ফ্লোটিলাকর্মীদের প্রতি আচরণই প্রমাণ করে, ইসরায়েল শাস্তির ঊর্ধ্বে: মার্কিন সাংবাদিক
-
\\\\\\\'অ্যাবি মার্টিন
পার্স টুডে: একজন মার্কিন সাংবাদিক বলেছেন, 'গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা'-এর (Global Sumud Flotilla) শান্তিকর্মীদের প্রতি ইসরায়েলের আচরণ এবং গাজায় গণহত্যা নিয়ে বিভিন্ন সরকারের নীরবতা—তেল আবিবের শাস্তির ঊর্ধ্বে অবস্থানকে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করে।
পার্স টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন সাংবাদিক ও তথ্যচিত্র নির্মাতা 'অ্যাবি মার্টিন' যিনি “Empire Files” নামের প্রামাণ্য ধারাবাহিকের উপস্থাপক—তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদোলুর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “গাজার জন্য মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে যাত্রা করা ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’-এর কর্মীদের সঙ্গে ইসরায়েলের যে আচরণ, তা প্রমাণ করে যে তেল আবিব সম্পূর্ণভাবে শাস্তির ঊর্ধ্বে অবস্থান করছে।”
তিনি আরও বলেন, "পরিচিত ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে অপমানজনক আচরণ, তাঁদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে উপহাস করা এবং মৌলিক মানবাধিকার অস্বীকার করা—এসবই এমন এক সমাজের প্রতিচ্ছবি, যা ক্ষমতা ও গণহত্যার নেশায় অসুস্থ হয়ে পড়েছে।”
অ্যাবি মার্টিন গাজায় ইসরায়েলি হামলার নৃশংসতার প্রসঙ্গে বলেন, "সেখানে যে বর্বরতা চলছে, তা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যার বর্ণনা দিতে ভাষা যথেষ্ট নয়। গত দুই বছরে গাজায় যা ঘটেছে, তা ইতিহাসের বইয়ে পড়া বা ছবিতে দেখা যে কোনো ঘটনার সীমা ছাড়িয়ে গেছে।”
এই মার্কিন গণমাধ্যমকর্মী বলেন, "যেসব আন্তর্জাতিক সংস্থা দাবি করে যে, তারা গণহত্যার মতো বিপর্যয় ঠেকাতে চায়—বাস্তবে তারা সাম্রাজ্যবাদের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে এবং নিজেদের মানবতা হারিয়ে ফেলেছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, "২০০ জনেরও বেশি সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী, তাদের অনেকেই পরিবার-পরিজনসহ, সুপরিকল্পনা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। নিউ ইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয় বোর্ডকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেনের সঙ্গে হেগ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত, কারণ তারাও এই গণহত্যার সহযোগী।”
অ্যাবি মার্টিন আরও বলেন: "পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো ব্যাংক, তেল কোম্পানি ও অস্ত্র শিল্পের টাকায় পরিচালিত হয়। যে সাংবাদিকরা ইহুদিবাদের পক্ষে কথা বলেন না কিংবা ফিলিস্তিন নিয়ে নিজেদের মতামত গোপন করেন না—তাদের চাকরি হারাতে হয়।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “যদি কেউ মনে করে এই পরিস্থিতি শুধু গাজা পর্যন্ত সীমিত থাকবে, তবে তারা ভুল করছে। গাজা এখন এমন এক পরীক্ষাগার, যার মাধ্যমে বিশ্বের বাকি অংশের উপরও নতুন ‘নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা’ চাপিয়ে দেওয়া হবে।”
শেষে অ্যাবি মার্টিন দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের উদাহরণ টেনে বলেন, "যেভাবে বিশ্ব একসময় দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী শাসনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, ঠিক সেভাবেই এখন ইসরায়েলি দমননীতির বিরুদ্ধেও চাপ তৈরি করতে হবে।”
এই মার্কিন গণমাধ্যমকর্মী দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী শাসনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেন, বিশ্বের উচিত ইসরাইলি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধেও একই ধরনের চাপ সৃষ্টি করা: অস্ত্র, বাণিজ্য, সংস্কৃতি ও একাডেমিক বয়কট, কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ করা। এটি অবশ্যই করা উচিত।#
পার্সটুডে/এমএআর/৭