করোনা মোকাবিলায় বিধিনিষেধ জারি: সমাবেশ বন্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক- বিএনপি
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আগামীকাল ১৩ জানুয়ারি থেকে উন্মুক্ত স্থানে কোনো সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ বাস-ট্রেনে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন এবং এরকম ১১টি ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারী করা হয়েছে।
তবে দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ধারণা করছে- চলমান নির্বাচনী প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখে করোনা সংক্রমণ রোধের কথা বলে সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সভা-সমাবেশে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের এমন প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল (মঙ্গলবার) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোভিড-১৯ এবং ওমিক্রনের বিস্তার রোধের কথা বলে ১০ জানুয়ারি সরকার যে নির্দেশাবলী জারি করেছে, তাতে ঘরোয়া পরিবেশে সভা-সমাবেশের সুবিধা বহাল রেখে উন্মুক্ত স্থানে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে বিএনপি 'স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণের সরকারি অপপ্রয়াস' বলে মনে করে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটি বলছে, অকারণে ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির জনসমাবেশে সরকার ও ক্ষমতাসীন দল একক কিংবা যৌথভাবে বাধা সৃষ্টি করার পরেও জনগণ তা প্রতিহত করে সফলভাবে সমাবেশ অনুষ্ঠান করায় সরকার জনগণের এই স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধ আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য কোভিড-১৯ এবং ওমিক্রনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।
রাজধানীসহ মহানগরী এবং দূরপাল্লার যানবাহনে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের সিদ্ধান্তে ভোগান্তি বাড়বে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নগরবাসীরা।
এদিকে, সব খোলা রেখে হোটেল-রেস্তোরাঁ বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে আলাদাভাবে উল্লেখ করায় পর্যটন সেক্টরে নেতিবাচক প্রভাব শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ জানিয়েছেন, জনসাধারণকে সম্পৃক্ত না করে শুধু পুলিশ বা প্রশাসন দিয়ে বিধি-নিষেধ কার্যকর করা যাবে না।
ওদিকে, রাজধানীতে চলমান বাণিজ্যমেলা স্থগিত করেনি সরকার। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বইমেলার প্রস্তুতি চলছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বন্ধের ঘোষণাও আসেনি। ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের সিটি নির্বাচন ও টাঙ্গাইল-৭ আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠানের পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ঢাকায় ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারিত আছে ১৮-২০ জানুয়ারি। সম্মেলনের প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। ২৩ থেকে ২৮ জানুয়ারি পুলিশ সপ্তাহ অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারিত আছে।
করোনা পরিস্থিতি
বিধিনিষেধ কার্যকর হবার আগেই গতকাল ২৪ ঘণ্টায় দেশে ২৪৫৮ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। এ সময় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনা শনাক্তে হার বেড়ে ৯ শতাংশের কাছাকাছি (৮.৯৭) পৌঁছেছে। এ সময় একদিনে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় এ নিয়ে টানা ৫ দিন শনাক্তের হার ৫ শতাংশের বেশি পাওয়া যাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পর পর দুই সপ্তাহ শনাক্তের হার ৫ শতাংশের বেশি হলে করোনার আরেকটি ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধরা হয়। দেশে মঙ্গলবার পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৫ লাখ ৯৮ হাজার ৩৮৯ জনের দেহে। আর মৃত্যু হয়েছে ২৮ হাজার ১০৭ জনের।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১২
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।