জানুয়ারি ২৮, ২০২১ ১৪:২৯ Asia/Dhaka

প্রিয় পাঠক/শ্রোতা! ২৮ জানুয়ারি বৃহষ্পতিবারের কথাবার্তার আসরে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতেই ঢাকা ও কোলকাতা থেকে প্রকাশিত প্রধান প্রধান বাংলা দৈনিকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিরোনাম তুলে ধরছি।

প্রথমে বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • চট্টগ্রামে খুন-সন্ত্রাস ও কেন্দ্রে হামলা করেছে বিএনপি –ইসিতে আ.লীগ-ইত্তেফাক
  • স্বেচ্ছায় ভাসানচর যাচ্ছেন আরও ৫ হাজার রোহিঙ্গা-দৈনিক যুগান্তর
  • সিলেটে ২৮ প্রবাসীর ভোগান্তি দায় কার?--মানবজমিন
  • দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের দুই ধাপ অবনতি -দৈনিক কালের কণ্ঠ
  • আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মূলমন্ত্র সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, বৈরিতা নয়' -বাংলাদেশ প্রতিদিন
  • ট্রাম্প সমর্থকদের ‘যন্ত্রণায়’ যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সতর্কতা-দৈনিক সমকাল

ভারতের শিরোনাম:

  • উৎসাহহীন আন্দোলনস্থল চুপ, গ্রাস করেছে হতাশা, আশঙ্কা -আনন্দবাজার পত্রিকা
  • ফাঁসি হোক লালকেল্লার ঘটনায় জড়িত কৃষক নেতাদের, অমিত শাহকে চিঠি বিজেপি বিধায়কের -সংবাদ প্রতিদিন
  • ট্রাক্টর মিছিল মামলায় নাম দীপ সিধুর, চুক্তিভঙ্গের জন্য কৃষক নেতাকে নোটিস -দৈনিক আজকাল

শ্রোতাবন্ধুরা! এবারে চলুন বাছাইকৃত কয়েকটি খবরের বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।

এম রেজাউল করিম চৌধুরী

চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গতকাল। নির্বাচনি সহিংসতায় হতাহত হয়েছেন অনেকে।ভাইয়ের হাতে ভাই খুন হয়েছে।অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ ছিল দুই পক্ষের। তবে নির্বাচনি ফলাফলে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী জয়ী হয়েছেন। মানবজমিনের খবরে বলা হয়েছে, বিপুল ভোটের ব্যবধানে মেয়র নির্বাচিত হয়ে চট্টগ্রামের উন্নয়নের কথা বললেন এম রেজাউল করিম চৌধুরী। প্রতিশ্রুতি দিলেন নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের। ইশতেহারে চট্টগ্রামকে পর্যটন রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলা, হোল্ডিং ট্যাক্স এবং চলমান উন্নয়ন প্রকল্পে সমন্বয়কের ভূমিকা পালনের অঙ্গীকার করেন তিনি।

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

দৈনিক ইত্তেফাকে চসিক নির্বাচনের ফলোআপ খবরে লেখা হয়েছে, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, চসিক নির্বাচন মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হয়েছে।তথ্যমন্ত্রী বিএনপিকে উদ্দেশ করে বলেছেন,দলটির অভ্যাস হচ্ছে নাঁচতে না জানলে উঠোন বাঁকা বলা। অপর এক খবরে লেখা হয়েছে,চট্টগ্রামে খুন সন্ত্রাস ও কেন্দ্রে হামলা বিএনপি করেছে বলে ইসিতে দাবি করেছে আওয়ামী লীগ। যায় যায় দিন লিখেছে, আর ইসি সচিব বলেছেন চসিক নির্বাচনে সহিংসতা খুব কমই হয়েছে। এদিকে মানবজমিনের একটি খবরের শিরোনাম- চসিক নির্বাচন এক কেন্দ্রে এক ভোট বিএনপি প্রার্থীর। সে সম্পর্কে বিএনপি প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, এটা ভোট ডাকাতির প্রকৃষ্ট উদাহারণ।

দুদক কাণ্ডে ভুল বিচারের রায় বাতিল করলো হাইকোর্ট-ইত্তেফাক/যুগান্তর/প্রথম আলোসহ প্রায় সব দৈনিকের খবরে লেখা হয়েছে,

হাইকোর্ট

দুদক কাণ্ডে ভুল বিচারের মামলার রায় বাতিল করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিশেষ আদালতের ঐ রায় বাতিলের পাশাপাশি নিরপরাধ কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানাও প্রত্যাহারের আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এসএসসির সনদ জালিয়াতির মামলাটি নতুন করে তদন্তের জন্য দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) এ রায় দেন।

হাইকোর্ট বলেছে, ভুল তদন্তে দায়ী তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদককে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। আর নিরপরাধ ব্যক্তি যদি দুদকে ক্ষতিপূরণের আবেদন দেন তাহলে সেটা যেন কমিশন বিবেচনা করেন সেটাই উচ্চ আদালতের প্রত্যাশা।

প্রসঙ্গত নোয়াখালীর পশ্চিম রাজারামপুরের বাসিন্দা কামরুল ইসলাম এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে সনদ জালিয়াতি করে ভর্তি হন মাইজদী কলেজে। এ ঘটনায় তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো মামলা দায়ের করেন পূর্ব রাজারামপুরের কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। পূর্ব-পশ্চিমের ঠিকানার ভুলে সেই দুদক কাণ্ডের শুরু। যার কারণে প্রকৃত আসামি থেকে যান ধরাছোঁয়ার বাইরে। পরে পশ্চিম রাজারামপুরের কামরুলের পরিবর্তে চার্জশিট দেওয়া হয় পূর্ব রাজারামপুরের কামরুলের বিরুদ্ধে। তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে জারি করা হয় গ্রেফতারি পরোয়ানা। পরে পুলিশ পরোয়ানা তামিল আদেশ প্রতিপালন করতে গেলে তারা প্রকৃত আসামির পরিবর্তে নিরপরাধ ব্যক্তির বিষয়টি উদঘাটন করে আদালতে প্রতিবেদন দেয়।

কিন্তু বিচারের সময় সেটাও আমলে নেননি নোয়াখালীর বিশেষ আদালতের বিচারক। পরে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে পূর্ব রাজারামপুরের কামরুলকে ১৫ বছর জেল ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে। জারি করা হয় গ্রেফতারি পরোয়ানা। গ্রেফতারের হাত থেকে বাঁচতেই হাইকোর্টে রিট করেন কামরুল। ঐ রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট আজ এই রায় ঘোষণা করলো।

সিলেটে ২৮ প্রবাসীর ভোগান্তি দায় কার?-মানবজমিন

করোনায় বিপর্যস্ত বৃটেন। আক্রান্ত ও মৃত্যুতে ভয় আর আতঙ্ক চারপাশে। এ অবস্থায় জরুরি প্রয়োজনে, প্রিয়জনের সান্নিধ্য পেতে বৃটেনে অনেক প্রবাসী দেশে আসছেন। বাধ্যবাধকতার জন্য তারা সঙ্গে নিয়ে আসছেন করোনার নেগেটিভ সনদ। সনদ থাকলেও চারদিন কোয়ারেন্টিনে থেকে করোনা পরীক্ষা করানোর পর হোম কোয়ারেন্টিনের শর্তে বাড়ি ফিরছেন তারা। পরিস্থিতির কারণে এমন বাধ্যবাধকতার শর্ত মেনে নিচ্ছেন তারা। কিন্তু সর্বশেষ বৃহস্পতিবার একটি ফ্লাইটে আসা ২৮ যাত্রীর করোনা পরীক্ষার ফল ঘিরে রীতিমতো হুলস্থূল কাণ্ড বেধেছে। একটি বেসরকারি ল্যাবে ১৫৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়।

তাদের মধ্যে ২৮ জনের পজেটিভ আসে। শনাক্তদের সবাইকে সিলেটের ৩১ শয্যার আইসোলেশন সেন্টারে নেয়া হয়। এর একদিন পর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে তাদের ২৫ জনের করোনা নেগেটিভ আসে। এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। সরকারি ল্যাব থাকতে বেসরকারি ল্যাবে কেন প্রবাসীদের করোনা পরীক্ষা করা হলো। একসঙ্গে এতো মানুষের পজেটিভ আসার পর কেন তা যাচাই না করেই ঘোষণা দেয়া হলো এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এছাড়া ভুক্তভোগী প্রবাসীরা বলছেন, করোনা সনদ নিয়ে আসার পরও আবার পজেটিভ হওয়ায় তাদের পরিবার সীমাহীন দুশ্চিন্তায় পড়েছে। এছাড়া হঠাৎ করে হাসপাতালে নেয়ায় অনেকে ভেঙে পড়েছেন। অনেকে হাসপাতালের পরিবেশ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। অনেকে বলছেন, মহামারির এই সময়ে প্রবাসীদের জন্য বাড়তি সতর্কতার ব্যবস্থা না করে তাদের সঙ্গে বরং তামাশাসুলভ আচরণ করা হচ্ছে।

এদিকে প্রথম পরীক্ষা করা বেসরকারি সংস্থা সীমান্তীকের ল্যাবের ত্রুটি আছে কিনা- তাও খতিয়ে দেখছে আইইডিসিআর। এদিকে সিলেটের ৩১ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রবাসীরা। এ সম্পর্কিত অন্য একটি খবরে লেখা হয়েছে, সিলেটে তৃতীয় দফা পরীক্ষার পর বাসায় ফিরলেন বৃটেন ফেরত ২৫ যাত্রী

দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের দুই ধাপ অবনতি-কালের কণ্ঠ

দুর্নীতির ব্যাপকতা সবচেয়ে বেশি এমন দেশ থেকে গণনা করে ১৮০টি দেশের মধ্যে ২ ধাপ পিছিয়ে ১২তম অবস্থানে নেমে গেছে বাংলাদেশ। ২০১৯ সালে নিম্নক্রম অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪ তম।(টিআইবি)-র পক্ষ থেকে ঢাকায় দুর্নীতির ধারণা সূচক সংক্রান্ত এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়৷

টিআইয়ের ২০২০ সালের সূচক অনুযায়ী, এবারও বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ সোমালিয়া৷ আর সবচেয়ে কম দুর্নীতির দেশ ডেনমার্ক৷অনুষ্ঠানে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক মো. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ২০২০ সালে দুর্নীতির সূচকে বাংলাদেশের কোন উন্নতি হয়নি। বরং নীচের দিক স্কোরে ২ ধাপ অবনতি হয়েছে। এটা অবশ্যই হতাশাজনক।সিপিআই কী: জার্মানির বার্লিনভিত্তিক সংস্থা টিআই প্রতি বছর করাপশন পারসেপশন্স ইনডেক্স বা দুর্নীতির ধারণা সূচক (সিপিআই) প্রকাশ করে। এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী দুর্নীতির ব্যাপকতার তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা হয়।

স্বেচ্ছায় ভাসানচর যাচ্ছেন আরও ৫ হাজার রোহিঙ্গা-যুগান্তর

তৃতীয় দফায় স্বেচ্ছায় নোয়াখালীর ভাসানচরে যাচ্ছেন আরও পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা।

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন শিবির থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্যাম্প ছেড়েছেন রোহিঙ্গাদের একটি দল। তাদের চট্টগ্রামের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হবে।

পরে বিকেলে আরও ডজনাধিক বাস চট্টগ্রামের পথে বের হওয়ার কথা রয়েছে। শুক্রবারও এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শামসু দ্দৌজা নয়ন।

তিনি জানান, স্বেচ্ছায় যেতে আগ্রহী এমন প্রায় পাঁচ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। প্রথমে শিবির থেকে চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর জেটি ঘাটে পরে সেখান থেকে ট্রলারে করে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হবে।

দ্বীপটি বাসস্থানের উপযোগী করা, অবকাঠামো উন্নয়ন, বনায়ন এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে দায়িত্বে রয়েছেন বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে এক হাজার ৬৪২ জন এবং ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় ধাপে এক হাজার ৮০৪ জনসহ মোট তিন হাজার ৪৪৭ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট পরবর্তী মিয়ানমারে নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়ে এ দেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয় ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। এসব রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়।

ট্রাম্প সমর্থকদের ‘যন্ত্রণায়’ যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সতর্কতা-সমকাল/ইনকিলাব/

সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের সহিংসতার আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির ধারণা, গত ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল ভবনে যে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তা ট্রাম্পের অন্য সমর্থকদের আরও উৎসাহ দিতে পারে। আবার হয়তো কোনও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়াতে পারে তারা।

তবে এই মুহূর্তে সহিসংতার কোনও নির্দিষ্ট হুমকি নেই বলে জানিয়েছে তারা।হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বলছে, জো বাইডেনের ক্ষমতা গ্রহণের পর এখন একটি ‘উচ্চতর হুমকি’ রয়েছে। আদর্শগতভাবে কিছু চরমপন্থী যেকোনও সময় সহিংসতার ঘটনা ঘটাতে পারে। সরকারের পক্ষ থেকে অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

ক্যাপিটল হিলে নারকীয় তাণ্ডবের পর আত্মহত্যা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দু’জন পুলিশ কর্মকর্তা।মঙ্গলবার হাউজ অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস কমিটিতে এ বিষয়টি অবহিত করেন ভারপ্রাপ্ত মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রধান রবার্ট জে. কোনটি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সিএনএন।

থাকার বাড়ি নেই পেন্সের

মানবজমিনের একটি খবরের শিরোনাম-থাকার বাড়ি নেই পেন্সের, অলস সময় কাটছে বন্ধুর বাসায় সোফায় গড়াগড়ি দিয়ে।খবরটিতে লেখা হয়েছে,যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এখন কার্যত গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। ক্ষমতা থেকে বিদায় নেয়ার পর তাঁর মাথার উপর ছাদ নেই। নিজ রাজ্য ইন্ডিয়ানায় ফিরে গেলেও থাকছেন এখানে ওখানে। নেই স্থায়ী কোন আবাসন। ভাই বা কোন বন্ধুর বাসার সোফায় গড়াগড়ি দিয়ে অলস সময় পার করছেন ট্রাম্পের এক সময়ের এই একনিষ্ঠ সহচর। পেন্সের এমন অসহায়ত্ব নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ বেরিয়েছে।

মাইক পেন্স ভাইস প্রেসিডেন্টের বাস ভবন ছেড়ে দিয়ে গত বুধবার চলে গেছেন তাঁর হোম টাউন ইন্ডিয়ানা রাজ্যে। কিন্তু ইন্ডিয়ানা পোলিশে পেন্স দম্পতির বসবাস করার মতো কোন বাড়ি না থাকার তাঁদের এখন উঠতে হবে কোন আত্মীয়ের বাসায় অথবা গভর্নরের ছোট পরিসরের অতিথি শালায়। তার উপর পেন্সকে তাড়া করছে নিজের ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্ক।

গত ৬ই জানুয়ারি ট্রাম্পের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ক্যাপিটল হিলে হামলা সময় তাকে হত্যার জন্য বারবার খুঁজছিল। তারা তাকে ফাঁসি দিতে চায় বলে চিৎকার করছিল। তার টেবিলে এমন হুমকি দিয়ে নোটও রেখে গেছে একজন। সবকিছু মিলিয়ে মাইক পেন্স বড় রকমের বেকায়দায় পড়েছেন।

ওয়াশিংটন ছাড়ার আগে মাইক পেন্স জানিয়েছিলেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওয়াশিংটনের আবাসন ত্যাগ করার পর তিনি স্থায়ীভাবে ইন্ডিয়ানায় নিজ রাজ্যে ফিরে যাবেন।

ঘনিষ্টজনের বরাত দিয়ে সংবাদ বেরিয়েছে ইন্ডিয়ানায় বসবাসে চিন্তা থেকে হয়তো সরে আসছেন মাইক পেন্স। ২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তার। ওয়াশিংটন ডিসিতেই তিনি ঘর ভাড়া করতে পারেন। যদিও নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে তার মধ্যে উদ্বেগ কাজ করছে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একজন উপদেষ্টা বিজনেস ইনসাইডারকে বলেন, গত ১০ বছর ধরে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের নিজস্ব কোন বাড়ি নেই। ১৯৮০ ও ৯০ দশকে নিজের ইন্ডিয়ানায় নিজেদের বাড়ি থাকলেও তিনি ২০০০ সালে ইন্ডিয়ানা ছেড়ে ওয়াশিংটনে চলে আসার পর সেগুলো এখন আর নেই। এক দশক পরে ইন্ডিয়ানা ফিরে গিয়ে পেন্স ২০১৩ সালে রাজ্যের গভর্নর হিসাবে নির্বাচিত হন।

ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্পের সাথে জুটি বেঁধে নির্বাচন করার আগ পর্যন্ত গভর্নর হিসেবে ইন্ডিয়ানা গভর্নর হাউসে বসবাস করেন পেন্স। বিগত চার বছর কেটেছে ওয়াশিংটনের ইউএস নেভাল ওবজারভেটরিতে ভাইস প্রেসিডেন্টের আবাসিক ভবেন।

এখন এই দম্পতিকে হয় পেন্সের ভাইয়ের কলম্বাস ইন্ডিয়ানায় অথবা রাজ্যের গভর্নরের ব্রাউন কাউন্টির ভ্যাকেশন হাউসের আথিতিয়েতা গ্রহণ করতে হবে। বিগত চার বছর কেটেছে ওয়াশিংটনের ইউএস নেভাল ওবজারভেটরিতে ভাইস প্রেসিডেন্টের আবাসিক ভবেন।

এবার ভারতের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

উৎসাহহীন আন্দোলনস্থল চুপ, গ্রাস করেছে হতাশা, আশঙ্কা-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা

সিন্ধু সীমান্তে একা বসে এক কৃষক

২৬ জানুয়ারি ট্র্যাক্টর মিছিলের নামে যা হয়েছে, তাতে সাধারণ কৃষক থেকে নেতাদের অনেকেই হতাশা যেন আর গোপন করে রাখতে পারছেন না। সিংঘু সীমান্তে কৃষকদের আন্দোলনস্থলে যেন কেউ হতাশার চাদর টেনে ঢেকে দিয়েছে। নেই সেই উৎসাহ, সেই উদ্দীপনা।

শেষ দু’মাস ধরে প্রতি দিন সিঙ্ঘু সীমান্তে সকাল হত কৃষকদের স্লোগানে। সারা দিন চলত সভা, বক্তৃতা করতেন কৃষক নেতারা। কিন্তু সকালের চেহারাটা ছিল একেবারেই আলাদা। জমায়েতে লোক ছিল না তেমন। বক্তৃতা করতেও ওঠেননি কেউ। মনের জোর যেন হারিয়ে ফেলেছেন কৃষকরা, তাই এলাকা ঢেকে গিয়েছে নীরবতার চাদরে।

বেলার দিকে কয়েক জন কৃষক নেতা বক্তব্য রাখতে ওঠেন। সেখানে সাফাই দেওয়ার মতো করে তাঁরা দীপ সিধুর ঘাড়ে সব দোষ চাপিয়ে দেন। বলেন, ‘এটি সমাজ বিরোধীদের কাজ’। তাতেও শরীরী ভাষা পাল্টায়নি কৃষকদের।

লুধিয়ানা থেকে আসা এক কৃষক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন দিল্লিতে যা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুঃখের। কৃষকরা চাননি, পরিস্থিতি এই দিকে যাক। ওটা আমাদের উৎসব ছিল আর কেউ এসে তা ভেস্তে দিল।”

ঘটনা নিয়েও নানা লোকের নানারকম মতামত রয়েছে। কৃষক নেতা হকিরত গেরওয়াল জানিয়েছে, ‘‘আমাদের সন্তানরাই দিল্লিতে নিরাপত্তাকর্নীদের কোনও না কোনও দফতরে কাজ করে। আমরা কেন তাঁদের মারতে যাব? কিছু মানুষের বিভ্রান্তিকর সিদ্ধান্তের জন্য আজ এই ঘটনা ঘটেছে।’’

সিঙ্ঘু সীমান্তেই ২৬ জানুয়ারির ঘটনায় আহত কৃষকরা আছেন। ক্ষতে ওষুধ দিচ্ছেন কেউ। তবে ভিড় আগের থেকে কিছুটা হলেও কম। কৃষকদের যুক্তি ভিড় কমে যাওয়ার কারণ, অনেকেই এই ট্র্যাক্টর মিছিলে অংশ নেওয়ার জন্য এসেছিলেন। তাঁরা বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। ফিরে এলে আবার ভিড় হবে।

বুধবার দুটি কৃষক সংগঠন ঘোষণা করেছে, তারা অন্দোলন থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। তাতেও অবশ্য আন্দোলন প্রত্যাহারের কোনও খবরম মেলেনি। নতুন করে জোট বাঁধতে চাইছেন কৃষকরা। আ্ত্মবিশ্বাস জড় করে বলতে চাইছেন, কৃষি আইন প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত কৃষক আন্দোলন চলবে।

ট্রাক্টর মিছিল মামলায় নাম দীপ সিধুর, চুক্তিভঙ্গের জন্য কৃষক নেতাকে নোটিস-দৈনিক আজকাল

কৃষক নেতারা বারবার তাঁর দিকে আঙুল তুলেছেন। তাঁর অতীতে বিজেপি যোগ তুলে ধরেছেন। দাবি করেছেন, সাধারণতন্ত্র দিবসে লালকেল্লায় তিনিই কৃষকদের উসকে দিয়েছিলেন নিশান সাহিব তোলার জন্য। এবার দিল্লি পুলিশের আনা মামলায় নাম উঠল সেই দীপ সিধুর। খুব শিগগিরই জেরার জন্য পাঞ্জাবি অভিনেতাকে সমন পাঠাবে পুলিশ।

দীপ ছাড়া কয়েক জন কৃষকনেতার নামও লালকেল্লা হিংসা মামলায় জড়িয়েছে। কৃষক সংগঠনগুলোর দাবি, এই আন্দোলনকে ছোট করে দেখাতেই ‘‌ষড়যন্ত্র’‌ করা হয়েছে। বিরোধী দলগুলো আবার খালিস্তানি–যোগের প্রসঙ্গও তুলে ধরেছে।

কৃষক নেতাদের অভিযোগ, বহু দিন ধরে কৃষক আন্দোলনকে কুক্ষিগত করার চেষ্টা করছিলেন দীপ। বুধবার ফের ফেসবুকে একটি ভিডিও দিয়ে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন দীপ সিধু। বলেন, ‘আমায় গদ্দার দাগানো হলে সব কৃষক নেতাই গদ্দার।এদিকে সংযুক্ত কিসান মোর্চার নেতা দর্শন পালকে নোটিস পাঠিয়েছে দিল্লি পুলিশ। অভিযোগ, দিল্লি পুলিশের সঙ্গে তিনি চুক্তি ভঙ্গ করেছে। চুক্তি অনুযায়ী ২৬ জানুয়ারি যে সময়, যে জায়গায় মিছিল হওয়ার কথা ছিল, সেখানে হয়নি। এই কারণে কেন তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে না, সেকথা তিন দিনের মধ্যে জানাতে হবে দর্শন পালকে।

ফাঁসি হোক লালকেল্লার ঘটনায় জড়িত কৃষক নেতাদের, অমিত শাহকে চিঠি বিজেপি বিধায়কের-সংবাদ প্রতিদিন

সাধারণতন্ত্র দিবসে (Republic Day) বেনজির হিংসার সাক্ষী থেকেছে দেশ। লালকেল্লায় ‘অন্নদাতা’দের তাণ্ডব ও কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিলে হওয়া হিংসা নিয়ে সরব অনেকেই। প্রশ্নের মুখে কৃষক নেতাদের (Farmer leader) ভূমিকা। যে নেতারা এই হিংসার সঙ্গে জড়িত তাঁদের ফাঁসি দেওয়ার আরজি জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে (Amit Shah) চিঠি লিখলেন বিজেপি (BJP) বিধায়ক নন্দকিশোর গুর্জর। শুধু তাই নয়, তাঁর আরও দাবি দিল্লি সীমান্তে অবস্থানকারীদের মধ্যে যাঁরা হিংসার সঙ্গে জড়িত তাঁদের চিহ্নিত করে পুলিশকে ‘শ্যুট অ্যাট সাইটে’র নির্দেশ দেওয়া হোক।

লালকেল্লার ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কিংবা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তো নয়ই, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার কোনও সদস্যই এখনও মুখ খোলেননি, একমাত্র প্রকাশ জাভড়েকর ছাড়া। তবে বিজেপির বহু নেতাই এই নিয়ে মুখ খুলেছেন। তাঁদেরই অন্যতম গুর্জর। ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে বিচার করে কৃষক নেতাদের ফাঁসির আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

কৃষক আন্দোলনের শুরু থেকেই বিজেপি দাবি করে এসেছে, এই আন্দোলন কৃষি আইনের প্রতিবাদে নয়। এমনকী, কৃষকরাও এর প্রধান চালিকা শক্তি নন। ‘বহিরাগত শক্তি’ এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে। খলিস্তানি সংগঠনগুলি এই আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহে উসকানি দিচ্ছে। সেই দাবিই নতুন করে জোরাল হয়ে উঠেছে সাধারণতন্ত্র দিবসের হিংসার পরে। বিজেপির আইটি শাখার প্রধান অমিত মালব্যের দাবি, ওইদিনের ঘটনা নিঃসন্দেহে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ছাড়া কিছু নয়। 

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/২৮

  • বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

  •  

ট্যাগ