চিঠিপত্রের আসর প্রিয়জন
'সময়োপযোগী অনুষ্ঠান প্রচারে রেডিও তেহরান অনন্য নজির স্থাপন করেছে'
শ্রোতাবন্ধুরা, আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক প্রীতি আর শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি চিঠিপত্রের জবাবের সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান 'প্রিয়জন'। আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আজকের আসরে আপনাদের সঙ্গে রয়েছি আমি গাজী আব্দুর রশীদ, আমি আকতার জাহান এবং আমি আশরাফুর রহমান।
আশরাফুর রহমান: প্রত্যেক আসরের মতো আজও অনুষ্ঠানের শুরুতেই আমি একটি বাণী শোনাতে চাই। ইমাম রেযা (আ.) বলেছেন: 'বেশি কথা বলা, সম্পদ বিনষ্ট করা ও বেশি কামনা করাকে মহান আল্লাহ ঘৃণা করেন।'
আকতার জাহান: খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বাণী শুনলাম। আমরা সবাই তা মেনে চলার চেষ্টা করব- এ কামনায় নজর দিচ্ছি চিঠিপত্রের দিকে।
আসরের প্রথম মেইলটি এসেছে বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাজার থেকে। আর পাঠিয়েছেন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী এস. এম. হৃদয় রহমান।
তিনি লিখেছেন, "পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে রেডিও তেহরানের নিয়মিত পরিবেশনা ‘খোদা প্রেমের অনন্য উৎসব’ অনুষ্ঠানের পর্বগুলো বেশ শিক্ষণীয় ছিল। রেডিও তেহরান যেভাবে পরিমার্জিতভাবে রোজা রাখার প্রধান উদ্দেশ্যের শিক্ষা প্রচার করেছে তা খুব কম বেতার মাধ্যমেই শোনা যায়। সময়োপযোগী অনুষ্ঠান প্রচারে রেডিও তেহরান অনন্য নজির স্থাপন করেছে। এজন্য কর্তৃপক্ষকে অসংখ্য ধন্যবাদ।"
গাজী আব্দুর রশীদ: ভাই হৃদয় রহমান, পবিত্র রমজান উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমাদেরও ভালো লাগল। আশা করি আমাদের অন্য অনুষ্ঠানগুলো সম্পর্কেও লিখবেন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমন্ডি থেকে দেবাশীষ গোপ পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি।
তিনি লিখেছেন, "চীনের মধ্যস্থতায় ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের বিষয়ে গত ১৭ই মার্চ আলাপন অনুষ্ঠানে সাংবাদিক গোলাম মুর্তজার সাক্ষাৎকারটি অনেক যুক্তিপূর্ণ ও ভালো লেগেছে। এই চুক্তির বাস্তবায়নে কিছু সমস্যা থাকলেও ইরান তা নিশ্চয়ই কাটিয়ে উঠতে পারবে বলেই আশা রাখি। তবে, সৌদি আরবের রাজা সালমানের সঙ্গে ইসরাইলের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে শেষপর্যন্ত কী হয়- সেটাও দেখার বিষয়।"
আশরাফুর রহমান: ভাই দেবাশীষ গোপ, ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে কুটনীতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন ও ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠতা সম্পর্কে আপনার মতামতটি তুলে ধরা হলো। আশা করি আবারো লিখবেন।
এবারের মেইলটি পাঠিয়েছেন বাংলাদেশের রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে এ, টি, এম, আতাউর রহমান রঞ্জু।
তিনি লিখেছেন, ফার্সি নববর্ষ বা নওরোজ উপলক্ষে রেডিও তেহরান বিশেষ অনুষ্ঠানমালা ছিল খুবই উপভোগ্য। ইরানের পাশাপাশি আরও কয়েকটি দেশে নওরোজ পালিত হয়। নওরোজ জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সকলের মধ্যে শান্তি ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করে এবং বিশ্বের মানুষের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আকতার জাহান: এরপর রঞ্জু ভাই লিখেছেন, "ইরানে নওরোজ উৎসবের পাশাপাশি এবার পবিত্র মাহে রমজান শুরু হয় প্রায় একইসময়ে। এ উপলক্ষে রেডিও তেহরান থেকে প্রচারিত হয়েছে 'খোদাপ্রেমের অনন্য উৎসব' নামে একটি নিয়মিত পরিবেশনা। এটি খুবই সময়োপযোগী একটি অনুষ্ঠান যা শ্রোতাদের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছে।"
গাজী আব্দুর রশীদ: ভাই এ, টি, এম, আতাউর রহমান রঞ্জু, ফার্সি নববর্ষ ও মাহে রমজান উপলক্ষে প্রচারিত অনুষ্ঠানমালা আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমাদেরও ভালো লাগল। মতামতের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
গাজী আব্দুর রশীদ: শ্রোতাবন্ধুরা, আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে, ‘আইআরআইবি ফ্যান ক্লাব বাংলাদেশ'-এর দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। ওই প্রতিযোগিতায় 'এ' ক্যাটাগরিতে বিজয়ী বাংলাদেশের ঝিনাইদহের মহেশপুরের সিনিয়র শ্রোতা নজরুল ইসলামের লেখার কিছু অংশ তুলে ধরব আজ। তিনি লিখেছেন,
আশরাফুর রহমান: "আশির দশকের শেষের দিকে রেডিও তেহরানের সন্ধান পেলেও বাংলাদেশে করোনার ভয়াল থাবার সময় নতুন করে রেডিও তেহরান-এর সাথে যোগাযোগ শুরু হয়। এসময় আমি অনেক পুরনো বন্ধুকে নতুন করে ফিরে পেয়েছি। পেয়েছি নতুন নতুন অনেক জুনিয়র বন্ধু। প্রতিদিন অনুষ্ঠান না শুনলে কেন ভালো লাগে না- এর কারণ খোঁজার চেষ্টা করলাম। বুঝলাম প্রিয়জন, রংধনু, স্বাস্থ্যকথা, সুন্দর জীবন, জ্ঞান-বিজ্ঞানে ইরানিদের অবদান, সর্বোপরি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ও তার বিশ্লেষণ আমার অস্তিত্বকে রেডিও তেহরান-এর দিকে নানাভাবে ধাবিত করছে। তাইতো প্রতিদিনের অনুষ্ঠান শেয়ার করি গ্রুপে কিংবা ব্যক্তিগত বন্ধুদের কাছে।"
আকতার জাহান: তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে রেডিও তেহরানের সঙ্গে থাকার জন্য নজরুল ইসলাম ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি মাঝেমধ্যে চিঠি লিখে আমাদেরকে পরামর্শ দেবেন এবং ডিএক্সিং জীবনের নানা অভিজ্ঞতা শেয়ার করবেন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট ঢাকা কলোনী থেকে সিনিয়র শ্রোতা বিধান চন্দ্র সান্যাল পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি। তিনি লিখেছেন, "২৬ মার্চ রেডিও তেহরানের সান্ধ্যকালীন অধিবেশন শুনেছি। বরাবরের মতো ওইদিনও পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয় এবং তারপরে তার বাংলা অনুবাদ করা হয়। এরপর শুরু হয় বিশ্বসংবাদ যার মাঝে ঢাকা এবং কোলকাতার সাংবাদিকদের বার্তা সংবাদকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে। প্রান্তিক আয়োজনে প্রচারিত সুখের নীড় অনুষ্ঠানের ৫০তম পর্বটি বেশ তথ্যসমৃদ্ধ এবং উপদেশধর্মী ছিল যা শ্রোতাদের পারিবারিক জীবনে দিক-নির্দেশনা দিতে সাহায্য করবে।"
গাজী আব্দুর রশীদ: ২৬ মার্চের অনুষ্ঠান শুনে মতামত জানিয়ে চিঠি লিখার জন্যশ্রোতাবন্ধু বিধান চন্দ্র সান্যালকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহাদত হোসেন পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি।
তিনি লিখেছেন, "রেডিও তেহরানের বাংলা অনুষ্ঠান আমার মত হাজার হাজার শ্রোতার অতি প্রিয়। বাংলাদেশ ও ভারতের অসংখ্য শ্রোতা নিয়মিত আপনাদের অনুষ্ঠান শুনে থাকে। কিন্তু পবিত্র রমজান মাসে তারাবীহ নামাজের কারণে বাংলাদেশের অধিকাংশ শ্রোতা রেডিও তেহরানের অনুষ্ঠান শুনতে পারে না। এরকম একটি পরিস্থিতিতে আমার একটি প্রস্তাব হল: রমজান মাসে রেডিও তেহরানের বাংলা অনুষ্ঠান একটু এগিয়ে নিয়ে আসা হোক, প্রচার করা হোক সন্ধ্যা সোয়া সাতটা থেকে। আশা করি আগামী রমজানে রেডিও তেহরান আমাদেরকে তারাবীহ নামাজ পড়ার ও অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচার শোনার সুযোগ করে দেবে।"
আশরাফুর রহমান: ভাই শাহাদত হোসেন, আপনার প্রস্তাবটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়ে দ্বিমত করার সুযোগ নেই। কিন্তু মৌলিক কিছু সমস্যার কারণে প্রস্তাবটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। প্রথম সমস্যাটি হচ্ছে- HFCC বা High Frequency Co-ordination Conference থেকে একমাসের জন্য ফ্রিকোয়েন্সি বরাদ্দ পাওয়ার সুযোগ নেই। তারা ফ্রিকোয়েন্সি দেয় প্রতি ছয়মাস পর পর। আরেকটি সমস্যা আছে। সেটি সম্প্রচার স্টুডিওর। একমাসের জন্য স্টুডিও পাওয়ায়ও কঠিন। সে কারণে রমজান মাসে সান্ধ্য অধিবেশন সম্প্রচারের পর ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে অনুষ্ঠান শুনে নেওয়ার অনুরোধ রইল। প্রস্তাবের জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আকতার জাহান: আচ্ছা আশরাফ ভাই, আজকের আসরে কোনো শ্রোতাবন্ধুর সাক্ষাৎকার নেই?
আশরাফুর রহমান: কেন থাকবে না! টেলিফোনের অপরপ্রান্তে অপেক্ষা করছেন এক বাংলাদেশি শ্রোতাবন্ধু।
গাজী আব্দুর রশীদ: তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে সরাসরি তার সঙ্গে কথা বলা যাক।
আকতার জাহান: বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার সাপাহার থানার তিলনা খোচাপাড়া থেকে আলী আহম্মেদ আরিফ পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি।
তিনি লিখেছেন, "গত ২৯ মার্চ রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগ থেকে প্রচারিত 'গল্প ও প্রবাদের গল্প' অনুষ্ঠানটি শুনলাম। গল্পের ফাঁকে ফাঁকে বাজানো মিউজিক কী যে ভালো লাগছিল তা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। গল্প ও প্রবাদের গল্প অনুষ্ঠানটি যিনি তৈরি করেন তাকে ধন্যবাদ জানাই।"
আশরাফুর রহমান: ভাই আলী আহম্মেদ আরিফ, আপনাকে ধন্যবাদ-অনুষ্ঠানটি মনোযোগ দিয়ে শুনে মতামত জানানোর জন্য।
আজকের আসরের শেষ মেইলটি এসেছে বাংলাদেশের রংপুর সদরের পূর্ব গোয়ালু গ্রাম থেকে। আর পাঠিয়েছেন গোয়ালু ডিএক্স রেডিও লিসনার্স ক্লাবের সভাপতি ডঃ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি লিখেছেন, "রেডিও তেহরানের বাংলা অনুষ্ঠান আমার সবচেয়ে প্রিয় অনুষ্ঠান। নিয়মিত পত্র লিখা কিংবা প্রতিক্রিয়া জানাতে না পারলেও অনুষ্ঠান শোনা কিন্তু আমার চিরাচরিত অভ্যাস এবং নেশা। বলা যেতে পারে রেডিও তেহরানের বাংলা অনুষ্ঠান একজন সাধারণ মানুষকে আদর্শ মানুষ ও মুমিন হিসেবে বাস্তবায়িত করার একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠান।"
গাজী আব্দুর রশীদ: বাহঃ রেডিও তেহরান সম্পর্কে চমৎকার মূল্যায়ন করেছেন এ শ্রোতাবন্ধু। তো আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে তিনি কিছু লিখেননি?
আকতার জাহান: হ্যাঁ, লিখেছেন। আমি বরং তার মেইল থেকেই পড়ে শোনাচ্ছি। মোস্তাফিজ ভাই লিখেছেন, "রেডিও তেহরানের সাপ্তাহিক স্বাস্থ্যকথা অনুষ্ঠানে গত ৩০ মার্চ তারিখে মৃগী রোগ সম্পর্কিত ডাক্তার আবু বকর সিদ্দিক-এর চতুর্থ পর্বের সাক্ষাৎকারটি শুনছিলাম। আগের তিনটি পর্বের মতো এটিও খুব ভালো লেগেছে আমার। সুন্দর এ অনুষ্ঠানটির অবতারণা ও প্রচারণার জন্য রেডিও তেহরান কর্তৃপক্ষকে জানাই আমার প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অসংখ্য ধন্যবাদ।"
আশরাফুর রহমান: আপনাকেও আন্তরিক ধন্যবাদ, মতামত জানিয়ে ইমেইল পাঠানোর জন্য। আশা করি নিয়মিত আপনার লেখা পাব।
শ্রোতাবন্ধুরা, অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে কয়েকটি মেইলের প্রাপ্তিস্বীকার করছি।
- বাংলাদেশের কুড়িগ্রামের উলিপুর থানার জোনাইডাঙ্গা থেকে ফারুক আহমেদ
- রংপুর থেকে সেলিম রাজ ও মোঃ আলিফ
- ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার কাজীপাড়া থেকে মুন্সি দরুদ
- এবং মুর্শিদাবাদের বারুইপাড়া থেকে এসএম নাজিমউদ্দিন
গাজী আব্দুর রশীদ: চিঠি লিখার জন্য আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। তো শ্রোতাবন্ধুরা, অনুষ্ঠান বিদায় নেওয়ার আগে আজও আপনাদের জন্য রয়েছে একটি গান। গানের গীতিকার ও কণ্ঠশিল্পী এইচ আল বান্না।
আকতার জাহান: তো বন্ধুরা, আপনারা গানটি শুনতে থাকুন আর আমরা বিদায় নিই চিঠিপত্রের আজকের আসর থেকে।
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১০