহণে চাপ সৃষ্টি করা, কিংবা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) যুদ্ধাপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ দাখিল করাও ওআইসি’র হাতে থাকা কার্যকর পদক্ষেপ হতে পারে।

অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক উদ্যোগ

ওআইসি সদস্যরা চাইলে ইসরায়েলি পণ্য ও কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারে এবং দখলদারের সহযোগিতা করা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।

ফিলিস্তিনি ও গাজাবাসীর পক্ষে বিশ্বব্যাপী সমর্থন আদায়ের জন্য ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার মিডিয়া ও সাংস্কৃতিক পদক্ষেপও কার্যকর হবে, যার অংশ হিসেবে ইসলামী দেশগুলোর মিডিয়ায় ইসরায়েলি দখলদার রাষ্ট্রের অপরাধের কভারেজ বৃদ্ধি করা। ইসরায়েলের দখলদারিত্বমূলক নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি উন্মোচনের জন্য তাদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান জনমত গঠনে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।

জনমতের চাপ ও বাস্তব কর্মপরিকল্পনার প্রয়োজন

কাতারে ইসরায়েলি হামলায় আরব জনমত প্রবল ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। তারা এটিকে আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে। এ পরিস্থিতি ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্বজনীন ঐক্য গড়ে তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে। তাই ওআইসি’র বৈঠক থেকে একটি কার্যকর, বাস্তবভিত্তিক ও লক্ষ্যনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি। এই পরিকল্পনা যেন রাজনৈতিক ও আইনগত দিক থেকে শক্তিশালী হয়, একইসাথে জনমত ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতেও প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়।

ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) হাতে রয়েছে ইহুদিবাদী নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা। তবে এর জন্য সদস্য দেশগুলোর রাজনৈতিক ঐক্য, কৌশলগত ঐকমত্য এবং যৌথ ইচ্ছাশক্তি অপরিহার্য।

কেবল প্রতীকী বিবৃতি নয়, বরং ধারাবাহিক, সমন্বিত ও বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমেই ওআইসি ফিলিস্তিনের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামের পক্ষে এবং দখলদার ইসরায়েলি নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।#

পার্সটুডে/এমএআর/১৪