অল্প পুঁজিতেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে লঙ্কানদের দুর্দান্ত জয়
নুয়ান প্রদীপ ও লাসিথ মালিঙ্গাদের বিধ্বংসী বোলিংয়ের সুবাদে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৩৪ রানে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে এটি লঙ্কানদের প্রথম জয়। অন্যদিকে দুই ম্যাচে হার দেখল আফগান ক্রিকেট দল।
মঙ্গলবার কার্ডিফে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই সাবলীল ব্যাট করতে থাকেন লঙ্কান ওপেনার কুশল পেরেরা ও অধিনায়ক দিমুথ কারুনারাত্নে। প্রথম পাওয়ার প্লেতে রান চলে আসে বিনা উইকেটে ৭৯।
লঙ্কানদের ধারাবাহিকতা থামিয়েছেন মোহাম্মদ নবী। নিজের চতুর্থ ওভারের প্রথম বলেই লঙ্কান অধিনায়ককে ফেরান তিনি। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে লাহিরু থিরিমান্নেকে নিয়ে দলের হাল ধরেন কুশল পেরেরা। গড়েন ৫২ রানের দারুণ এক জুটি। এ জুটিও ভাঙেন নবী। থিরিমান্নেকে বোল্ড করেন তিনি। কিন্তু এরপর যা করলেন নবী, তা দারুণ চমৎকারই বটে। শ্রীলঙ্কার আরেক সেরা ব্যাটসম্যান কুশল মেন্ডিসকে তো আউট করেনই, ফিরিয়ে দেন সাবেক অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজকে। দুজনকেই স্লিপে রহমত শাহর তালুবন্দি করান নবী। লঙ্কানরা ২ রানে হারায় ৩ উইকেট। ১ উইকেটে ১৪৪ রান তোলা দলটি পরিণত হয় ৪ উইকেটে ১৪৬ রানে।
নবীর দেখানো পথে যেন আগ্রাসী হয়ে যান দলের বাকি সবাই। পরের ওভারে আঘাত হানেন পেসার হামিদ হাসান। ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে খালি হাতে ফেরান তিনি।
তবে লঙ্কানরা সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খায় এর দুই ওভার পরে। ওইসময় রানআউট হন থিসারা পেরেরা। ছন্দে থাকা এ ব্যাটসম্যানকে হারানোয় লেজ বেড়িয়ে আসে দলটির। তবে এক প্রান্তে বুক চিতিয়ে লড়াই করে যান কুশল পেরেরা। লঙ্কানদের বড় ইনিংসের স্বপ্ন ধরে রেখে দারুণ ব্যাটিং করে সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন তিনি। কিন্তু রশিদ খানের বলে হঠাৎ মনোযোগ হারিয়ে ফেলেন। তার কুইকারে রিভার্স সুইপ করতে গেলে মোহাম্মদ শাহজাদের তালুবন্দি হন কুশল পেরেরা। ফলে বড় বিপদে পড়ে যায় দলটি। এরপর নামে বৃষ্টি। প্রায় তিন ঘণ্টা বৃষ্টিতে ম্যাচ বন্ধ থাকার পর ফের শুরু হয় খেলা। তবে কমে আসে ম্যাচের পরিধি। ৪১ ওভার করে খেলা নির্ধারণ করা হয়। ৮ উইকেট হারিয়ে ১৮২ রান করা দলটি পড়ে সুরাঙ্গা লাকমলের ব্যাটে দুইশ রানের কোটা পার করে।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৮ রানের ইনিংস খেলেন কুশল পেরেরা। ৮১ বলে ৮টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। এছাড়া অধিনায়ক কারুনারাত্নে করেন ৩০ রান। থিরিমান্নে করেন ২৫ রান। আফগানিস্তানের পক্ষে ৯ ওভারে ৩০ রান খরচ করে ৪টি উইকেট নিয়েছেন নবী। ২টি করে উইকেট নেন রশিদ খান ও দৌলত জাদরান।

শ্রীলঙ্কা ২০১ রান করলেও ডার্ক লুইস ম্যাথডের অদ্ভুত ফাঁদে পড়ে আফগানিস্তানের লক্ষ্যটা দাঁড়ায় ১৮৭ রানের। এই রান তাড়া করে সহজেই জয় পাওয়ার কথা টেস্ট ক্রিকেটে নবীন সদস্য দেশটির। না, তা পারেনি আফগানিস্তান। আফগানিস্তানের ইনিংস থেমে যায় ১৫২ রানে।
আফগান ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ ব্যক্তিগত ৭ রানে ফেরেন। ৩০ রান করেন আরেক ওপেনার হযরতউল্লাহ জাজাই। রহমত শাহ ২, হাশমতউল্লাহ শহীদি ৪, মোহাম্মদ নবী ১১ রান করেন। দলীয় ৫৭ রানে টপঅর্ডারের পাঁচ উইকেট হারায় আফগানরা।
এরপর জুটি গড়েন দলপতি গুলবাদিন নাইব এবং নাজিবুল্লাহ জাদরান। দলীয় ১২১ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ২৩ রান করে বিদায় নেন আফগান দলপতি নাইব। ২ রান করে সাজঘরে ফেরেন রশিদ খান। দৌলত জাদরান ফেরেন ৬ রান করে। এক প্রান্ত ধরে খেলতে থাকা নাজিবুল্লাহ জাদরান রানআউট হওয়ার আগে করেন ৫৬ বলে ৪৩ রান। শেষ দিকে হামিদ হাসান, মুজীব উর রহমানরা দলকে জেতাতে পারেননি।
নুয়ান প্রদীপ ৯ ওভারে ৩১ রান খরচায় তুলে নেন চারটি উইকেট। লাসিথ মালিঙ্গা ৬.৪ ওভারে ৩৯ রানের বিনিময়ে তুলে নেন তিনটি উইকেট। একটি করে উইকেট পান ইসুরু উদানা এবং থিসারা পেরেরা। ম্যাচ সেরা হন নুয়ান প্রদীপ।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।