অক্টোবর ২০, ২০২২ ১৬:২১ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতাবন্ধুরা! আজ ২০ অক্টোবর বৃহষ্পতিবারের কথাবার্তার আসরে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • মতামত-ইভিএম নয়, সব বুথে দরকার সিসি ক্যামেরা-প্রথম আলো
  • দেশে কিশোরদের ৬৩%, কিশোরীদের ৬৯% শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয়-কালের কণ্ঠ
  • সবাই বিদ্যুৎ পাবে, তবে ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে-মানবজমিন
  • সাইবার ক্রাইম মামলা ১৩২৭ গ্রেপ্তার ১৭৫৯- মানবজমিন
  • রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি জান্তা সরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী-ইত্তেফাক
  • প্রণোদনার জোয়ারেও শেয়ারবাজারে অনাস্থা- যুগান্তর
  • 'ধর্মঘট ডেকেছে পরিবহন মালিক শ্রমিক, আমাদের কী করার আছে'-বাংলাদেশ প্রতিদিন

ভারতের শিরোনাম:

  • সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা মানিকের, আপাতত ইডির হেফাজতেই তৃণমূল বিধায়ক-সংবাদ প্রতিদিন
  • পরিকল্পনা ছিল অন্য! শেষ মুহূর্তে খাড়গের বাড়িতে গেলেন সোনিয়া-আজকাল
  • ‘আমি নই, টাটাদের তাড়িয়েছে সিপিএম’, শিলিগুড়ির বিজয়া সম্মিলনীতে বিস্ফোরক মমতা–আনন্দবাজার পত্রিকা

শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি- 

জনাব সিরাজুল ইসলাম কথাবার্তার বিশ্লেষণে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি। 

কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:

১. বিএনপির সমাবেশে সরকার বাধা দেয়নি, সহযোগিতা করছে’। এ কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আপনার পর্যবেক্ষণ কি?

২. দামেস্কে প্রেসিডেন্ট আসাদের সঙ্গে হামাস প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ। এই খবরের বিশেষ গুরুত্বটা কোথায়?

জনাব সিরাজুল ইসলাম আপনাকে আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর

মতামত ইভিএম নয়, সব বুথে দরকার সিসি ক্যামেরা-ড. এম সাখাওয়াত হোসেন-প্রথম আলো

ইভিএম

নির্বাচন কমিশনে পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করার সময় শুধু গতানুগতিক নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নয়, বরং অনেক আলোচিত ও সমালোচিত পরিবর্তন এবং নির্বাচনী ব্যবস্থাপনায় নতুন কিছু করার প্রক্রিয়ায় আমরা জড়িত ছিলাম।

এর মধ্যে অন্যতম ছিল ছবিসহ ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং একই সঙ্গে সম্ভাব্য ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে এসে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি করা ও শনাক্তকরণ কার্ড প্রদান। এ কার্ডই আজ জাতীয় পরিচয়পত্র হিসেবে পরিচিত। ডিজিটাল তথ্য সংগ্রহশালা গঠন এবং উপজেলা পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সার্ভার স্টেশন তৈরি, আইন এবং নির্বাচন প্রচারণায় ব্যাপক সংস্কার করতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার বিষয়ে প্রচুর অভিজ্ঞতা হয়েছে।

গাইবান্ধা ৫ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে তিনি বলেছেন, গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাকে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং তাঁর তত্ত্বাবধানে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়। যেখানে ১৪৫টি কেন্দ্রে প্রতিটি বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। পরে সিসিটিভিতে দেখা যায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে।পরে নির্বাচন স্থগিত করে দেয়া হয়।পরিস্থিতির বিশ্লেষণ এবং সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়া ফুটেজ বিবেচনায় নিলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহাতীতভাবেই বলা যায় যে নির্বাচনে দুর্নীতি হয়েছে। এ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তিনি আরও অনেক কথা লিখেছেন এ সম্পর্কে তবে শেষ কথা বলেছেন এভাবে, শেষ করার আগে একটি বিষয়ে বলতে চাই, বুথ দখল হলে ইভিএম কেন, কোনো যন্ত্রই কাজ করবে না। কাজেই ইভিএমের পেছনে অর্থ ও শ্রম খরচ না করে সিসিটিভি ক্যামেরার মতো প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা উচিত।

এদিকে প্রথম আলোর অপর মতামত কলামে বদিউল আলম মজুমদার লিখেছেন-গাইবান্ধার উপনির্বাচন: এক ঢিলে দুই পাখি মারার চেষ্টা নয়তো?

‘হরতাল-কারফিউ’ রুখতে পারবে না জনস্রোত: ফখরুল-যুগান্তর

বিএনপি মহাসচিব  মির্জা ফখরুল ইসলাম

‘হরতাল-কারফিউ’ দিয়েও খুলনার বিভাগীয় সমাবেশের জনস্রোতকে রুখতে পারবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেছেন, ‘খুলনার সমাবেশ ঠেকাতে পরিবহণ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। এতে এতটুকু প্রভাব পড়বে না। ময়মনসিংহে কীভাবে মানুষ এসেছে, সবাই দেখেছে। ট্রলারে, নৌকায় করে বিভিন্নভাবে জনগণ ওই সমাবেশে এসেছে। রিকশাওয়ালারা মানুষজন নিয়ে গিয়েছে, ভাড়া পর্যন্ত নেয়নি। এটাই হচ্ছে জনগণের অংশগ্রহণ।’

‘ক্ষমতাসীনরা যত গাড়ি বন্ধ করুক, যা কিছু করুক, একইভাবে আগামী শনিবার খুলনার সমাবেশেও জনগণ গণতন্ত্রের দাবিতে উপস্থিত হবেন। কোনো প্রতিবন্ধকতা, কোনো হরতাল-কারফিউ কেউ মানবে না।’

'ধর্মঘট ডেকেছে পরিবহন মালিক শ্রমিক, আমাদের কী করার আছে'-বাংলাদেশ প্রতিদিনের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ধর্মঘট ডেকেছে পরিবহন মালিক শ্রমিক, আওয়ামী লীগের কী করার আছে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেতু ভবনে ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।

খুলনার সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে বাস ধর্মঘটের যে কথা বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সে প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, সেখানেও সরকার বা আওয়ামী লীগ কোনো হস্তক্ষেপ করেনি, করবেও না। পরিবহন মালিক শ্রমিকরা যদি তাদের পরিবহন ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার অভাব বোধ করে তাহলে সরকার বা আওয়ামী লীগের কী করার আছে।

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতারা মন গড়া বক্তব্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে তাদের সমাবেশের প্রতিপক্ষ বানানোর অপচেষ্টা করছে।সরকার বিএনপির সমাবেশে বাধাতো দেয়নি বরং প্রশাসনিক সহযোগিতা দিচ্ছে। তাদের সমাবেশে লোকসমাগম হলে বলে সরকার ব্যর্থ আবার লোকসমাগম না হলে বলে সরকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। সরকার কিংবা আওয়ামী লীগ কখনো বিএনপির সমাবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেনি, করবেও না।

চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশে আওয়ামী লীগ বা সরকারের কোনো বাধা কি ছিল, প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের। প্রশ্ন রেখে তিনি আরও বলেন, পরিবহন ধর্মঘটও তো হয়নি, তাহলে চট্টগ্রামে তাদের জনসভাস্থলই পূর্ণ হয়নি কেন?

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

মমতা বন্দোপাধ্যায়

‘আমি নই, টাটাদের তাড়িয়েছে সিপিএম’, শিলিগুড়ির বিজয়া সম্মিলনীতে বিস্ফোরক মমতা-আনন্দবাজার ও সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, সিঙ্গুর থেকে টাটাদের ন্যানো প্রকল্প সরে যাওয়ার দায় তাঁর নয়। তার জন্য দায়ী তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার। বুধবার শিলিগুড়িতে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান থেকে এমনই মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।মমতার দাবি, তৎকালীন শাসক সিপিএম কৃষকদের থেকে জোর করে জমি ছিনিয়ে নিয়েছিল! ক্ষমতায় আসার পর তিনি সেই জমি ফিরিয়ে দিয়েছেন। তাঁর ওই মন্তব্যের জেরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। প্রসঙ্গত, সিঙ্গুরে ন্যানো প্রকল্পের জন্য ৯৯৭ একর জমি অধিগ্রহণ করেছিলেন তৎকালীন বাম সরকার। তার মধ্যে প্রায় ৪০০ একর জমির দাতা ছিলেন ‘অনিচ্ছুক’।শিলিগুড়িতে ওই মন্তব্যের জেরে মমতার বিরুদ্ধে ‘মিথ্যাচার’-এর অভিযোগ তুলেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। টাটা কর্ণধার রতন টাটার পশ্চিমবঙ্গ ছাড়ার আগে মন্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেছেন, ‘‘মমতা মাথায় বন্দুক ধরে ট্রিগার টিপে দিলেন বলেই সিঙ্গুর ছেড়ে চলে যেতে হল, সে কথা তো রতন টাটাই বলেছিলেন। এদিকে’’মুখ্যমন্ত্রীকে একযোগে মিথ্যেবাদী বলে তোপ দাগল বিরোধীরা।

সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা মানিকের, আপাতত ইডির হেফাজতেই তৃণমূল বিধায়ক-সংবাদ প্রতিদিনের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) বড় ধাক্কা তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। ইডির গ্রেপ্তারিকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই মামলা খারিজ হয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টে। আদালত জানিয়ে দিল, তাঁরা সিবিআইয়ের গ্রেপ্তারির বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ দিয়েছিল। ইডি সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি তদন্ত করছে। এই গ্রেপ্তারির বিরুদ্ধে কোনও রক্ষাকবচ ছিল না। তাই গ্রেপ্তারির অবৈধ নয়।

সংবাদ প্রতিদিনের অপর এক খবরে লেখা হয়েছে,  পরমাণু হামলার আশঙ্কা! ভারতীয়দের দ্রুত ইউক্রেন ছাড়ার নির্দেশ দূতাবাসের

ইউক্রেনে হামলার ঝাঁজ বাড়িয়েছে রাশিয়া। রাজধানী কিয়েভে আছড়ে পড়ছে একর পর এক ‘কামিকাজে ড্রোন’। পরিস্থিতি আরও ঘোরাল করে ইঙ্গিতে পরমাণু হামলার হুমকি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এহেন পরিস্থিতিতে নাগরিকদের জন্য নির্দেশিকা জারি করেছে কিয়েভের ভারতীয় দূতাবাস। সেখানে, ভারতীয় নাগরিকদের দ্রুত ইউক্রেনে ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার কিয়েভে ভারতীয় দূতাবাসের জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ইউক্রেনে ক্রমে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। সংঘাত আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ভারতীয় নাগরিকদের ইউক্রেন সফরে না আসার আরজি জানানো হচ্ছে।

পরিকল্পনা ছিল অন্য! শেষ মুহূর্তে খাড়গের বাড়িতে গেলেন সোনিয়া-আজকাল

মল্লিকার্জুন খাড়গে

হাতের রাশ এবার খাড়গের হাতে। বহু দিনের জল্পনা ছিল, সোনিয়া, রাহুলের পর কংগ্রেসের সভাপতি কে হবেন? তার আগেই দলের ভেতরে মনোমালিন্য হয়েছে বিস্তর। রাহুলের পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি গিয়েছে, এবং একটা সময়ের পর রাহুল আর সভাপতি পদে থাকতে রাজি হননি। দীর্ঘ জল্পনার পর কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচন হয়েছে ১৭ অক্টোবর। আজ, ১৯ অক্টোবর ফল প্রকাশিত হওয়ার পর দেখা গেল, গান্ধী পরিবারের বাইরে এবার হাতের রাশ গেল খাড়গের হাতে। শশী থারুরকে হারিয়ে নতুন সভাপতি হলেন মল্লিকার্জুন।

সভাপতি পদের নির্বাচন জিতে যাওয়ার পরেই মল্লিকার্জুন খাড়গে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখার করার জন্য সময় চেয়েছিলেন, সেই সময় সাক্ষাৎ সম্ভব না হলেও পরে সোনিয়া এবং প্রিয়ঙ্কা গান্ধী খাড়গের বাড়িতে যান। বাড়িতে গিয়ে ফুল দিয়ে নতুন সভাপতিকে অভ্যর্থনা জানান প্রাক্তন সভাপতি। সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধী।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/২০