পাঞ্জশির সফরে তালেবান প্রতিনিধিরা: আহমেদ মাসুদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা
(last modified Thu, 26 Aug 2021 10:05:31 GMT )
আগস্ট ২৬, ২০২১ ১৬:০৫ Asia/Dhaka

আফগানিস্তানের পাঞ্জশির প্রদেশে দেশটির জাতীয় বীর হিসেবে খ্যাত মরহুম আহমেদ শাহ মাসুদের পুত্র আহমেদ মাসুদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য তালেবানদের একটি প্রতিনিধি দল ওই এলাকা সফরে গেছে। এ সাক্ষাতে তারা আফগানিস্তানের চলমান ঘটনাবলী নিয়ে কথাবার্তা বলেছেন।

তবে এখন পর্যন্ত আলোচনার ফলাফল সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। জানা গেছে তালেবানের সশস্ত্র যোদ্ধারা পাঞ্জশির প্রদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি প্রবেশ দ্বারে অবস্থান নিয়েছে। কিন্তু তালেবান বিরোধী হিসেবে পরিচিত আহমেদ মাসুদ জানিয়ে দিয়েছেন তারা তালেবানের কাছে কোনোভাবেই আত্মসমর্পণ করবেন না।

উল্লেখ করা যায় তালেবানরা পুরো আফগানিস্তানের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারলেও পাঞ্জশির হচ্ছে একমাত্র দুর্গম পাহাড়ি প্রদেশ যার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে তালেবানরা এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। তালেবান প্রতিনিধি দল এমন সময় আহমেদ মাসুদের সঙ্গে আলোচনার জন্য পাঞ্জশির প্রদেশ সফরে গেছে যখন এর আগে তালেবানরা ঘোষণা করেছিল একমাত্র আলোচনার মাধ্যমেই তারা ওই এলাকা নিয়ে বিরোধের অবসান ঘটাবে।

রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর তালেবানরা সারা দেশে যুদ্ধ অবসানের ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু আহমেদ মাসুদ তালেবান বিরোধী প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গিকার করায় তালেবানরা সংলাপের মাধ্যমে বিরাজমান যে কোনো বিরোধ মীমাংসার আহ্বান জানায়। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তালেবানরা প্রায় পুরো দেশের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর ধারনা করা হচ্ছে তারা যুদ্ধ কিংবা বল প্রয়োগের মাধ্যমে পাঞ্জশির উপত্যকা পরিচালনা বা নিয়ন্ত্রণ নিতে চায় না। এ কারণে তালেবানরা আহমেদ মাসুদের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে ওই এলাকায় যাতে একটি সমঝোতায় পৌঁছা সম্ভব হয়।

তালেবানরা কোনো সহিংসতা ছাড়াই অস্ত্র সমর্পণ করা এবং পাঞ্জশিরের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের ওপর ছেড়ে দেয়ার জন্য আহমেদ মাসুদের অনুগত বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু নিশ্চিতভাবে আহমেদ মাসুদেরও কিছু দাবি দাওয়া রয়েছে। ক্ষমতা নিয়েই তালেবানরা কেবলমাত্র অর্থমন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নতুন মন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছে। তারা জানিয়েছে দেশ পরিচালনায় তারা সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে। অবশ্য আফগানিস্তানে যাতে বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠী ও ধর্ম বিশ্বাসীদের নিয়ে জাতীয় সরকার গঠিত হয় আন্তর্জাতিক সমাজেরও এখন সেটাই দাবি। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও বিশ্বের বহু দেশ আফগানিস্তানে এমন এক নতুন সরকার গঠনের জন্য তালেবানদের  প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যাতে ওই সরকারে দেশটির সব গোষ্ঠীর মানুষের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকে। অবশ্য তালেবানরা তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কিভাবে সবাইকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যমত্যের  সরকার গঠন করবে তা নিয়ে এখনো সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানায়নি। যেহেতু তারা যে কোনো ধরনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিরোধিতা করেছে তাই এটা স্পষ্ট নয় যে তারা জনগণের ভোট বা মতামতের ওপর ভিত্তি করে সরকার গঠন করবে নাকি আফগান বিভিন্ন গোষ্ঠীর অংশগ্রহণ ভিত্তিক সরকার পরিচালনার ব্যবস্থা করবে।

তবে যেহেতু তালেবানরা চীন ও তুরস্কের নাম উল্লেখ করে প্রতিবেশী সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে সে কারণে তারা দেশের ভেতরে ও বাইরে সঠিক পরিকল্পনা নয়ে এগিয়ে যাবে বলে সবার প্রত্যাশা।#

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৬

 

ট্যাগ