তালেবানের অগ্রাভিযান ঠেকাতে অস্ত্র হাতে নিলেন আফগান নারীরা
আফগানিস্তানের বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের জের ধরে তালেবান বেশ কিছু জেলা দখল করে নেয়ার পর তালেবানের বিরুদ্ধে গণ-প্রতিরোধ বাহিনী গঠন করা হচ্ছে। এসব বাহিনীতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আফগান নারী অংশগ্রহণ করছেন।
আফগানিস্তানের উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে এসব গণ-প্রতিরোধ বাহিনী গঠন করা হচ্ছে। তবে তালেবান গতকাল (বুধবার) এক বিবৃতি প্রকাশ করে এই মর্মে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে যে, যারা এ ধরনের বাহিনী গঠন করার উদ্যোগ নিয়েছেন ‘তাদেরকে ক্ষমা করা হবে না।’ তালেবানের বিবৃতির বক্তব্যের ধরন থেকে বোঝা যায় তারা ‘ক্ষমতা হাতে পাওয়ার পর’ এসব উদ্যোক্তাকে শাস্তি দেয়ার কথা বুঝিয়েছেন।
অবশ্য তালেবান এখন পর্যন্ত বেশ কিছু জেলা দখল করতে পারলেও এককভাবে কোনো প্রদেশ বা বড় কোনো শহর দখল করতে পারেনি।
আফগানিস্তানের জুযজান প্রদেশের বহু নারী নিরাপত্তা বাহিনীর সমর্থনে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছেন বলে দেশটির গণমাধ্যমগুলো খবর দিয়েছে। জুযজানের প্রাদেশিক সরকার এক বিবৃতি প্রকাশ করে এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছে, এসব নারী অস্ত্র হাতে নিয়ে এই বার্তা দিতে চান যে, তারা তাদের শহরগুলোতে কোনো অবস্থায় তালেবানের অনুপ্রবেশ মেনে নিতে রাজি নন।
রাজধানী কাবুলের উত্তরে অবস্থিত কুহ্দামান শহরের শত শত মানুষ এক স্থানে সমবেত হয়ে পুলিশের কাছ থেকে অস্ত্র গ্রহণ করে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি নিজেদের সমর্থন ঘোষণা করেছেন। ১৯৯০-এর দশকে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় থাকার সময় তালেবান কুহ্দামানে ব্যাপক গণহত্যা চালানোর পাশাপাশি সেখানকার বহু আঙ্গুরের বাগান জ্বালিয়ে দিয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে এসব সশস্ত্র সম্মেলন আয়োজনে আমানুল্লাহ গুজারসহ বেশ কয়েকজন সাবেক মুজাহিদ কমান্ডার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। ‘হেজবে ওয়াহদাত’ দলের নেতা ও প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির উপদেষ্টা মোহাম্মাদ মোহাক্কেক গণ-বাহিনী সংগঠিত করার কাজে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় বল্খ প্রদেশের রাজধানী মাজার শরিফ পৌঁছেছেন। আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় নানগারহার প্রদেশ থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, সেখানকার সাবেক মুজাহিদ নেতা হজরত আলীর নেতৃত্বে তালেবানের বিরুদ্ধে ‘গণ-বিদ্রোহ’ ঘোষণা করা হয়েছে।
তালেবানের সঙ্গে ২০২০ সালে করা এক চুক্তির ভিত্তিতে যখন আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের কাজ চলছে তখন দেশটিতে এ আশঙ্কা জোরদার হচ্ছে যে, তালেবান আবার আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করতে পারে। বিভিন্ন প্রদেশে তালেবানের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির জনগণ এ আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।#
পার্সটুডে/এমএমআই/২৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।